Ek Ful Car Mali | এক ফুল চার মালি | Bangla Comedy Natok 2017 | Ft Akhomo...

Ek Ful Car Mali | এক ফুল চার মালি | Bangla Comedy Natok 2017 | Ft Akhomo...

মৃদু হাওয়া বইছে।শীতল আমেজে পরিবেশটাও যেন তরতাজা হয়ে উঠেছে।আধার নেমেছে তবে আকাশে কোনো তারা নেই তবুও যেন আকাশ টা ঝলমলে হয়ে আছে।এমন মনোমুগ্ধকর আবহাওয়ায় চুল উড়োতে বেশ লাগছে রিমির।গত ২৪ ঘন্টার সব ক্লান্তি ভুলে প্রাণ ভরে শ্বাস নিচ্ছে ও।কিন্তু কে জানে ওর এই শান্তি ক্ষনস্থায়ী?
-তুমি বেলকনিতে কি করছো এতো রাতে?জ্বর একটু কমেছে কি কেয়ারলেস হয়ে যাবে!
পেছনে তাকাতেই রিমি আহসানকে দেখতে পায়।আহসানকে দেখে ওর এতোক্ষণে জমানো সব আবেগ হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।রিমি বলে,আপনি কখন এলেন?
-মাত্র।রাত তো ১টা প্রায়,ঘুমাওনি কেন?তোমার শরীর ভালো নেই জানো না!
রিমি হালকা হেসে বলে,ভালো আছি আমি।আপনি যেই মেডিসিনটা দিয়েছিলেন,ওটা নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই তো জ্বর চলে গেল।আর তো আসেনি!মনে হচ্ছে আসবেও না।আপনি চিন্তা করবেন না।আমার জন্য আপনাকে বিপদে পড়তে হবে না।
-আর কি বিপদে ফেলবেন আমায়!যতটা ফেলার তো ফেলেই দিয়েছেন।এখন শুধু কাটা গায়ে নুনের ছিটা দিন বসে বসে।
-আমি কি করেছি বলুন তো?আপনার বাবা আর স্রুতির বাবার সম্মান রক্ষার্থে আপনাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছি এটা আমার দোষ!নাকি আমি আপনাদের মতো বিত্তশালী পরিবারে থেকে বিলং করিনি,এটা আমার দোষ!কোনটা বলুন?
-আপনি স্রুতির কথাটা আগে থেকে কেন বলেননি যে ওর আফেয়ার আছে?আপনি যদি আগে থেকে বলে দিতেন তাহলে তো এতো কিছু হতো না।না হতো বিয়ের আয়োজন,বিয়ের দিন না পালাতো স্রুতি আর আপনার আর আমার বিয়েও হতো না।আমি আগেই বিয়ে cancel করে দিতাম।তো এই সব কিছুর মূলে আপনিই আছেন।আপনি সব কিছু প্লান করে করেছেন,যাতে আমার মতো বড়লোকের ছেলেকে বিয়ে করতে পারেন।
-ওই ঘুরে ফিরে এক কথা!আপনি বড়লোক আর আমি কাঙালি তাইতো?এতই যখন সমস্যা আমাকে নিয়ে,তাহলে কালই তালাক দিয়ে দিন আমায়।নিয়ে আসুন গিয়ে তালাকনামা।গত রাত থেকে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি আপনার এইসব অপমানজনক বিদ্বেষপূর্ণ কথাবার্তা শুনতে শুনতে।আমি মানুষ হ্যাঁ!আমার বাবা মা তুলেও বলেছেন আপনি।গরীব বলে কি রাস্তার কুকুরের মতো আচরণ করবেন?না কালই ডিভোর্স দিয়ে মুক্ত হন আপনি।কথা গুলো বলে ওরনা দিয়ে চোখের পানি মুছে নিলো।
-হুম দেব।খুব শীঘ্রই দেব।কিন্তু এখন নয়,বাপি বলেছে কিছুদিন যাক তারপর।
-ওহ,বাবা ছেলের দেখি আগে থেকেই সব প্লান করা।এসব তাহলে আপনাদের কার্সাজি।আর ব্লেম আসলো আমার ঘাড়ে!বাহ।চমৎকার।
-যা হচ্ছে সব তোমার জন্যই।তুমি সব কিছু বলে দিলে এতো সব করতেই হতো না।আর যা ইচ্ছে ভাবো হু কেয়ারস?এখন রাত হয়েছে গিয়ে শুয়ে পড়ো।
-শুচ্ছি আপনি যান।
-কোথায় শোবে?আজকেও এই বারান্দায়?
রিমি রাগি ভাব করে বলে,হুম।তাছাড়া আর কি আছে আমার কপালে!
-এখানে শুয়ে আবার জ্বর বাধাবে।তারপর আমাকে ঘুমের বারোটা বাজিয়ে তোমার সেবায় লেগে যেতে হবে।সারাদিন কাজ করি বাড়িতেও কি শান্তি পাবোনা?no ways..তুমি ভেতরে গিয়ে শোও।
-না,আপনি যেভাবে অপমান করে বিছানা থেকে নামিয়ে দিয়েছিলেনন তা দেখে আমার আর ইচ্ছে নেই।
-বিছানায় কে শুতে বলেছে?তুমি সোফায় শুবে।
-নাহ!ওতো সুখ আমার সইবে না।আমি তো কাঙালি তাই এউ বারান্দার মাটিই যথেষ্ট আমার জন্য।(কান্নাজড়িত গলায়)
-আপনি যাবেন নাকি আপনাকে এখনি আপনার বাবার বাড়ি দিয়ে আসবো?
-বাবা তো রেগে আছে আমার উপর।তাছাড়া আমরা তো কাঙালি।আমাদের সোসাইটিও তাহলে কাঙালি। সো এখন আমাকে বাবার বাসায় দিয়ে আসলে সেখানকার মানুষেরা নানান কথা বলবে আমাকে নিয়ে।তাই আর যাই করুন না কেন এটা করবেন না প্লিজ(হাত জোড় করে)
-করবো না যদি আমার কথা মতো কাজ করো তো।
রিমি কিছু না বলে বারান্দায় পাতা বালিশ চাদর নিয়ে সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়ে।আহসান ও ড্রেস বদলে বিছানায় গা এলিয়ে কিছুক্ষণ ফোন ঘাটে।তারপর ঘুম ঘুম ভাব আসলে লাইট অফ করে শুয়ে পরে।
ওদিকে ঘুম নেই রিমির চোখে।অনবরত কেঁদে চলেছে চাদরের নিচে মুখ লুকিয়ে।মানুষ কতটা নির্দয় হতে পারে তা ওর জানা ছিলো না।আহসানের মতো লোকের পাল্লায় পড়ে জানতে পারলো।কি জানি আর কতো কি সইতে হবে ওকে?পরস্পরের মধ্যে এতটা দূরত্ব ভেদ করে এক চিলতে ভালবাসার রোদ ওদের মাঝে কখনো কি দেখা দেবে কোনো এক প্রহরে!

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url