Valobasha Tarpor | Afran Nisho | Sabnam Faria | Bangla Natok 2018 | Rtv...ভালোবাসা তারপর
Valobasha Tarpor | Afran Nisho | Sabnam Faria | Bangla Natok 2018 | Rtv...
ঘুমিয়ে আছি এরই মধ্যে ক্রিং ক্রিং শব্দে ফোনটা বেজে উঠলো। হাতে নিয়ে দেখি জিসানের কল, রিসিভ করার সাথে সাথেই বলতে লাগলো :
জিসান--কিরে দোস্ত কলেজে আসবি নাহ??
আমি--আরে এতো সকালেই কলেজে গিয়ে কি করবো!! আমি কি ঝাড়ুদার নাকি যে গিয়ে ঝাড়ু দিতে হবে।
জিসান--বেশী কথা বলিস তুই, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখ কয়টা বাজে। আর তারাতারি কলেজ মাঠে চলে আয় অনেক দরকারি কথা আছে।
আমিই ঠিক আছে বলে কলটা কেটে দিয়ে ঘড়ির দিকে তাকাতেই 'থ' দেখি ৯:৩০ বেজে গেছে, আর মাত্র আধ ঘন্টা সময় আছে। তারাতারি ফ্রেশ হয়ে না খেয়েই কলেজে চলে আসলাম। কলেজ মাঠে ঢুকতেই দেখি সব কয়টা হারামী বসে আছে। আমরা ৫ জন ফ্রেন্ড সবসময় একসাথেই থাকি ( জিসান,রাহাত,তানজীব,রাই আর আমি)
ওদের কাছাকাছিই যেতেই ক্লাস বেল পড়ে গেলো। কিন্তু দেখলাম একটারও ওইদিকে খেয়াল নেই সবকয়টা আগের মতো বসেই আছে। আমি গিয়ে যখন বললাম ক্লাস করবি না তোরা??
জিসান --আরে তোকে ফোনে বললাম নাহ একটা দরকারি কথা আছে সবার সাথে তাই আজকে কেউ ক্লাস করবো না তুইও বোস।
আমি-- আচ্ছা কি এমন দরকারি কথা যে ক্লাস করতেই যাওয়া যাবেনা?
রাই-- আরে দোস্ত আমরা সবাই মিলে প্ল্যান করেছি যে কোথাও পিকনিকে যাবো একদিনের জন্যে। অনেকদিন হলো এক সাথে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় নাহহ।
রাহাত--আরে হ্যা রাই ঠিকই বলেছে অনেকদিন হলো এক সাথে কোথাও ঘুরতে যাইনা। এবার যেতেই হবে ইভান তুই না করবি নাহহ।
আমি-- আরে বাবা সেটা নাহয় গেলাম কিন্তু যাবো টা কোথায়?? যাওয়ার জন্যে কোনো জায়গা ঠিক করেছিস তোরা??
জিসান-- দোস্ত ভাবছিলাম কোনো বনে যাবো পিকনিক করতে, আর ওখানেই রাত কাটিয়ে পরের দিন চলে আসবো কি বলিস সবাই??
তানজীব-- ভাই আবার বন কেন আমি এমনিই তেই ভুতে অনেক ভয় পাই। তারপর আবার ওখানে রাত কাটাতে হবে আমি পারবো নাহহ।
রাই-- থাপরাইয়া গাল লাল করমু, আমিই একটা মেয়ে হয়ে ভয় পাচ্ছি না আর তুই!!
আমি-- আচ্ছা এতো কথা বাদ দে, এখানকার বনে তো আর কোনো বাঘ -ভাল্লুক নেই তাই বনে কোনো প্রবলেম ও হবে না!!
জিসান-- তাহলে এটাই ফাইনাল আগামী কালই আমরা একটা নতুন ট্যুরে বেরোচ্ছি।
রাই-- হুম বাট একটা প্রবলেম আমার বাসায় কি বলে বের হবো বুঝতে পারছি নাহহ। তারপরও আবার একরাত বাসার বাহিরে থাকতে হবে!!
আমি-- আরে দোস্ত টেনশন নিস নাহহ, বাসায় বলবি যে এক ফ্রেন্ডের জন্মদিনে যাচ্ছি আর ওখানে আজকে থাকতে হবে।
রাই--হারামী কি বুদ্ধি রে তোর।
আমি --হুম।
তাহলে এই কথাই রইলো কালকে সকালে যেনো কাউকেই কল দিতে না হয়। সবাই ৯ টার সময় আমার বাসার সামনে চলে আসবি।
সবাই-- হুমম ঠিক আছে।
অতঃপর আমিও সবার সাথে একটু আড্ডা মেরে বাসায় চলে আসলাম। আর আম্মুকেও বলে রাখলাম যে আগামী কালকে ফ্রেন্ডস রা মিলে সবাই ঘুরতে যাবো। আজকে বেশী রাত যাগা যাবে নাহহ, তাই ডিনার করে শুয়ে পড়লাম। কখন যে রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে গেছে নিজেও জানি নাহহ,সূর্যের মিষ্টি আলোটা চোখে এসে লাগতেই ঘুমটা ভেঙে গেলো। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সবেমাত্র ৭:৩০ বাজে। তাই আর শুয়ে না থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে নিলাম। ৯ টা বাজতে না বাজতেই দেখি রাইয়ের কল। রিসিভ করলাম :
রাই--কিরে ইভান তুই কি এখনও ঘুমিয়ে আছিস? নাকি উঠে রেডি হয়েছিস। আমরা সবাই কিন্তু তোর বাসার নিচে দাড়িয়ে আছি।
আমি--বলিস কি সব দেখি ঠিক টাইমে এসে হাঁজির। আমিও রেডি হয়েছি তোরা একটু দাড়া আমি আসছি।
রাই আচ্ছা বলেই লাইনটা কেটে দিলো। আমি রাতেই সব ব্যাগে গুছিয়ে রেখেছিলাম। এখন শুধু ব্যাগটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম বাসা থেকে। নিচে এসে দেখি সব কয়টাই দারিয়ে আছে।আর সবার মাঝেই একটু অ্যাডভেঞ্চার অ্যাডভেঞ্চার ভাব আছে।
তানজীব-- তাহলে সত্যিই তোরা ওই ভয়ানক শালবনেই যাবি??
আমি--কোনো আমরা কি শিশু পার্কে যাওয়ার জন্যে বের হয়েছি নাকি??
জিসান--আরে ছাড় তো ওর কথা, ভিতুর ডিম একটা। আজকে বনে গিয়ে শুধু রাতটা হোক তানজীব তোকে যদি ভয় না দেখিয়েছি আমার নামও জিসান নাহ( মনে মনে)
আমি-- হারামীরা কথা বলে অনেক সময় নষ্ট করেছিস। এবার সবার সম্মতি হলে যাওয়া যাক।
রাই-- হ্যা আর কথা বাড়িয়ে সময় নষ্ট করে লাভ নেই চল সবাই।
সবার কথা মতো যাত্রা শুরু করলাম শালবন বিহার বনের দিকে। এখানে যেতে টাংগাইল মেইন শহর থেকে প্রায় ৪-৫ ঘন্টার পথ। এখান থেকে কুটিরবাড়ি পর্যন্ত আমাদের বাসে যেতে হবে, তারপর সেখান থেকে কোনো যানবাহন চলাচল করে কিনা আমাদের জানা নেই।
অবশেষে অনেক হই -হুল্লর করতে করতে আমরা চলে গেলাম কুটিরবাড়ি বাসস্টপে। বাস থেকে নেমেই কেমন যেনো এক ভৌতিক নিরবতা অনুভব করতে লাগলাম। এখন আমাদের গন্তব্য স্থান হলো শালবনবিহার বন। কিন্তু আমরা এখানে এই প্রথমবারই এলাম কোন দিক দিয়ে যেতে হয় সঠিক রাস্তা আমাদের জানা নেই।
আমি-- দোস্ত কুটিরবাড়ি তো চলে এলাম কিন্তু শালবনে যাওয়ার রাস্তা কোন দিকে আমরা তো ঠিক জানিনা!
রাহাত--একটা কাজ করলে কেমন হয় ওইযে একটু দুরে একটা টি - স্টল দেখা যাচ্ছে ওখানে গিয়ে জিগ্যেস করলে কেমন হয়??
আমি-- হুম এই মুহূর্তে এটা করা ছাড়া আমাদের কাছে আর কোনো উপায় নেই। চল ওখানে গিয়েই জিগ্যেস করা যাক।
চলে এলাম টি-স্টল টির কাছে ছোটখাটো একটা দোকান মনে হচ্ছে নিরবতা যেনো পরিবেশ টাকে গ্রাস করে আছে। দোকানটির ভেতরে ঢুকতেই দেখতে পেলাম তিনজন লোক বসে চা খাচ্ছে। কিন্তু কেমন যেনো এক অদ্ভুত চাহনি তাদের। কোনো ভাবেই সাধারণ মানুষদের সাথে মিলাতে পারলাম নাহ। ওখানে গিয়ে একজন কে শালবনের রাস্তা টা কোন দিকে জিগ্যেস করতেই যেটা বললো -সেটা শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা।