D.O.P, GFX & Edit : Abir Hosen Tarek
Directed by | Gazi Anas Rawshan
Management -
Salman Sadik Saif
Abir Hosen Tarek
==================== 0000 =================
#সামিরার_ডায়রি
পর্ব ০২
#রেজওয়ানা_ফেরদৌস
সারাদিনের কাজ সেরে বসলাম ডায়রিটা নিয়ে পড়তে । দুটো মানুষের সংসারে রাঁধাবাড়া তেমন নেই । তবে বাসাটা বিশালাকায় হওয়ায় ঝাড়াপোছা আর পরিষ্কার করে রাখাটা কষ্টসাধ্য । ভূতের বাড়ি বলে নাম ছড়িয়েছে আশেপাশে তাই কাজের সাহায্যকারী পাইনি । সিয়াম যতটা পারে সাহায্য করে , প্রায়ই বাইরে থেকে এটা ওটা খাবার কিনে নিয়ে আসে লাঞ্চ আর ডিনারে ।
তবে আমার একাকিত্ব খুব ভালো লাগে কারণ দুধে আলতা গায়ের রং আর বাদামী কটা চোখের প্রায় নিখাদ সুন্দরী হয়েও কেবল নারী মনের হিংসার রোষানলেই পড়তে হয়েছে সারাজীবন আর পুরুষের কামাতুর দৃষ্টি , শরীর ছুঁয়ে দেবার নোংরা বাসনাও কম সইতে হয়নি । বন্ধু জোটেনি কোনকালেও ।
ডায়রিটার শুরুতেই ছোট্ট করে লেখা "সামিরা " ।
ভারী সুন্দর গোটা গোটা হাতের লেখায় চোখ আটকে যায় ।
আমি পড়তে শুরু করলাম ফিতে গুজে রাখা অংশ থেকে :
একজন থুড়থুড়ে নিতান্ত বয়স্কা বৃদ্ধা আমাকে বসিয়ে দিয়ে গেছেন খাটে । কণে বেশে বাসর ঘরে বসে চোখ বুলিয়ে নিলাম চারদিকটায় । আশ্চর্যজনকভাবে খাট অথবা ঘরের কোথাও কোন ফুল জাতিয় কোন কিছুর ছিটেফোটাও নেই । মনে কষ্ট নিলাম না । পাত্রপক্ষের কাছে প্রতিনিয়ত প্রত্যাখ্যাত হতে হতে নিজের প্রতি ভালোবাসার লেশমাত্র আর অবশিষ্ট নেই । কেউ একজন যে আমাকে দয়া করে তার স্ত্রী'র মর্যাদা দিয়ে আমাকে জগৎ সংসার থেকে উদ্ধার করে নিয়েছেন তাই বা কম কিসে !
কতক্ষন যে কেটে গেছে এভাবে জানি না । বসে বসে চোখ দুটোও বুজে এসেছিল লম্বা পথের ভ্রমণ ক্লান্তিতে । হঠাৎ সেই বুড়িমা এসে বললেন ,
- অনেক রাত হইয়া গেসে অহন ঘুমায় পড়েন গো মা ।
- কেন উনি আসবেন না ?
- না গো মা , ওনার কাছে সব রাইতই বিয়ার রাইত আবার কুনো রাইতোই না ।
এমন অদ্ভূত কথার কি মানে হতে পারে বুঝতে পারলাম না ।
- কি বলেন এইসব মানে কি ........
আমার কথার কোন জবাব না দিয়ে হুরমুর করে বেরিয়ে গেলেন সেই
আমি । নিজেকে আবিষ্কার করলাম প্রচন্ড বিভৎস ও ভয়ংকরভাবে । একরাতের মধ্যে কি যে এমন খারাপ কিছু ঘটে গেল আমার সাথে অথচ আমি কিছুই মনে করতে পারলাম না । চমকে তাকিয়ে দেখলাম একটা সুতাও নেই আমার গায়ে । ভয়ে কুঁকড়ে গেলাম হতবিহ্বল আমি । মেঝেতে পড়ে থাকা শাড়িটা কাঁপা হাতে তুলে নিয়ে গায়ে জড়ালাম কোনরকমে । দরজা জানালায় প্রচন্ড ধাক্কাধাক্কি করেও কোন লাভ হলো না হাউমাউ করে কেঁদে উঠলাম ।
একটু পরেই দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করল আমার সেই স্বামী নামের শুকনো ভয়ংকর চেহারার লোকটা !
তার হাতে থাকা কয়েকটা কলা আর একটা পারুটির প্যাকেট ছুঁড়ে দিল আমার দিকে আর বলল :
- তোর নাম যেন কি ? এগুলো খেয়ে নিয়ে সেজে গুজে তৈরি হয়ে নে । সুন্দর করে সাজবি , কাস্টমার যেন খুশি হয় । আমার কথার অবাধ্য যদি হয়েছিস তবে তোর অবস্থাও করব তোর বোনের মতো ।
নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না । বললাম ,
- কার মতো ?
কিছু বলল না ঐ অমানুষ , জানোয়ারটা । কুৎসিত একটা হাসি দিয়ে বেরিয়ে গেল ।
আমার আত্মসম্মান আর পরিবারের ভালোবাসা ছাড়া আর তো কিছুই সম্বল ছিল না । এখন তো তাও নেই । মনে হলো শেষ করে দেই নিজেকে ।