Concept of GOD in major Religions (Bengali) || Dr Zakir Naik || Islam Pr...
Concept of GOD in major Religions (Bengali) || Dr Zakir Naik || Islam Pr...
রিমি আমার উপর শুয়ে অনবরত ঠোঁটে কিস করে চলেছে। দুই হাত দিয়ে মাথার চুল শক্ত করে খামচে ধরেছে। এমন রোমান্টিক মূহুর্তেও আমার প্রচন্ড রাগ উঠলো। আমি কোনোমতে রিমিকে ছাড়িয়ে ঠাস করে একটা চড় মারলাম। চড়ের আঘাতে রিমি তাল সামলাতে না পেরে সোফা থেকে ফ্লোরে পড়ে গেলো।
.
ফ্লোরে পড়ে যাওয়ায় রিমি মনে হয় ব্যথা পেয়েছে। ব্যথায় উহ্-আহ্ করতে করতে ফ্লোর থেকে উঠে দাঁড়ায় রিমি। আমার দিকে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে কিছু সময়। চেহেরায় রাগের আভা স্পষ্ট.! আমি ভয়ে চুপসে যাই। রিমি চোখ দু'টো লাল করে রাগী গলায় বলে,
.
-- তুই আমাকে মারলি.! দাঁড়া এক্ষুণি বড় আব্বুকে ডেকে বলছি।
.
বাবার কথা শুনতেই আমার আত্তা কেঁপে উঠলো। পৃথিবীতে এই একটা মানুষ যাকে আমি যমের মত ভয় পাই। বাবার গলার স্বর শুনলেই আমার কলিজার পানি শুকিয়ে যায়। ছোটবেলায় মারামারি করে রিমির হাত সামান্য কেটে দিয়েছিলাম। বাবা সেটা দেখে আমাকে এমন জোরে ধমক দিয়েছিল যে আমি কাঁপতে কাঁপতে প্যান্টে মুতে দিয়েছিলাম। তাছাড়া বাবা যদি সামান্য রাগী লুক নিয়ে আমার দিকে তাকায়, তাতেই আমার অবস্থা নাজেহাল হয়ে যায়। এতোটাই ভয় পাই আমি বাবাকে.! আমি আমতা আমতা করে রিমিকে বললাম,
.
-- প্লিজ বাবাকে ডাকিস না।
.
-- অবশ্যই ডাকবো। তুই আমাকে মারবি কেন.? যেখানে কেউ আমাকে সামান্য ধমক দিয়ে কথা বলে না সেখানে তুই আমার গায়ে হাত তুলেছিস.! এতো সাহস তুই পেলি কোথায়.? তোর সব সাহস আজ বের করে দিবো। বড় আব্বুকে ডেকে বলবো, তুই আমাকে খুব মারধোর করেছিস, খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করেছিস।
.
আমার ভয়টা আরো বেড়ে গেলো। বাবা রিমিকে প্রচন্ড পরিমাণে ভালবাসে.! সেই সাথে অন্ধের মত বিশ্বাস করে। রিমি যদি বলে ২+২=৫ হবে; বাবা সেটাই বিশ্বাস করবে। আর এখন যদি রিমি আমার নামে বাবার কাছে মিথ্যো নালিশ করে তাহলে বাবা আমাকে কাঁচা চিবিয়ে খাবে। আমি অসহায় দৃষ্টিতে রিমির দিকে তাকিয়ে রইলাম। রিমি মিষ্টি মিষ্টি হাসছে। আমার ভয়ার্ত চেহেরা দেখে মজা পাচ্ছে মনে হয়। আমার চুপ করা থাকা দেখে রিমি নিজে থেকেই বললো,
.
-- বড় আব্বুকে ডাকবো.?
.
-- প্লিজ বাবাকে ডাকিস না। আমি তোকে মারতে চাইনি, রাগের মাথায় মেরেছি। স্যরি.!
.
-- এসব স্যরি টরি তে কাজ হবে না। তবে একটা শর্তে ক্ষমা করতে পারি।
.
-- কি শর্ত.?
.
-- আমার ঠোঁটে ২০টা কিস, গালে ১৫টা কিস, কপালে ১০টা কিস আর থুতনিতে ৫টা কিস করতে হবে।
.
-- পারবো না। এর চেয়ে ভালো তুই বাবার কাছে আমার নামে নালিশ কর।
.
আমার কথা শুনে রিমি হুট করে রেগে যায়। আমার পাঞ্জাবি টেনে ধরে বসা থেকে দাঁড় করায় আমাকে। রিমির রাগে ভরা মুখখানা আমার মুখের সামনে এনে দাঁত কিড়মিড় করে বলে,
.
-- সমস্যা কি তোর.? আমি এখন তোর বিয়ে করা বউ.! তোর উপর সম্পূ্র্ণ অধিকার আছে আমার। কিন্তু তুই আমাকে সহ্য করতেই পারছিস না। আমাকে স্ত্রী'র অধিকার দিচ্ছিস না কেন.?
.
রিমির কথা শুনে চুপ করে রইলাম। বলার মতো কিছুই নেই আমার। রিমিকে স্ত্রীর অধিকার দেওয়া তো দূরের কথা, তার সাথে একই বিছানায় শুতে পর্যন্ত পারবো না। যাকে এতদিন বোনের চোখে দেখে এলাম তাকে এখন বউ হিসেবে মানা আমার পক্ষে সম্ভব না। তার উপর আবার ভালোবাসার মানুষকে কথা দিয়েছি রিমির সাথে খারাপ কিছু করবো না।
.
এদিকে, আমার চুপ করে থাকা দেখে রিমির রাগের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। নরম হাত দিয়ে আমার গাল দু'টো শক্ত করে চেপে ধরে। রাগে সাপের মতো ফোঁসফোঁস করতে করতে বলে উঠে,
.
-- কথা বলছিস না কেন.? আমাকে স্ত্রীর অধিকার যখন দিতেই পারবি না তাহলে বিয়ে করলি কেন.?
.
আমি টান দিয়ে রিমির হাত সড়িয়ে দিলাম। কথাগুলো বলতে চাইনি, কিন্তু এখন বলতেই হবে। আমি মনে সাহস নিয়ে বললাম,
.
-- কেন বিয়ে করেছি শুনতে চাস.? সম্পত্তির জন্য বিয়ে করেছি। তোকে বিয়ে না করলে বাবা আমাকে ত্যার্জপুত্র করে বাড়ি থেকে বের করে দিতো। সম্পত্তির ভাগও দিতো না। না খেয়ে মরতাম আমি। তাই কোন উপায়ন্তর না পেয়ে বাধ্য হয়ে তোকে বিয়ে করেছি। আর তোকে বিয়ে করার জন্য তোর বাবা আমার নামে অর্ধেক সম্পত্তি লিখে দিয়েছে।
.
আমার কথা শুনে রিমি চোখ বড় বড় করে তাকালো। আমার কথা যেন তার বিশ্বাস হচ্ছে না। ইতিমর্ধ্যে রিমির চোখে পানিও এসে গেছে। রিমি তাড়াতাড়ি হাতের উল্টোপিট দিয়ে চোখের পানি মুছে বললো,
.
-- শুধুই সম্পত্তির জন্য.? আর কিছু না.?
.
-- আর কি হবে.? তবে একটু করুণা হয়েছিল যখন শুনলাম তোর হবু বর অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছে। তাছাড়া আর কিছু না।
.
-- তার মানে আমাকে করুণা করে বিয়ে করেছিস ভালোবেসে নয়.? (কান্নার সুরে)
.
-- কি বললি.? ভালবাসা, তাও আবার তোকে.? হাউ ফানি.! তোকে আমি কোন দুঃখে ভালোবাসতে যাবো শুনি.?
.
-- কেন আমাকে কি ভালোবাসা যায় না.?
.
-- কখনোই না। ভুলে যাস না তুই আমার বোন।
.
-- কিসের বোন হ্যা.? তোর সাথে আমার কোন রক্তের সম্পর্ক নেই। আমি জাস্ট তোর চাচাতো বোন ছিলাম আর এখন বউ.!
.
প্রচন্ড রাগী গলায় বললো রিমি। কথায় যেন আগুনের ফুলকি ছিটকে পড়ছে। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি রিমিকে বোন বললেই ক্ষ্যাপা বাঘিনী হয়ে যায়। যদিও তার কারণটা জানি না। যাইহোক, আমি নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম,
.
-- সে যাই হোক, আমি এতোদিন তোকে বোনের চোখে দেখেছি এবং ভবিষ্যতেও দেখবো। তাছাড়া তোর মত মেয়েকে হাজার চেষ্টা করলেও ভালোবাসা যায় না।
.
-- কেন.? আমার মাঝে কি নেই.?
.
-- লজ্জা নেই। তোর মত বেহায়া আর লাজ-লজ্জাহীন মেয়ে আমি একটাও দেখি নি। তোর পুরো মনটা নোংরামিতে ভরা।
.
আমার কথা শুনে রিমি এতোটাই রেগে গেলো যে আমাকে মারার জন্য তেড়ে এলো। কিন্তু কি যেন ভেবে নিজেকে সংযত করলো। আমাকে মারতে গিয়েও মারলো না। হাত দু'টো মুষ্টিবদ্ধ করে উল্টোদিকে মুখ করে বসে রইলো।
আর আমি বসে বসে চিন্তা করছি কীভাবে রিমিকে আফিফার কথা বলবো এবং ডির্ভোস চাইবো। আমি এসব ভাবছিলাম হটাৎ রিমি আমার পেটে গুতো মারে। আমি রিমির দিকে তাকাই। ভ্রুঁ নাচিয়ে বলি,
.
-- কি হয়েছে.?
.
-- দেখ, যা হবার তা হয়ে গেছে। তুই আমাকে করুণা করে বিয়ে করেছিস নাকি সম্পত্তির জন্য বিয়ে করেছি- তাতে আমার কিছু যায় আসে না। তুই শুধু আমাকে স্ত্রীর অধিকার দে এবং আমাকে মেনে নে।
.
বেশ অধিকার খাটিয়ে জবাব দিলো রিমি। আমি অবাক হলাম খুব। এ-যেন অন্য এক রিমিকে দেখছি আমি। যে মেয়েটা বিয়ের পিড়িতে বসতেই চাইছিলো না, সে এখন আমার উপর স্ত্রীর অধিকার ফলাচ্ছে; তাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে বলছে। তাজ্জব বনে যাওয়ার মতো কথা। হুট করে রিমির মাঝে এতো পরিবর্তন এলো কীভাবে.? মাথায় তো কিছুই ঢুকছে না।
ঝিম মেরে বসে এসব ভাবছিলাম। রিমি আমার দিকে টকটক করে চেয়ে আছে। আমার কোনো উত্তর না পেয়ে জোরে হাতে চিমটি কাটলো। আমি 'আউচ' বলে চেচিয়ে উঠলাম। রাগে গড়গড় করে তাকালাম রিমির দিকে। রিমি অনুনয়ের স্বরে বললো,
.
-- বউ হিসেবে মেনে নে না আমাকে। তোকে অনেক সুখে রাখবো। সারাজীবন লক্ষ্মী মেয়ের মতো তোর সংসার করবো। কিউট দুইটা বেবি হবে। তোকে বাবা আর আমাকে মা বলে ডাকবে। প্লিজ মেনে নে।
.
আমি এবার দ্বিতীয় বারের মতো অবাক হলাম রিমির কথা শুনে। চোখ বড় বড় করে বললাম,
.
-- আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দে তো। তুই তো বিয়ে করতেই চাইছিলি না। বিয়ে ভাঙার জন্য কতো কী করলি। কিন্তু তোর হবু বর পালিয়ে গেলো এবং সবাই জোর করে আমার সাথে তোর বিয়ে দিলো। তবে একটা জিনিস মাথায় ঢুকছে না, এতো কিছু ঘটার পরও তুই এতো খুশি কেন.? এই বিয়েটা এতো সহজে মেনে নিলি কীভাবে.?
.
আমার কথা শুনে রিমি এবার চুপ হয়ে গেলো। মনে হলো ঘাবড়ে গেছে। প্রসঙ্গ পাল্টে বললো,
.
-- ওসব কথা বাদ দে। আমাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছিস কিনা বল।
.
-- পারবো না। তোকে মেনে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।
.
-- কেন.?
.
ভাবলাম যা হবার দেখা যাবে। আজ একটা বিহিত হয়েই যাক। আমি মনে সাহস সঞ্চার করে বুক ফুলিয়ে বললাম,
.
-- কারণ আমি আফিফাকে ভালবাসি.! ওকে ছাড়া বাঁচবো না। আফিফাকে বিয়ে করতে চাই।
.
আমার কথা শুনে রিমি চোখ কপালে তুলে তাকালো। তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলো একদম। আমাকে কাঁচা চিবিয়ে খাবে এমন একটা ভাব ধরলো।
