Notun Kore Shuru | নতুন করে শুরু | Ziaul Faruq Apurba | Tasnia Farin | Eid Natok 2022 | Rtv Drama


'আজব এক চাকরি! ইমামতি!!
কয়েক কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা মসজিদ ইমামের বেতন মাত্র আট হাজার টাকা! ইমাম নিয়োগ দেওয়ার জন্য মসজিদে ইন্টারভিউয়ের আয়োজন করা হলো। ইসলামী ফাউন্ডেশন থেকে আলেমদের নিয়ে আসা হলো ইন্টারভিউ নিতে। এই নিয়ে বাজেট হলো প্রায় ৮০ হাজার টাকা। প্রায় দেড়শ আলেম থেকে বাছাই করে রাখা হলো যোগ্যতাসম্পন্ন একজন আলেমকে।

মাশাল্লাহ তিনি হাফেজ মাওলানা মুফতি। পোস্টারে এর আগে অনেক শর্তও জুড়ে দেয়া হয়েছিলো। যার মধ্যে হাফেজ মাওলানা মুফতি হওয়া ছিলো অন্যতম শর্ত। সবকিছুই ভালোভাবে সম্পন্ন হলো আলহামদুলিল্লাহ। ইমাম সাহেবের মাসিক হাদিয়া নির্ধারণ করা হলো 'সাতহাজার টাকা।

এই বেতনেই চলছিলো ইমাম সাহেবের দিন। হঠাৎ একদিন ইমাম সাহেব বললেন, আমাদের একটা মিম্বর লাগবে। যেটায় দাঁড়িয়ে সুন্দর করে খুতবা দেওয়া যায়। মাশাল্লাহ এক সপ্তাহের মধ্যেই দেড়লাখ টাকা বাজেটের মিম্বর চলে আসলো। অন্য আরেক জুম্মায় আবার জানানো হলো, মসজিদের মাইকের সমস্যা। এটাও হয়ে আসলো সপ্তাহের ভিতরেই। এভাবেই প্রতি জুম্মায় বড়ো কোনো বাজেটের ঘোষণা করা হয়, সপ্তাহের ভিতরেই সেটা সম্পন্ন হয়ে যায়। কিন্তু ইমাম সাহেবের বেতনের কোনো পরিবর্তন নেই। এখনো সেই সাতহাজারই।

এভাবে চলতে চলতে ইমাম সাহেবের বয়স বেড়ে কালো দাড়ি সাদা হলো। পরিবারের সদস্য সংখ্যা বারতে থাকলো কিন্তু তাঁর বেতন যেই সেই। তবে হে, অনেকদিন ইমামতি করার ফলে একটু দয়া দেখিয়ে বাড়ানো হলো এক হাজার।

মসজিদও কিছুটা পুরনো হলো। এদিকে পাশের মহল্লায় পাঁচকোটি টাকা বাজেটে তিন গম্বুজের মসজিদ নির্মাণ করা হলো। এবার এই মহল্লার মানুষ বাজেট নিলো ১০কোটি টাকার ছয় গম্বুজের মসজিদ বানাতে। অল্প দিনেই কাজ সম্পন্ন হয়ে সুদর্শন একটি মসজিদ হয়ে গেলো।
কিন্তু ইমাম সাহেবের রুম এখনো সেই প্রশ্রাবখানা/ সিঁড়ির নিচেই আছে। স্টিলের জানালা মরিচা ধরে কিছুটা ভেঙ্গে পড়ে আছে। হার্ড বোর্ড দিয়ে কোনোমতে আটকে রেখেছেন তুফান থেকে বাঁচতে।
মসজিদে একেকটা ঝাড়বাতি লাগানো হলো একলাখ টাকা করে। কিন্তু ইমাম সাহেবের রুমে একশ টাকার বালব এখনো নিভু নিভু করছে।

মসজিদের এসিরও একেকটার অনেক দাম। কিন্তু ইমাম সাহেবে রুমে ২০ বছর পুরনো ফ্যান এখনো ঘেনর ঘেনর করছে।
মসজিদের প্রশ্রাবখানার ফ্লোরও মোজাইক করা। কিন্তু ইমাম সাহেবের রুমের ফ্লোরের কথা আর নাই বললাম।
এভাবেই আটহাজার টাকার বেতনে শেষ হলো ইমাম সাহেবের জীবন।

#মসজিদ
===============================
পারপিতা ফাইহা নামের একটা মেয়ে গতকাল আত্নহত্যা করেছে। হলিক্রস স্কুলে ক্লাস নাইনের ছাত্রী ছিল সে।
মেয়েটি ক্লাসের সি শাখার ফার্স্ট গার্ল ছিলেন। স্বভাবতই হলিক্রসের মত স্কুলে ক্লাসের ফার্স্ট কেউ কারচুপি করে বা কোন ব্যক্তি বিশেষের বদান্যতায় হয়না।
মেয়েটি অসম্ভব মেধাবী ছিল নিশ্চয়ই। কিন্তু ক্লাসের প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় উচ্চতর গনিতে ফেল করে পারপিতা।
ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল কোনো কারণে কম নম্বর পেতে পারে, কিন্তু ফেল করা অনেকটা অস্বাভাবিক। তাও আবার একবার না, পরপর দুইবার। হলিক্রসের মত স্কুলে ক্লাসে যে মেয়ে ফার্স্ট হন, সে হঠাৎ পরপর দুইবার একই সাবজেক্টে ফেল করবেন এটা বিশ্বাসযোগ্য না। যদি বলেন মেয়েটো বখে গেছে, তাও ফেল করার কথা না, অন্তত পাশ নম্বর তোলার কথা।

মেয়েটির সহপাঠীরা বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন। সি ও ডি শাখায় উচ্চতর গণিতের ক্লাস নেন যে শিক্ষক, যেসব ছাত্রী তার কাছে প্রাইভেট পড়েন না, তাদের ফেল করিয়ে দেন। এ বছর প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতে সি ও ডি শাখার ১০২ জনের মধ্যে ৩৫ জনকে ফেল করানো হয়। দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় ফেল করানো হয়েছে ৫৫ জনকে।

জানা গেছে, পর পর একই বিষয়ে দুই বার ফেল করায় স্কুলের অধ্যক্ষ বৃহস্পতিবার পারপিতার অভিভাবককে দেখা করার নির্দেশ দেন। এ খবর পেয়ে সোমবার থেকে আতঙ্কে ছিল পারপিতা। সে বাবা-মাকে বিষয়টি বলতেও পারেনি। মঙ্গলবার সহপাঠীদের সঙ্গে আলাপ করে। কিন্তু উপায় বের করতে পারেনি।

গতকাল স্কুল থেকে ফিরে দরজার সামনে ব্যাগ রেখে স্কুল ড্রেস গায়েই ১২ তলা ভবনের ছাদে ওঠে। সেখান থেকে লাফ দিয়ে আত্নহত্যা করে।
এটা কি আত্নহত্যা নাকি খুন..

সব স্কুলেই এমন শিক্ষক রয়েছে। কিন্তু সব শিক্ষার্থী এই নির্যাতন মেনে নিতে পারেনা। বিশেষ করে শহুরে প্রজন্ম এমন অপমান-অপদস্থে অভ্যস্ত না। খেলাধুলা নেই, আড্ডা নেই, বন্ধু নেই। চার দেয়ালে বন্দি জীবন। আমাদের মাথায় এমন অপমান ঘুরপাক খায়। 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url