বাংলা গান একলা পাখি ।। Ekla Pakhi | Dhruba | Asif Akbar | Mithila | Bangla new song 2017 ***
Ekla Pakhi | Dhruba | Asif Akbar | Mithila | Bangla new song 2017 বাংলা গান একলা পাখি ***সকাল বেলা ইরফান কি যেনো মনে করে বেলীর রুমের দিকে যায় । তখন বেলী নিজের কিছু জামাকাপড় গুছিয়ে নিচ্ছিলো । মিনুও সেখানেই ছিল । তখনই ইরফান কিছু শুনতে পায় । - ভাবী , আপনেরা কি আইজকাই যাইবেন ? - হু , - কবে আইবেন ? - শনিবারে , - তাইলে আমিও কি শনিবারে আইতাম ? - নাহ তুমি রবিবারেই এসো । - আইচ্ছা , ভাবী কি পইরা যাইবেন বাইত ? - আমি তো বোরখা পরি । - এই ফুরান বোরখাডা নি ফরবেন ? - নতুন পাবো কোথায় ? - ভাইয়েরে কন , - নাহ থাক , যেটা আছে সেটাই পরে যাবো , টাকা অপচয় করে কি লাভ ? - রুবি ভাবী দুইন্নার টাকা উড়ায় , আর আপনে একটা বোরখা কিনবেন তাতেও অপচয় কন । আপনে মানুষ নাকি রোবট - তুমি কথা বেশি বলো মিনু । কারো অনুপস্থিতিতে তার সম্পর্কে সমালোচনা করা ঠিক না , কবে বুঝবে তুমি মিনু ? - থাউক আমি আর কিছু কমু না ।
ইরফান এতক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে ওদের কথাগুলো শুনে । বেলী তেমন হাই ফাই চলাফেরা করে না । একদম নরমাল তার চলাফেরা । মেয়েটার যা প্রয়োজন তার চাইতেও কম প্রকাশ তার । সবটা চায় না সে । ইরফান আর কিছুই বলেনি । বেলীর রুমে যায় সে । বেলী তখন জামাকাপড় গুছিয়ে নিচ্ছিলো । - বেলী ,,,,,,? - জ্বি ,- তুই জামাকাপড় গুছিয়ে নে , আমি ১ টার মধ্যে চলে আসবো । - হুম আচ্ছা । - কিছু লাগবে তোর ? - নাহ ,- কিছুই লাগবে না তো ? - নাহ , লাগবে না সব কিছুই আছে । - আচ্ছা । ইরফান বেলীর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে , কত সহজেই নিজের চাওয়া পাওয়া গুলোকে বিসর্জন দিতে পায়ে সে । হালকা হাসি দিয়ে বেরিয়ে যায় ইরফান । অফিসে গিয়ে বসের সাথে কথা বলে দুই দিনের ছুটি নেয় ইরফান । আজকের দিন টা আর শনিবারের দিনটা । শুক্রবার তো এমনিতেই অফ ডে । ভেবেছিল আজকে হাফ টাইম করবে কিন্তু জরুরী কাজ থাকায় আজকেই ছুটি নিয়ে নেয় ইরফান । ছুটি নিয়ে সোজা বেরিয়ে যায় সে অফিস থেকে ।
এইদিকে বেলা সাড়ে ১২ টা । মিনুও রেডি , কিছুক্ষন পরই মিনু চলে যাবে । অনেকদিন হয়েছে সেও বাড়িতে যেতে পারেনি । তাই ইরফান এর কথা অনুযায়ী মিনুও দুইটা দিন নিজের বাড়িতে গিয়ে থেকে আসবে । ইরফান এলেই মিনু বেড়িয়ে যাবে । বেলীও গোসল করে ফ্রী হয়ে নেয় । চুলগুলো অনেক বড় তার , তাই চুলগুলো শুকানোর জন্য ছেড়ে রেখে দেয় বেলী । ১ টা নাগাদ ইরফানও চলে আসে । ইরফান বাসায় আসলে মিনুও চলে যাবে বলে ইরফানের কাছে যায় ।
- ভাই ,,,,,,?- মিনু আয় ভেতরে । - ভাই তাইলে আমি যাই , - এখনি যাবি ? - হ , নাইলে বাস পামু না । আপনেরা কোন সময় যাইবেন ? - আমরা ৪ টার বাসে যাবো , আচ্ছা এইটা রাখ । যাওয়ার সময় বাড়ির জন্যে কিছু নিয়ে যাস । মিনু দেখে ইরফান তাকে ১০০০ হাজার টাকার একটা নোট সাধে । ইরফানের সব কিছুই ভালো লাগে মিনুর কিন্তু যখন তার বেলী ভাবীকে মারে তখনই মিনু ইরফানের গুষ্টি এক করে । ইরফানের হাত থেকে টাকাটা নেয় মিনু । তখন ইরফান আবার বলে উঠে ,
- বেলী কি করে রে , - ভাবী তো রুমে , চুল শুকায় । - আচ্ছা তুই তাহলে বেরিয়ে যা । - আইচ্ছা ভাই তাইলে আসি , - আচ্ছা সাবধানে যা । রবিবারে চলে আসিস । - আইচ্ছা ।
মিনু ইরফানের রুম থেকে বেরিয়ে বেলীর রুমে যায় । সেখানে বেলীর সাথে কথা বলে বিদায় নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে বেরিয়ে যায় মিনু । বেলী কিছুক্ষণ রুমেই ছিল , তারপর ২ টা বাজে ইরফানের রুমের দরজার সামনে যায় সে । পর্দা সরিয়ে ইরফানকে ডাকে সে । - শুনছেন,,,,,,? - হ্যাঁ , - খেতে আসেন , ভাত বাড়ছি - আসতেছি ,
ইরফান বেলীর ডাকে ডাইনিং টেবিলে যায় । সেখানে সব গুছিয়ে রাখা আছে । বেলী সব সময় টেবিলটা গুছিয়েই রাখে হয়তো । রান্নাঘরের দিকে উঁকি দেয় ইরফান । বেলী তখন রান্নাঘরে সব কিছু গুছিয়ে রাখছে । দুইদিন পর ফিরবে তারা , তাই সব কিছু গুছিয়ে রেখে যাচ্ছে সে । ইরফান বেলীর চুলের দিকে তাকিয়ে আছে । ভেজা চুলগুলো প্রায় অনেকটাই শুকিয়ে গেছে । হাটুর নিচ অবদি চুল বেলীর । মাশা-আল্লাহ চুলগুলো মনে হচ্ছিলো আল্লাহর নিজের হাতে বানানো ।ইরফান কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চেয়ারে বসে পড়ে । চেয়ারে বসেই বেলীকে ডাকে ইরফান ।
- জ্বি , - আমি কি কুকুর নাকি ? - ছিহ ! কি সব বলেন ?- বাসার কুকুরকে মানুষেরা এইভাবেই ভাত দেয় । ভাত পানি সামনে দিয়ে আরেক জায়গায় সরে থাকে । বেলী বুঝে যায় ইরফানের কোথায় সমস্যা হচ্ছে । বেলীর এই কাজটা করা হয়তো উচিত হয়নি । শত হোক কাউকে খাবার দিয়ে তার সামনে থেকে চলে যেতে হয় না এটা অভদ্রতা করা হয় । ওই ব্যাক্তিকে অসম্মান করা হয় ।
- আসলে আমি রান্নাঘরের জিনিসপত্রগুলা গুছিয়ে রাখতেছিলাম । - খাওয়ার পরে কি গুছানো যেতো না ? - আচ্ছা বসেন আপনি , আমি আছি এখানে । - তুই খাবি না ? - পরে খাবো , - বাড়িতে গিয়ে খাবি , তাই না ? - বাড়ি যেতে যেতে তো সন্ধ্যার পর হয়ে যাবে । - তাহলে কোন পরে খাবি ? নাকি আমার সামনে তোর খেতে মন চায় না । বেলী বুঝে যায় ইরফানের এখন প্রচুর রাগ উঠে গেছে । তাই সে চুপচাপ খেতে বসে যায় । - বেলী , আমি জানোয়ার না ঠিকাছে ? হ্যাঁ হয়তো আমার আচরণ জানোয়ার সুলভ কিন্তু আমিও মানুষ , জানোয়ার নই - আপনি এইসব কি বলেন ? নেন ভাত খান ।
দুজনে এক সাথে খেয়ে নেয় । খাওয়ার সময় ইরফানের নজর বার বার বেলীর দিকে যাচ্ছিলো । বেলী বরাবরই শান্ত স্বভাবের । খাওয়ার সময়ও শান্ত হয়ে থাকে সে । খাওয়ার পর বেলী সব গুছিয়ে নিজ রুমে চলে যায় । প্রায় ৩ টার মত বেজে গেছে । আধা ঘন্টার মধ্যেই তারা বেরিয়ে পড়বে ৷ তাই কোন রকম রেডি হয়ে নিবে সে । কিন্তু এরই মাঝে বেলীর রুমের দরজায় টোকা পড়ে । বেলী দরজা খুলে দেখে ইরফান দাঁড়িয়ে আছে ।
- কিছু বলবেন ? - হু , ভেতরে ঢুকতে দে আগে । - ওহ , আসেন । ইরফান রুমে এসে বেলীকে কিছু প্যাকেট দেয় । বেলীও অবাক ইরফানের হাতের প্যাকেট দেখে । বেশ অনেকগুলোই প্যাকেট দেখতে পাচ্ছিলো বেলী ইরফানের হাতে । - কিসের প্যাকেট এইগুলা ? - খুলেই দেখ কিসের প্যাকেট এইগুলা ।
বেলী প্যাকেট গুলো খুলে বেশ খানিকটা অবাক হয় । দুটো নরমাল সুতি শাড়ি , দুটো হাফ সিল্ক শাড়ি , তার সাথে ম্যাচিং হিজাব , আর একটা দামী বোরখা , এক জোড়া দামী জুতা , তার সাথে আরেক জোড়া সিম্পল স্যান্ডেল , একটা লেডিস হ্যান্ড পার্স সহ সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আসছে ইরফান বেলীর জন্যে । বেলী জিনিসপত্র গুলো দেখছিল আর বারবার ইরফানের দিকে তাকাচ্ছে । এতকিছু এর আগে কখনো আনে নি ইরফান বেলীর জন্যে ।
- পছন্দ হইছে ? -...........- কিরে পছন্দ হইছে ? - এত কিছু হঠাৎ করে ? - এমনি আনতে মন চাইলো । - কত গুলো টাকা খরচ হলো । কি দরকার ছিল । - এগুলোর দাম খুবই সীমিত , টাকা নিয়ে ভাবিস না । -..............- রেডি হয়ে নে । - আচ্ছা , - কি পরবি ? - বোরখা-ই পরি , - শাড়ি পরতে পারস না ? - পারি , কিন্তু ভেজাল লাগে , বোরখা-ই পরি । - আচ্ছা পরে নে । তাড়াতাড়ি কর
তারপর ইরফান রুম থেকে বেরিয়ে যায় । বেলীও নতুন একটা সুতির জামা পরে নিয়ে উপরে বোরখা পরে নেয় । আর ইরফানের দেয়া একটা হিজাব পরে নেয় । বেলী অনেক সুন্দর করে হিজাব বাধতে পারে । হালকা লিপস্টিক আর একটু কাজল এটাই বেলীর সাজ । সে রং চং দিতে জানে না । এটাই তার কাছে বেশি কিছু । অন্যদিকে সব গুছিয়ে নেয়ার পর ইরফান তার জামাকাপড় নিয়ে আসে বেলীর রুমে ।
- বেলী ,,,,,,?- জ্বি , - এই ট্রলিতে তোর আর আমার জামাকাপড় গুলো গুছা । - কেন ? - কি কেন , আমরা কি আলাদা জামাকাপড় নিবো নাকি । - সব কিছুই তো আলাদা , তাহলে কাপড় এক হয়ে কি হবে ।
বেলীর কথায় ইরফান চুপ হয়ে যায় । তখন নিজেই বেলীর আর তার জামাকাপড় গুলো গুছিয়ে নেয় । বেলী তখন চুপ করে দাঁড়িয়ে ইরফানকে দেখছিল । ইরফানকে আজ দারুণ লাগছিল । কালো শার্ট আর ব্ল্যাক জিন্সে বেশ সুন্দর লাগছিল তাকে । নিজেকে বড্ড বেশি বেমানান লাগছিল ইরফানের সাথে । সত্যিই বড্ড বেশিই বেমানান লাগছিল । তার সাথে হয়তো রুবিকেই দারুণ মানায় । তাই তো সে থাকা সত্ত্বেও রুবিকে ঘরে আনা হয়েছে । নিয়তি বড্ড কঠিন জিনিস । যতই খারাপ হোক না কেন মানতে হয় ।
সকাল বেলা ইরফান কি যেনো মনে করে বেলীর রুমের দিকে যায় । তখন বেলী নিজের কিছু জামাকাপড় গুছিয়ে নিচ্ছিলো । মিনুও সেখানেই ছিল । তখনই ইরফান কিছু শুনতে পায় ।
- ভাবী , আপনেরা কি আইজকাই যাইবেন ?
- হু ,
- কবে আইবেন ?
- শনিবারে ,
- তাইলে আমিও কি শনিবারে আইতাম ?
- নাহ তুমি রবিবারেই এসো ।
- আইচ্ছা , ভাবী কি পইরা যাইবেন বাইত ?
- আমি তো বোরখা পরি ।
- এই ফুরান বোরখাডা নি ফরবেন ?
- নতুন পাবো কোথায় ?
- ভাইয়েরে কন ,
- নাহ থাক , যেটা আছে সেটাই পরে যাবো , টাকা অপচয় করে কি লাভ ?
- রুবি ভাবী দুইন্নার টাকা উড়ায় , আর আপনে একটা বোরখা কিনবেন তাতেও অপচয় কন । আপনে মানুষ নাকি রোবট
- তুমি কথা বেশি বলো মিনু । কারো অনুপস্থিতিতে তার সম্পর্কে সমালোচনা করা ঠিক না , কবে বুঝবে তুমি মিনু ?
- থাউক আমি আর কিছু কমু না ।
ইরফান এতক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে ওদের কথাগুলো শুনে । বেলী তেমন হাই ফাই চলাফেরা করে না । একদম নরমাল তার চলাফেরা । মেয়েটার যা প্রয়োজন তার চাইতেও কম প্রকাশ তার । সবটা চায় না সে । ইরফান আর কিছুই বলেনি । বেলীর রুমে যায় সে । বেলী তখন জামাকাপড় গুছিয়ে নিচ্ছিলো ।
- বেলী ,,,,,,?
- জ্বি ,
- তুই জামাকাপড় গুছিয়ে নে , আমি ১ টার মধ্যে চলে আসবো ।
- হুম আচ্ছা ।
- কিছু লাগবে তোর ?
- নাহ ,
- কিছুই লাগবে না তো ?
- নাহ , লাগবে না সব কিছুই আছে ।
- আচ্ছা ।
ইরফান বেলীর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে , কত সহজেই নিজের চাওয়া পাওয়া গুলোকে বিসর্জন দিতে পায়ে সে । হালকা হাসি দিয়ে বেরিয়ে যায় ইরফান ।
অফিসে গিয়ে বসের সাথে কথা বলে দুই দিনের ছুটি নেয় ইরফান । আজকের দিন টা আর শনিবারের দিনটা । শুক্রবার তো এমনিতেই অফ ডে । ভেবেছিল আজকে হাফ টাইম করবে কিন্তু জরুরী কাজ থাকায় আজকেই ছুটি নিয়ে নেয় ইরফান । ছুটি নিয়ে সোজা বেরিয়ে যায় সে অফিস থেকে ।
এইদিকে বেলা সাড়ে ১২ টা । মিনুও রেডি , কিছুক্ষন পরই মিনু চলে যাবে । অনেকদিন হয়েছে সেও বাড়িতে যেতে পারেনি । তাই ইরফান এর কথা অনুযায়ী মিনুও দুইটা দিন নিজের বাড়িতে গিয়ে থেকে আসবে । ইরফান এলেই মিনু বেড়িয়ে যাবে । বেলীও গোসল করে ফ্রী হয়ে নেয় । চুলগুলো অনেক বড় তার , তাই চুলগুলো শুকানোর জন্য ছেড়ে রেখে দেয় বেলী ।
১ টা নাগাদ ইরফানও চলে আসে । ইরফান বাসায় আসলে মিনুও চলে যাবে বলে ইরফানের কাছে যায় ।
- ভাই ,,,,,,?
- মিনু আয় ভেতরে ।
- ভাই তাইলে আমি যাই ,
- এখনি যাবি ?
- হ , নাইলে বাস পামু না । আপনেরা কোন সময় যাইবেন ?
- আমরা ৪ টার বাসে যাবো , আচ্ছা এইটা রাখ । যাওয়ার সময় বাড়ির জন্যে কিছু নিয়ে যাস ।
মিনু দেখে ইরফান তাকে ১০০০ হাজার টাকার একটা নোট সাধে । ইরফানের সব কিছুই ভালো লাগে মিনুর কিন্তু যখন তার বেলী ভাবীকে মারে তখনই মিনু ইরফানের গুষ্টি এক করে । ইরফানের হাত থেকে টাকাটা নেয় মিনু । তখন ইরফান আবার বলে উঠে ,
- বেলী কি করে রে ,
- ভাবী তো রুমে , চুল শুকায় ।
- আচ্ছা তুই তাহলে বেরিয়ে যা ।
- আইচ্ছা ভাই তাইলে আসি ,
- আচ্ছা সাবধানে যা । রবিবারে চলে আসিস ।
- আইচ্ছা ।
মিনু ইরফানের রুম থেকে বেরিয়ে বেলীর রুমে যায় । সেখানে বেলীর সাথে কথা বলে বিদায় নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে বেরিয়ে যায় মিনু । বেলী কিছুক্ষণ রুমেই ছিল , তারপর ২ টা বাজে ইরফানের রুমের দরজার সামনে যায় সে । পর্দা সরিয়ে ইরফানকে ডাকে সে ।
- শুনছেন,,,,,,?
- হ্যাঁ ,
- খেতে আসেন , ভাত বাড়ছি
- আসতেছি ,
ইরফান বেলীর ডাকে ডাইনিং টেবিলে যায় । সেখানে সব গুছিয়ে রাখা আছে । বেলী সব সময় টেবিলটা গুছিয়েই রাখে হয়তো । রান্নাঘরের দিকে উঁকি দেয় ইরফান । বেলী তখন রান্নাঘরে সব কিছু গুছিয়ে রাখছে । দুইদিন পর ফিরবে তারা , তাই সব কিছু গুছিয়ে রেখে যাচ্ছে সে । ইরফান বেলীর চুলের দিকে তাকিয়ে আছে । ভেজা চুলগুলো প্রায় অনেকটাই শুকিয়ে গেছে । হাটুর নিচ অবদি চুল বেলীর । মাশা-আল্লাহ চুলগুলো মনে হচ্ছিলো আল্লাহর নিজের হাতে বানানো ।ইরফান কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চেয়ারে বসে পড়ে । চেয়ারে বসেই বেলীকে ডাকে ইরফান ।
- জ্বি ,
- আমি কি কুকুর নাকি ?
- ছিহ ! কি সব বলেন ?
- বাসার কুকুরকে মানুষেরা এইভাবেই ভাত দেয় । ভাত পানি সামনে দিয়ে আরেক জায়গায় সরে থাকে ।
বেলী বুঝে যায় ইরফানের কোথায় সমস্যা হচ্ছে । বেলীর এই কাজটা করা হয়তো উচিত হয়নি । শত হোক কাউকে খাবার দিয়ে তার সামনে থেকে চলে যেতে হয় না
এটা অভদ্রতা করা হয় । ওই ব্যাক্তিকে অসম্মান করা হয় ।
- আসলে আমি রান্নাঘরের জিনিসপত্রগুলা গুছিয়ে রাখতেছিলাম ।
- খাওয়ার পরে কি গুছানো যেতো না ?
- আচ্ছা বসেন আপনি , আমি আছি এখানে ।
- তুই খাবি না ?
- পরে খাবো ,
- বাড়িতে গিয়ে খাবি , তাই না ?
- বাড়ি যেতে যেতে তো সন্ধ্যার পর হয়ে যাবে ।
- তাহলে কোন পরে খাবি ? নাকি আমার সামনে তোর খেতে মন চায় না ।
বেলী বুঝে যায় ইরফানের এখন প্রচুর রাগ উঠে গেছে । তাই সে চুপচাপ খেতে বসে যায় ।
- বেলী , আমি জানোয়ার না ঠিকাছে ? হ্যাঁ হয়তো আমার আচরণ জানোয়ার সুলভ কিন্তু আমিও মানুষ , জানোয়ার নই
- আপনি এইসব কি বলেন ? নেন ভাত খান ।
দুজনে এক সাথে খেয়ে নেয় । খাওয়ার সময় ইরফানের নজর বার বার বেলীর দিকে যাচ্ছিলো । বেলী বরাবরই শান্ত স্বভাবের । খাওয়ার সময়ও শান্ত হয়ে থাকে সে । খাওয়ার পর বেলী সব গুছিয়ে নিজ রুমে চলে যায় । প্রায় ৩ টার মত বেজে গেছে । আধা ঘন্টার মধ্যেই তারা বেরিয়ে পড়বে ৷ তাই কোন রকম রেডি হয়ে নিবে সে । কিন্তু এরই মাঝে বেলীর রুমের দরজায় টোকা পড়ে । বেলী দরজা খুলে দেখে ইরফান দাঁড়িয়ে আছে ।
- কিছু বলবেন ?
- হু , ভেতরে ঢুকতে দে আগে ।
- ওহ , আসেন ।
ইরফান রুমে এসে বেলীকে কিছু প্যাকেট দেয় । বেলীও অবাক ইরফানের হাতের প্যাকেট দেখে । বেশ অনেকগুলোই প্যাকেট দেখতে পাচ্ছিলো বেলী ইরফানের হাতে ।
- কিসের প্যাকেট এইগুলা ?
- খুলেই দেখ কিসের প্যাকেট এইগুলা ।
বেলী প্যাকেট গুলো খুলে বেশ খানিকটা অবাক হয় । দুটো নরমাল সুতি শাড়ি , দুটো হাফ সিল্ক শাড়ি , তার সাথে ম্যাচিং হিজাব , আর একটা দামী বোরখা , এক জোড়া দামী জুতা , তার সাথে আরেক জোড়া সিম্পল স্যান্ডেল , একটা লেডিস হ্যান্ড পার্স সহ সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আসছে ইরফান বেলীর জন্যে ।
বেলী জিনিসপত্র গুলো দেখছিল আর বারবার ইরফানের দিকে তাকাচ্ছে । এতকিছু এর আগে কখনো আনে নি ইরফান বেলীর জন্যে ।
- পছন্দ হইছে ?
-...........
- কিরে পছন্দ হইছে ?
- এত কিছু হঠাৎ করে ?
- এমনি আনতে মন চাইলো ।
- কত গুলো টাকা খরচ হলো । কি দরকার ছিল ।
- এগুলোর দাম খুবই সীমিত , টাকা নিয়ে ভাবিস না ।
-..............
- রেডি হয়ে নে ।
- আচ্ছা ,
- কি পরবি ?
- বোরখা-ই পরি ,
- শাড়ি পরতে পারস না ?
- পারি , কিন্তু ভেজাল লাগে , বোরখা-ই পরি ।
- আচ্ছা পরে নে । তাড়াতাড়ি কর
তারপর ইরফান রুম থেকে বেরিয়ে যায় । বেলীও নতুন একটা সুতির জামা পরে নিয়ে উপরে বোরখা পরে নেয় । আর ইরফানের দেয়া একটা হিজাব পরে নেয় । বেলী অনেক সুন্দর করে হিজাব বাধতে পারে । হালকা লিপস্টিক আর একটু কাজল এটাই বেলীর সাজ । সে রং চং দিতে জানে না । এটাই তার কাছে বেশি কিছু । অন্যদিকে সব গুছিয়ে নেয়ার পর ইরফান তার জামাকাপড় নিয়ে আসে বেলীর রুমে ।
- বেলী ,,,,,,?
- জ্বি ,
- এই ট্রলিতে তোর আর আমার জামাকাপড় গুলো গুছা ।
- কেন ?
- কি কেন , আমরা কি আলাদা জামাকাপড় নিবো নাকি ।
- সব কিছুই তো আলাদা , তাহলে কাপড় এক হয়ে কি হবে ।
বেলীর কথায় ইরফান চুপ হয়ে যায় । তখন নিজেই বেলীর আর তার জামাকাপড় গুলো গুছিয়ে নেয় । বেলী তখন চুপ করে দাঁড়িয়ে ইরফানকে দেখছিল । ইরফানকে আজ দারুণ লাগছিল । কালো শার্ট আর ব্ল্যাক জিন্সে বেশ সুন্দর লাগছিল তাকে । নিজেকে বড্ড বেশি বেমানান লাগছিল ইরফানের সাথে । সত্যিই বড্ড বেশিই বেমানান লাগছিল । তার সাথে হয়তো রুবিকেই দারুণ মানায় । তাই তো সে থাকা সত্ত্বেও রুবিকে ঘরে আনা হয়েছে । নিয়তি বড্ড কঠিন জিনিস । যতই খারাপ হোক না কেন মানতে হয় ।