তোমার গায়ে হাত না রেখে ঘুম হতনা আমার | Tomar Gaye Hat Na Rekhe Ghum Hoto...

তোমার গায়ে হাত না রেখে ঘুম হতনা আমার | Tomar Gaye Hat Na Rekhe Ghum Hoto Na Amar CoMessenger

নিজের বোনের সাথে একটা ছেলের ঘনিষ্ট ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে খবর টা শুনেই মেহরাব ধপ করে দাড়ানো অবস্থায় বসে পড়লো। নাহ!বোনের এই নোংরা দৃশ্য দেখা কোনো ভাইয়ের পক্ষে সম্ভব না। নিজের চোখকে যেনো বিশ্বাস করতে পারছেনা ও। মেহরাব দুই চোখ লজ্জায় বুঝে নিলো। ঠোঁট কা'মড়ে সবটা সহ্য করার চেষ্টা করছে। মেহরাব ওর বাবা-মায়ের দিকটা চিন্তা করতেই নিজেকে সামলাতে পারলো না। এখন পুরো সমাজের মানুষ ওদের মুখে থু থু দিবে। ওদের সমাজ থেকে একঘরে করে দিবে। এই শকটা বাবা_মা সামলাতে পারবে তো? ভাবতেই মেহরাবের চোখ বেয়ে দুই ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো। হঠাৎ করেই আয়াতের কথা মাথায় আসতে মেহরাব দৌড়ে আয়াতের ঘরের দিকে গেলো। আয়াতের দরজাটা ভেতর থেকে আটকানো। আয়াতের ঘরের দরজাটা আটকানো দেখেই মেহরাবের বুকের ভেতরটা মুচড়ে উঠলো ভয়ে। মেহরাব উচ্চ গলায় আয়াতকে ডাকতে লাগলো। মেহরাবের গলার স্বর শুনে ওর মা-বাবা দুজনেই দৌড়ে এলো। হামিদ চৌধুরী মেহরাবের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে উঠলো.....
---কি হয়েছে? কেনো এভাবে ডাকছো? ও হয়তো ঘুমিয়ে আছে? কোনো সমস্যা হয়েছে বলো?
মেহরাব ওর বাবার প্রশ্নের কি উওর দিবে খুঁজে পাচ্ছেনা। মেহরাব আবারো ভয়ার্ত কন্ঠে আয়াতকে ডাকতে লাগলো। অনেক ক্ষন ডাকার পর ও উপায়ন্তর না পেয়ে মেহরাব দরজা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়। মেহরাবের মা-বাবা নিরব দর্শকের মতো তাকিয়ে দেখছে সবটা। তারা এখনো সবটা জানেনা। মেহরাব এতক্ষন ডাকার পর ও আয়াতের সাড়া শব্দ না পেয়ে ওর বাবা ও ভয় পেয়ে গেলো। মেহরাবের সাথে সাথে তিনি ও দরজা ধাক্কা তে শুরু করলেন জোরে। অনেক ক্ষন দরজা ধাক্কানোর এক পর্যায় দরজাটা খুলে যেতেই ওর তিনজন হুমড়ি খেয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই আয়াতের মা সুরাইয়া খাতুন গগন কাঁপানো চিৎকার করে উঠলো। মেহরাবের পা যেনো আর নড়ছেনা। ওর শরীর মুহূর্তেই অবশ হয়ে আসতে লাগলো। হামিদ চৌধুরী "আয়াত আমার মা" বলে চিৎকার করে দৌড়ে গেলো আয়াতের কাছে। মেঝের সাদা টাইলস গুলো র'ক্তে লাল হয়ে আছে। আয়াত হাতের মধ্যে একটা ব্লে'ড মুঠোয় করে রাখায় ওর হাতটা কে'টে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে আছে। ওর হাতের শিরা কে'টে গলগল করে র'ক্ত পড়ছে। মেহরাবের মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। মেহরাব চেয়েও নড়তে পারছেনা। একমাত্র বোনের এই অবস্থা মেহরাব সহ্য করতে পারছেনা। আয়াতের মা আর বাবা দুজনেই পাগলের মতো কাতড়াচ্ছে। তাদের এত ভালো শান্ত শিষ্ট মেয়েটা এমন কেনো করলো তারা খুঁজে পাচ্ছেনা। শুধু মাত্র মেহরাবেই জানে তাদের পরির মতো মেয়েটা ভালোবেসে ঠকে গিয়েছে সব হারিয়ে ফেলেছে। মেহরাব নিজেকে সামলে আয়াতের ওড়নাটা দিয়ে হাতটা মুড়িয়ে দিয়ে চিৎকার করে ওর বাবাকে বলে উঠলো.....
---বাবা তাড়াতাড়ি গাড়ি বের করো প্লিজ? এখন কান্না করার সময় না। আমি তোমাদের পরে সব বুজিয়ে বলব। প্লিজ যাও।
হামিদ চৌধুরী ও দেরি না করে এলোমেলো পায়ে দৌড়ে গেলো গাড়ি বের করতে। মেহরাব আয়াতকে কোলে তুলে নিয়ে বেরিয়ে গেলো। সুরাইয়া খাতুন কাঁদতে কাঁদতে মেহরাবের পেছন পেছন গেলো।
____________________________________________
মালিহাদের মেডিকেল কলেজে আজ জুনিয়রদের নবিন বরন অনুষ্ঠান। মালিহা হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। মালিশার মা নেই। বাবা বাহিরে থাকে। এ শহরে আপন বলতে কেউ নেই ওর তাই বন্ধুদের সাথে মালিহা হোস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করছে। মালিহা এইবার মেডিকেল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। আজ নবীন বরন অনুষ্ঠানে মালিহারা সবাই শাড়ি পড়বে। সবাই রেডি হয়ে আরো ঘন্টা খানেক আগেই বেরিয়ে গিয়েছে। শুধু মালিহা এখনো শাড়ি পড়তে পারেনি। মালিহার বেস্ট ফ্রেন্ড তাসফিহা অনেক ক্ষন যাবৎ বসে থাকায় এইবার বিরক্ত হয়ে বলে উঠলো......
---তুই আজ এখানেই সারাদিন কাটিয়ে দে। আর ওইদিকে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাক। এদিকে গরমে আমার অবস্থা খা'রাপ হয়ে যাচ্ছে। ধুর ভাল্লাগছেনা।
তাসফিয়ার বিরক্ত ভরা কন্ঠ স্বর শুনে মালিহা শান্ত কন্ঠেই বলে উঠলো.....
---তাসু তুই বরং যা ওইদিকটা সামলাতে থাক আমি আসচ্ছি।
তাসফিয়া কিছুক্ষন মালিহাকে একা ফেলে যেতে না চাইলেও মালিহার জোরাজোরি তে চলে গেলো। যাওয়ার সময় মালিহাকে দরজাটা আটকে দিতে বলে গেলো কিন্তু মালিহা শাড়ি পড়ায় ব্যস্ত থাকায় ওইদিক টা আর খেয়াল করলো না। মালিহার বুকের শাড়ি কুঁচি ঠিক করছে আর তখনি মালিহার পেটে কারোর শীতল স্পষ্ট পেতেই মালিহা চমকে শাড়ির আঁচলটা বুকে জড়িয়ে পেছনে তাকাতেই ওর চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো। মালিহার সামনে দাড়িয়ে মালিহার দিকে বা'জে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে রাহুল। রাহুল পেছনেই আসিফ আর সাগর দাড়িয়ে আছে। ওদের চাহনীতেও ভ'য়ংক'র কিছু দেখতে পাচ্ছে মালিহা। ওদের তিন জন কে দেখেই মালিহার বুক কেঁপে উঠলো ভয়ে। মালিহা শাড়িটাকে কাঁপা হাতে সারা শরীরে প্যাঁচিয়ে নিলো। ভয়ে ওর মুখ দিয়ে শব্দ বের হচ্ছেনা। মালিহার বুকের ভেতর ভয়ে চুপসে আসচ্ছে। মালিহা কয়েকবার ওদের দিকে ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে মনে মনে বললো....
"নাহ ওদের দেখে ভয় পেলে চলবে না। মালিহা এত নরম না। ওরা নিশ্চয়ই বাজে উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে এসেছে। কিন্তু আমি একা কি করব না। আল্লাহ, আমাকে রক্ষা করো এই ন'র পি"শা"চের হাত থেকে"
মালিহা ভয়ে মনে মনে আল্লাহ্'র নাম জপ করছে। রাহুল থুতনিতে স্লাইড করতে করতে মালিহার পা থেকে মাথা অব্দি বাজে দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে। সাগর আর আসিফ ওরা দুজন দুজনের দিকে তাঁকিয়ে হাসচ্ছে। ওরা সবাই মালিহার এক ব্যাচ সিনিয়র।মালিহাকে অনেক দিন ধরেই রাহুল আর ওর দলের সবাই ডিস্টার্ব করছিলো। মালিহা ওদের পাত্তা না দিয়ে অপমান করেছে সব সময়। মালিহা নিজেকে সামলে জোরে চেঁচিয়ে বলে উঠলো......
---আপনারা কোন সাহসে আমার রুমে ঢুকেছেন? এক্ষুনি বেরি যান নয়তো খুব খারাপ হবে বলে দিলাম? আউট।
মালিহার কথা শুনে রাহুল হাসতে হাসতে বলে উঠলো....
---এতদিন আমাকে দূরে ঠেলে রেখেছো সোনামনি। আজ তোমার এই নরম শরীরের সাধ আমি নিবো। কেউ বাঁচাতে পারবেনা আজ তোমাকে আমার হাত থেকে।
বলেই মালিহার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। মালিহা শরীরের শিরায় শিরায় রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে লাগলো৷ ওর সমস্ত অঙ্গ শীতল হয়ে আসতে লাগলো। রাহুল ক্রমশ মালিহার দিকে এগিয়ে আসচ্ছে। মালিহা চারদিকে তাঁকিয়ে নিজেকে বাঁচানোর উপায় খুঁজছে। দরজার সামনেই ওরা দু-জন দাড়িয়ে আছে। মালিহা জোরে চিৎকার করে বলতে লাগলো.....
--দেখ রাহুল আমার দিকে আর একবার পা বাড়ালে খুব খা-রাপ হবে। একদম আমাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করবিনা। এক্ষুনি বেড়িয়ে যা।
বলেই রাহুলের দৃষ্টির অগোচরে টেবিলের উপর থেকে একটা পিন নিয়ে রাহুলের হাতে গেঁথে দিতেই রাহুল আহঃ বলে শব্দ করে উঠলো। মালিহা দেরি না করে রাহুলের দুই পায়ের মাঝ বরাবর পা দিয়ে জোরে লা-থি মা-রতেই রাহুল ব্যাথায় দূরে সরে গেলো। আসিফ রাহুলের দিকে দৌড়ে গেলো। মালিহা দৌড়ে বেরিয়ে আসার জন্য পা বাড়াতেই সাগর পেছন থেকে ওর শাড়ি খা-বলে ধরলো। মালিহা নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে সাগরের সাথে পে-রে উঠতে না পেরে মালিহার পায়ে থাকা হিল দিয়ে সাগরের পায়ে জোরে পা-ড়া দিতেই সাগর ব্যাথায় মালিহার শাড়ি ছেড়ে দিতেই মালিহা দৌড়ে বেরিয়ে এলো বাইরে। রাহুলের মেইন জায়গায় যে বা-জে ভাবে আ-ঘাত লেগেছে তা সাগর আর আসিফ দুজনেই বুঝতে পারছে। হিলের আ-ঘাতে সাগরের পা থে-তলে গেছে। রাহুল ব্যা'থা সহ্য করে সাগর আর আসিফের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো....
---ও বাইরে যেতে পারবেনা। আজ ওর প্রত্যেকটা অ'ঙ্গ আমি খু-বলে নিব। আমাকে আ-ঘাত করা এই রাহুল কে আ-ঘাত করার ফল কতটা ভ'য়া'বহ হবে ও ভাবতেও পারছেনা।
____________________________________________
মালিহা দৌড়ে দরজার সামনে এসে দরজা টানতেই দেখলো দরজাটা বাইরে থেকে আটকানো। দরজাটা বাইরে থেকে আটকানো দেখে মালিহার সমস্ত শক্তি ফুরিয়ে গেলো। দরজাটা তো খোলা ছিলো তাহলে বাইরে থেকে আটকালো কে? মালিহা দরজায় জোরে জোরে ধাক্কা দিতে দিতে চেঁচাতে লাগলো। ইতিমধ্যেই পেছন থেকে রাহুল এসে মালিহার দুইহাত দরজার সাথে চেপে ধরে মালিহার গলায় মুখ ডুবালো। মালিহা সমস্ত শক্তি দিয়ে রাহুলকে ঠে-লে পেছনে নিতে পারছেনা। আসিফ আর সাগরের মুখে জয়ের হাসি। মালিহা চেঁচিয়ে যাচ্ছে আর রাহুলকে সরানোর চেষ্টা করছে। রাহুলের হিং'স্র ছো-বল এইবার মালিহার গলা ছেড়ে ওর ঠোঁটের উপর পড়লো। রাহুল রাগে মালিহার ঠোঁট দুটো কা-মড়ে ধরলো। মালিহা পারছেনা রাহুলের শক্তির সাথে পেড়ে উঠতে। মালিহার চোখ বেয়ে অনবরত পানি পড়ছে। এত চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা করতে পারলো না ও? মালিহার চেঁচামেচিতে আসিফ আর সাগর মিলে মালিহার মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে মালিহার হাত দুটো শক্ত করে বেঁধে দিলো। মালিহার দম যেনো মুহূর্তেই বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো। রাহুল মালিহাকে টে-নে ছিচড়ে এনে খাটের উপর ফেললো। মালিহা যথা সাধ্য নিজেকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করছে কিন্তু আজ মালিহা নিরুপায়। ওর বাঁচার কোনো রাস্তা নেই। বাঁচতে পারবে না ও। এই ন'র পি'শা'চরা আজ ওকে খু-বলে খাবে। ওর সব কেড়ে নিবে। রাহুল মালিহার গায়ে থেকে টান মে-রে শাড়িটা খুলে নিয়ে পৈ'শা'চিক হাসিতে ফেটে পড়লো। রাহুলের সাথে তাল মিলিয়ে সাগর আর আসিফ ও হাসচ্ছে। তিনজন শিক্ষিত মানুষ যে এতটা খারাপ হতে পারে ভাবতেও পারছেনা মালিহা। মালিহার দম ফুরিয়ে আসচ্ছে। এই ন'রক থেকে আজ মালিহাকে কেউ কি বাঁচাতে পারবেনা? মালিহা মনে মনে আল্লাহ্কে ডাকছে। আজ ওকে কেউ একজন বাঁচাতে আসুক। মালিহা অসহায় ভাবে চোখ দিয়ে রাহুলের কাছে কাকুতি মিনতি করছে। আজ রাহুলের চোখে শুধুই লোভ আর লালসা। মুহূর্তেই রাহুল ঝাঁপিয়ে পড়লো মালিহার উপর................
চলবে
শেষটা অন্যরকম
লেখনীতে_জেনিফা_চৌধুরী
সূচনা_পর্ব
শব্দসংখ্যাঃ- ১৩০৮
[আসসালামু আলাইকুম। ভুল ক্রুটি ক্ষমা করুন। এই গল্পটায় দুইজন ভিন্ন চরিত্রের নারীর জীবনী তুলে ধরার ক্ষুদ্র চেষ্টা করছি। রেসপন্সের ভিত্তিতে পরবর্তী পর্ব আসবে]

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url