প্রজাপতি উড়ে পাখা মেলে দেখে জুড়িয়ে যায় প্রাণ। (২ বার)।
ফুল প্রজাপতি আর নানা রঙ ঘ্রাণ সৃজিলে তুমি সব তোমারি তো দান
ওগো রহিম রহমান তুমি মহা মহিয়ান। (২ বার)।
দেখতে দেখতে নিরার বিয়ের এক মাস কেটে গেছে। সময়ের সাথে সাথে তাদের দুজনের মধ্যে দূরত্ব কমার পরিবর্তে আরও বেড়েছে। অর্নব হাসপাতালে আসে যায়। রাতে বারান্দায় ঘুমায়। নিরা নিচেই ঘুমায়। দুজনের জেদে বিছানাটা খালি পড়ে থাকে। দুজন দু ' জায়গায় ঘুমায় এ হচ্ছে তাদের দাম্পত্য। খুব বেশি কেউ কারো সাথে কথা বলে না। যা কথা হয় তা শুধু প্রয়োজনের।
হঠাৎ একদিন অর্নব কতগুলো বই এনে নিরাকে দিয়ে বলল, "বইগুলো রাখো। তুমি বোধহয় বই পড়তে পছন্দ করো। এগুলো তোমার ভালো লাগবে আশাকরি।"
নিরা অবাক হয়ে বলল, "আমার জন্য আপনি বই এনেছেন?"
অর্নব ভ্রুকুচকে বলল, "বই আনা কী দোষের কিছু? "
"আমি কখন বললাম দোষের। আপনি সবসময় এত বেশি কেন বুঝেন বলেন তো? কাঠখোট্টা ডাক্তার একটা।"
অর্নব গম্ভীর গলায় বলল, "কাউকে কিছু উপহার দিলে তাকে ধন্যবাদ দিতে হয় সেটুকু তো জানোই না। আবার তাকে খারাপ উপাধি দিচ্ছো? তুমি কী জানো? তুমি যে মেয়েটা চুড়ান্ত অকৃতজ্ঞ?"
নিরা আগুন চোখে তাকিয়ে বলল, "আপনিও কম যান কীসে! উপহার দিয়ে কেমন খোঁটা দিচ্ছেন।"
অর্নব অবাক হয়ে বলল, "এ মেয়ের সাথে কথা বলাটাই ভুল হয়েছে আমার। বিরক্তিকর নেয়ে একটা!" অর্নব হনহনিয়ে বেরিয়ে গেল রুম থেকে।
নিরা ব্যাক্কলের তার পথের দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর বইগুলো নাড়াচাড়া করে দেখল। তার প্রিয় লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আর সিডনি শেলডনের কয়েকটি বই। দেখেই খুশি হয়ে বইগুলো ছুঁয়ে দেখতে লাগল। ভাবল লোকটা মন্দ নয়। বইগুলোর জন্য তাকে একটা ধন্যবাদ দেয়াই যায়। কেন যে সে আসলে আমার মেজাজটা বিগড়ে যায় কে জানে। যতই ভাবি ভালো ব্যবহার করব তা হয় না। বরং উল্টো ঝগড়া হয়ে যায়। আমি মেয়েটা কী আসলেই ঝগড়াটে!
★★★
সেদিনের পর মায়ানের সাথে আর দিয়ার কথা হয়নি। হঠাৎ এভাবে কল কেটে দেয়ার কারণ সে বুঝল না। তাই দিয়াকে কল দিল। রিসিভ করতেই মায়ান বলল, "কীরে তুই আমাকে কিছুই জানালি না কেন?"
দিয়া বলল, "নিরার সাথে অর্নবের বিয়ে হয়ে গেছে। এ খবর আমি তোকে কীভাবে দেই বল তো?
মায়ানের যেন বাকশক্তি হারিয়ে গেছে। কিছু সময় নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, " কী বলছিস তুই এসব? তোর সাথে অর্নবের বিয়ে হওয়ার কথা সেখানে নিরা আসল কোথায় থেকে? "
নিরা সবকিছু তাকে খুলে বলল। মায়ান একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। ছয়মাস পর তো তাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে। তখন সে তার স্বপ্নের মানষীকে আপনা করে পাবে।
দিয়া তাকে বলল, "তুই তাড়াতাড়ি দেশে চলে আয় মায়ান। তোকে এখন আমার খুব দরকার। "
মায়ান কি ভেবে যেন বলল, "আমি কালকের ফ্লাইটে দেশে আসছি।"