মিষ্টি একটা মা | Misti Ekta Ma | Lamiya Islam | Holy Messenger | লামিয়া ...

রাইমা চলে গেল। আদিত্য বসে পড়লো। আদিত্য মোবাইল টা হাতে নিল। অহনা ষাটের উপরে মিসডকল দিয়েছে। আদিত্য তাড়াতাড়ি করে কল ব্যাক করলো। ওই পাশ থেকে।
“কোথায় ছিলে তুমি? আমার কল ধরতেছিলে না কেন? আর কি এমন করতেছিলে যে আমার কল ধরার সময় নেয় তোমার কাছে। আবার কার সাথে কি করছিলে। যে আমার কল ধরেছিলে না।”
“শান্ত হও অহনা। আমি একটা ইমপরটেন্ট কাজ করছিলাম। আর তাই কল ধরতে পারি নি। আর মোবাইল সাইলেন্ট করা ছিল যার কারনে শুনতে পায়নি।”
“আমি তো তোমার কোন কিছু না। তোমার কাছে তো তোমার কাজই সব কিছু আমি তো কোন কিছু না। তুমি তোমার কাজ নিয়ে থাক।”
“অহনা। ঠিক আছে কালকে দেখা করবো সকালে। যেখানে প্রতিদিন দেখা করি। চলে এস।”
“আচ্ছা ঠিক আছে।”
আদিত্য কলটা কেটে দিল। অহনা আদিত্য এর গার্লফ্রেন্ড। অহনা সবসময় আদিত্য কে এইভাবে ইমেশনাল ব্ল্যাকমেইল করে। মাঝে মাঝে আদিত্য এর রাগ উঠে বাট কোন কিছুই বলে না। আদিত্য চায় ব্রেক আপ করতে কিন্তু কিছুতেই পারছে না। আদিত্য দীর্ঘ একটি শ্বাস দিয়ে কফি মগে এক চুমুক দিয়ে আবার কাজ করা শুরু করলো।
________
রাইমা নিচে চলে আসলো। ডাইনিং টেবিলের পাশে ফ্লোরে বসে পড়লো। রাইমা রান্নাঘরে ঘুমায়। আর রাইমার মাটিতে শুয়ার অভ্যাস আছে তাই ফ্লোরে শুতে রাইমার কোন কষ্ট হয় না।
“মালকিন ঠিক কথায় কইছিলেন তেনাদের সাথে যাইতে। মোই জেদ ধইরা আর গেলাম না। ছোট সাহেব একলা থাকতো তাই আর গেলাম না। তেনার তো আাবার ঘন ঘন কফি খাওয়ার অভ্যেস। এখন তেনার রাগ দেইখা আর থাকতে মন চাইতাছে না। কখন জানি তেনি আমার গায়ে হাত তুইলা বসেন। মোর ডর করে। এই কখন তেনি আমাকে ডাক দিয়া বসেন।”
রাইমা ঘুমানোর জন্য বিছানা তৈরি করছে। রাইমা বিছানা করে শুয়ে পড়লো। রাইমার আজকে ওর মা বাবার কথা খুব মনে পড়ছে। রাইমার মা বাবা একটা কার অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায়। তারা কাজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ঠিক তখন কোথা থেকে একটা গাড়ি এসে উনাদেরকে উড়িয়ে দিয়ে চলে যায়।
রাইমা একদম একলা হয়ে যায়। রাইমার বড় ভাইও রাইমাকে একা করে কোথায় যেন চলে যায়। রাইমা পুরোপুরি একা হয়ে যায়। রাইমার মামি রাইমাকে সহ্য করতে পারতো না। শুধু ধরে ধরে মারতো। তখন রাইমার আট বছর বয়স ছিল।
“মা বাবা মইরা গিয়া একলা ফালাই রাইখা গেছে। আল্লাহ এর জিনিস আল্লাহ লইয়া গেছে। কিন্তু মোর ভাইজান বাইচা থাইকাও আমারে একলা ফালাই রাইখা গেছে। মোর ভাইজান মোর লগে এমন অন্যায় করলো কির লাইগ্যা। মোর ভাইজান একটা স্বার্থপর মানুষ। নিজের ছোট বোনরে একলা ফালাই রাইখা শান্তিতে কোনে যাইয়া থাকতেছে। আর মোর মামি তো একটা খতরনাক মানুষ। উঠতে বসতে খালি পিঠাইতো। কোন কিছু করিই বা না করিই। মোরে তো মানুষই মনে করতো না। এক্কের ঠিক কাম করছে মোরে এই বাড়িতে পাঠায় দিছে। অন্তত কেউ ধরে মারে না।”
এই কথাগুলো ভাবতে ভাবতে রাইমার চোখ দিয়ে এক বিন্দু অশ্রু ঝরে পড়লো। রাইমা কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে।
আজান দিয়ে দিয়েছে। আজানের শব্দে রাইমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। রাইমা ওজু করে আসলো। আর নামাজটাও পড়ে নিল। রাইমা নামাজ পড়া শেষ।
“বাড়ির সব কাম শেষ কইরা ছোট সাহেব এর লাইগা সকালের নাস্তা বানায় ফেলি।”
রাইমা সব কাজ করে ফেলল আর আদিত্য এর জন্য খাবার বানানো শুরু করে দিল।
_______
আদিত্য এখনও ঘুমিয়ে রয়েছে। আদিত্য সব সময় লেট করে ঘুম থেকে উঠে। এইটা আদিত্য এর রোজকার ঘটনা। আদিত্য এর মোবাইলে কল আসা শুরু করে দিয়েছে। আদিত্য চোখ মুছতে মুছতে কলটা রিসিভ করলো।
“হ্যালো কে?”
“কে মানে,,,, নিজের গার্লফ্রেন্ড কে কি চিনতেও পারছো না তুমি।”
“আরে না আমি খেয়াল করেনি কে কল দিয়েছে।”
“তার মানে এখনও ঘুমাচ্ছো। তার মানে তুমি ভুলে গেছ আজকে দেখা করার কথা। তুমি সবসময় কি আমার বিষয় এর সব কথা ভুলে যাও।”
“আরে না অহনা আমি ভুলে যায়নি। তুমি শুধু সময় মতো চলে এসো।”
এই কথা বলে আদিত্য কলটা কেটে দিল। আদিত্য বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।
“এই মেয়ের জন্য তো দেখি আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারবো না।”
আদিত্য ফ্রেশ হতে চলে গেল। আদিত্য ফ্রেশ হয়ে চলে আসলো। আর রেডি হয়ে নিল।
রাইমার রান্না করা শেষ। রাইমা খাবার টেবিলে খাবার রাখছে। আদিত্য রেডি হয়ে চলে আসলো। আদিত্য চেয়ারে বসলো। রাইমা খাবার খেতে দিল।
“বাড়ির সবাই কখন আসবে তুই কি কিছু জানিস?”
“কইলো তো সকালের দিকে রওনা দিব তেনারা।”
“তোকে কতবার বলবো একটু শুদ্ধ করে কথা বলার চেষ্টা করবি। তুই কি আমার কথা বুঝিস না নাকি।”
“আমি তো কওার চেষ্টা করি ছোট সাহেব। কিন্তু মুই পারি না শুদ্ধ কইরা কথা কইতে।”
“আশাকে বলডে হবে তোকে শুদ্ধ করে কথা বলা শিখাতে। বুঝতে পারছি তুই একা কিছুই পারবি না।”
আদিত্য আর কোন কথা বাড়ালো না ব্রেকফাস্ট করে বের হয়ে গেল। রাইমাও আর কোন কিছু বলল না। রাইমা জানে আদিত্য এর সামনে বেশি কথা বললেই ওকে মাইর খাইতে হবে। 
*** অনুগ্রহ পূর্বক আমাদের কন্টেন্ট কপি করার চেষ্টা করবেন না । যদি আপনি কোন অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যাক্তি বা কোম্পানির অনুমতি ছাড়াই আমাদের কন্টেন্ট নকল করার চেষ্টা করে থাকেন তবে আমরা আপনার বিরুদ্ধে ডিএমসিএ (ডিজিটাল মিলেনিয়াম কপিরাইট আইন) এ অভিযোগ করতে বাধ্য হব । জাযাকাল্লাহ!!
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url