গল্পঃ রূপের তরী পর্ব- ০৮ | Story: Ruper Tori | Episode-08

গল্পঃ রূপের তরী পর্ব- ০৮ | Story: Ruper Tori | Episode-08

#পর্ব_৮
Writer: #Ashura_Akter_Anu
........
পরদিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে তরীকে সোফায় শুয়ে থাকতে দেখে রূপ। একদম বাচ্চাদের মত গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে সে। বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে তরীর মুখ বরাবর বসে পড়ে। এক দৃষ্টিতে তরীর দিকে চেয়ে থাকে সে।
তরী হালকা নড়েচড়ে উঠলে হুড়মুড় করে সেখান থেকে দৌড়ে চলে যায় বাথরুমে। বাথরুমে গিয়েই দরজা আটকে দেয় সে।
এদিকে তরী হেসেই চলেছে। আসলে ও না ঘুমিয়ে এসবই লক্ষ করছিল।ঘুম থেকে উঠার ভান করে বাথরুমের দরজায় গিয়ে কড়া নাড়ে সে। ভেতর থেকে রূপ আওয়াজ দিয়ে বলে,
--ওহ আপনি উঠে পড়েছেন?একটু অপেক্ষা করুন। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
তরী দুষ্টু দুষ্টু হাসি দিচ্ছে।একটুপর রূপ বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলে তরী জিজ্ঞেস করে,
--আপনি কখন উঠলেন?বললেন না তো কিছু।
--এইতো মাত্রই উঠলাম। (হাই তুলতে তুলতে)
--ওহহ,
রূপ পাশ কাটিয়ে চলে আসে,মনে মনে ভাবে ইশশশ রে ধরা পড়ে গেলে তো আজ আবার বকুনি শুনতে হতো। অন্যদিকে তরী ভাবছে, ধ্যাত আমি কেন ঘুমানোর ভান করে থাকলাম,যদি উনি থাকতেই চোখ খুলতাম তাহলে আর কাউকে কিছু বোঝাতে হত না।
খাওয়ার টেবিলে রিশাদ সাহেব তরীকে জিজ্ঞেস করলো,
--তরী!
--হ্যা বাবা,
--কলেজে কাল কোন সমস্যা হয়েছিল।
তরী ভাবছে কিছু বলবে কিনা, তার আগেই রিশাদ সাহেব আবারও বলে উঠলো,
--সমস্যা হলেও চিন্তা করোনা। আমি কলেজের প্রিন্সিপ্যাল এর সাথে কথা বলেছি। কেউ তোমায় কিছু বলবেনা।
--ঠিক আছে বাবা।
এর মাঝে রূপ বলে ওঠে,
--বাবা আমরা ভাবছিলাম ওদের বাড়ি থেকে দু’তিন দিনের জন্য ঘুরে আসি।আমিও তো যাইনি, আর এমনিতেও বিয়ের পরে নাকি কি সব রিচুয়াল থাকে।
--হ্যা সেটাও ভালোই হয়। তরী? যাবে মা?
বাড়ি যাওয়ার কথা শুনে তরী খুশি হবে নাকি বেজার হবে ভেবে পাচ্ছেনা। কারন তরী খুশি হলেও ও বাড়ির কেউই তরীকে দেখে খুশি হবেনা।
--ঠিকআছে বাবা।
--তাহলে রূপ, কবে যেতে চাস?
--আজ দুপুরের আগেই রওনা দেই,কারন অনেকটা পথ যেহেতু যেতে হবে।
--ওকে,তাহলে তরী,,তোমাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু প্যাক করে ফেল।
--জ্বি।
ব্রেকফাস্ট শেষ করে রুমে আসে তরী।বিছানায় মন খারাপ করে বসে থাকা দেখে রূপ এসে ওর সামনে বসে।
--এই যে রুপের তরী,আপসেট কেন?
--নিশ্চুপ
--আমায় বলতে পারেন।
তরী রূপের চোখের দিকে তাকালে রূপ ওর চোখে জল দেখতে পায়। কিছুটা চিন্তার স্বরে বলে,
--কি হয়েছে আপনার?চোখে জল কেন?
--আপনি তো জানেনই আমার মা বাবা বোন...।আমাকে বিদয় করা নিয়ে সবাই অনেক চিন্তায় ছিল। এখন যদি আবার আমি ওই বাড়িতে পা রাখি, হয়তো ওরা আপনাকেও।
রূপ খানিক হেসে দিয়ে তরীর হাতদুটো ধরে বলে,
--আচ্ছা এই ব্যাপার?আপনার এই ধারনাটাই যদি আমি ভুল প্রমান করি তো?,
--মানে?(করুন চোখে)
--মানে না হয় পরেই বুঝবেন।এখন চলুন, জিনিসপত্র প্যাক করে নিন।
সকাল এগারোটা নাগাদ ওরা রওনা দেয় লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে।
রাত ন'টার দিকে ওরা গিয়ে বাড়ি পৌছে। গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে তরীর সৎ মা ওকে বুকে জড়িয়ে নেয়।ওকে ধরে কতরকম আদুরে কথবার্তা বলতে থাকে। তরী এসব দেখে রূপের দওকে তাকায়। রূপ খানিকটা মুচকি হাসি দেয়। তরীও ওর দিকে তাকিয়ে হেসে দেয়। রূপকে সাদরে স্বাগতম জানায় ওর সৎমা।রাতে সবাই মিলে হাসি ঠাট্টা ও নানানরকম গল্প গুজব করে।
আগামিকাল ওদের দুজনকে উদ্দেশ্য করে বাড়িতে ছোটখাটো একটা খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করে।।।
পরদিন সকালে একটু দেরি করেই ঘুম থেকে ওঠে তরী। হাত মুখ ধোয়ার জন্য গোসলখানার দিকে এগোতে নিলেই পেছনের বারান্দা থেকে একটা মেয়ের হাসির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়। হাসির আওয়াজটা ওর কাছে অচেনা লাগেনা। তাই পেছনের বারান্দার সামনে গিয়ে দাড়ায় তরী। এবং সেখানে হাসতে থাকা মেয়েটিকে দেখে তরীর মাথা ঘুরে যায়।
--সুইটি?তুই কবে এলি?
চিন্তিত মুখে তরী প্রশ্ন ছুড়ে দেয় মেয়েটিকে,
--কেন রে?আমি এসেছি বলে কি ভয় পাচ্ছিস?তোর জামাইয়ের সাথেও যদি হাসিঠাট্টা করি এই ভয়ে,(বলেই একটা ডেভিল হাসি দেয় সে)
সুইটি আসলে তরীর সৎ মায়ের বোনের মেয়ে।
তরী ও সুইটি সমবয়সী হলেও সুইটি একটু অভদ্র টাইপের মেয়ে। বলতে গেলে ছেলেদের সাথে ওর ফ্লার্ট করাটা অভ্যাস। এই সুত্রে, তরী ভয় পাচ্ছে রূপের সাথে যদি ও আবলতাবল কিছু..।
--নাহ নাহ, তা কেন ভাবতে যাব?এমনিই। অনেকদিন পর দেখলাম তো তাই। (করুন কন্ঠে)
--ওহহ,তা তোর জামাইকে তো দেখলাম না। এখনও ঘুমোচ্ছে নাকি?(চোখ মেরে)
--এ্যাহ,হ্যা হ্যা। ঘুমোচ্ছে। আচ্ছা আমি হাত মুখ ধুয়ে আসি কেমন?
তরী জলদি ওখান থেকে চলে আসে। এবং ওর ঘরের দিকে পা বাড়ায় । ঘুরে ঢুকে দেখে রূপ বিছানায় বসে আছে। দেখে মনে হচ্ছে মাত্রই ঘুম ভাঙ্গল ওর। রূপের কাছে গিয়ে তরী জিজ্ঞেস করে,
--আচ্ছা আপনি তো ফ্রেশ হননি তাইনা?চলুন, একসাথে যাই আমিও ফ্রেশ হইনি।
--একসাথে?!!!!(অবাক হয়ে)
--হ্যা,চলুন না।
তরীর হঠাৎ করে কি হল তা রূপ বুঝতে পারলোনা। তবে ও এটা ভাবছে তরী আর যাই হোক আজ প্রথম নিজের ইচ্ছেই ওর হাত ধরেছে।
.........
খাওয়াদাওয়ার আয়োজন চলছে জোরদার। অনেকেই এসেছে তরীদের চেনাজানা৷ তরীও হালকা ব্যাস্ত৷ সৎ মাকে সাহায্য করছে সে। অবশ্য এখন সৎ মা বললে ভুল হবে, কারন উনি একদম নিজের মায়ের মত ব্যবহার করছেন তরীর সাথে। একটা প্লেটে কয়েক রকমের মিস্টি সাজিয়ে তরীর হাতে ধরিয়ে দেন উনি। এবং বলেন,
--জামাই সে কখন সকালে খেয়েছে। যা গিয়ে দিয়ে আয়।কি মনে করবে দ্যাখ। আমিও তো ভুলেই গেছিলেম।
তরী হাসিমুখে প্লেটটা নিয়ে ঘরে ঢোকে। কিন্তু সেখানে পায়না রূপকে। না পেয়ে এদিক ওদিক খুজতে থাকে তরী। এরপর বাড়ির পেছনের পুকুরপাড়ে যায় সে।
সেখানে একটা চরাট পাতা আছে।
চরাটের ওপর রূপ.......
.
.
.
.
.
.
★আমি জানি ছোট হয়েছে😒।আজ তো গল্প দিতেই চাইছিলাম না। বৃষ্টিতে উঠোন এতটা পিচ্ছিল হয়েছে যে, কাল তিন তিনবার আছাড় খাইছি 😭।আমার সারা শরীর ব্যাথা 😫।কি করে যে লিখছি তা আমি জানি🥺।।দয়া করে এরপর কেউ ছোট বলবেন না😞
হ্যাপি রিডিং

আগে কী কষ্টে দিন কাটাইতাম- নকুল কুমার বিশ্বাস | Agey Ki Koshte Din Kataitam | Nakul Kumar Biswas

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url