Gusti Gusti Kila Kili (গুষ্ঠি গুষ্ঠি কিলাকিলি) | Full
Gusti Gusti Kila Kili (গুষ্ঠি গুষ্ঠি কিলাকিলি) | Full
-- হাউ ফানি তাই না ,, আমার মতো নাকি চিপ ক্লাস মেয়েকে ভালোবাসা যায় না,, থার্ড ক্লাস নাকি আমার বিহেব।। তাহলে আপনার রুচিটা থার্ড ক্লাস হঠাৎ,লো কেন??একটা কাজ করুন আগে পাবনা গিয়ে,, নিজের মাথাটা ঠিক করুন !! করবেন তো ?? (জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমি)
-- আমার রুচি আবার থার্ড ক্লাস হবে কেন,,আমি কি তোমাকে প্রোপজ করেছি নাকি !!( ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে আবির)
-- তাহলে এতোক্ষণ যে বললেন!!
-- এতোক্ষণ যে কি ?? প্রোপজ করছিলাম বুঝি,, (বাঁকা হেসে আবির) কিছু না,, তুমি জানো কেন আমার রুমে এসেছিলে ,, ও হ্যা মনে পড়ছে গান শুনতে।। বস আমি গান গাইছি ,,শুনে রুমে গিয়ে ঘুমাও।।
বলেই ঠাস করে দোলনার উপর বসে পড়ল।।
""আমি জানি আবির ,,আপনি একটু হলেও আমাকে চান । আপনার বলা কথাগুলো মিথ্যা হলেও আপনার চোখে আমার জন্য দেখা ভালোবাসা,, আমাকে চাওয়ার যে আক্ষাঙ্কা আমি দেখেছি তা মিথ্যা হতে পারে না।। আমার কেন জানি ,, বারবার আবিরের সাথে আমার সেই মিষ্টি প্রেমিকের অনেক মিল খুঁজে পাই ।। সেদিন পার্কে আমার হাত থেকে হারিয়ে যাওয়া বেসলেট টা নাকি মিষ্টি প্রেমিকের কাছে কিন্তু বেসলেটটা যে আমি আবিরের ড্রয়ারে দেখেছিলাম।।এই রহস্য উদঘাটন যে আমাকে করতেই হবে,,যে করেই হক। আমি যেনেই ছাড়বো ।। আবিরই মিষ্টি প্রেমিক নাকি অন্যকেউ।।"" এই রকম আকাশ পাতাল ভাবনায় আমি ।।তখনই আবির আমার হাতটা ধরে টেনে এনে দোলনায় তার পাশে বসিয়ে দিলেন।। আমি একবার তার দিকে তাকিয়ে উঠে যেতে যেতে বললাম..
-- আমার প্রচুর ঘুম পেয়েছে,,আমি ঘূমাবো !!!
-- আমি কি তোমাকে ঘুমাতে বারন করেছি নাকি ,,নাও এবার ঘুমাও !!( আবির আবার আমাকে দোলনায় তার পাশে বসিয়ে আমার মাথাটা তার কাঁধে রেখে বললেন)
আমি ও চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।।
তারপর তিনি গিটার টা হাতে নিয়ে গাইতে শুরু করলেন.....
জেগে আছি ঘুম জড়ানো রাতে তোর
জেগে আছি স্বপ্ন হয়ে সাথে তোর.....
ইচ্ছে করে তোর শহরে থাকতে সন্ধ্যে সকাল
ইচ্ছে করে জ্বালতে আলো ,,জ্বালাতে রং মশাল
জেগে আছি ঘুম জড়ানো রাতে তোর
জেগে আছি স্বপ্ন হয়ে সাথে তোর
এইটুকু শুনতেই আমার চোখে ঘুম এসে ধরা দিলো।। আমি ঘুমের ঘোরে পড়ে যেতে নিলে আবির আমার কোমর শক্ত করে ধরে ,, গিটার টা পাশে রেখে।। আমার কপালে ঠোঁট দুটি ছুয়িয়ে দিয়ে ,, আমাকে তার বুকে জড়িয়ে ধরলো ।।।
ঘুমের মধ্যে মনে হচ্ছে কেউ আমাকে পর্যবেক্ষণ করছে।। ইভেন্ট ধরেও ডাকছে ।। কিন্তু আমার ঘুমের ঘোর এখনো কাটে নি,,তাই অন্য পাশ ফিরে শুয়ে পড়লাম।। এবার আমার শরীরে হাত দিয়ে ডাকছে।। তবুও আমি কোন রেসপন্স করলাম না,, পাশে থাকা কোল বালিশ টাকে চেপে ধরে তাতে মুখ গুজে শুয়ে পড়লাম।। হঠাৎ মনে হলো কেউ আমার শার্ট টাকে একটু উঁচু করে হাত দিয়ে আমার পেটে স্লাইড করছে। আর আমার গলায় তার মুখ গুজে নাক দিয়ে ,,,আমার গলায় স্লাইড করছে।। আমি কোল বালিশ টাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে উঠে বসে পড়লাম।। আমাকে উঠে বসতে দেখে কোল বালিশ টাও উঠলো ।। আমি পাশে তাকিয়ে পুরো শকট খেলাম,,আসলে ওটা কোল বালিশ ছিলো না,, আবির নিজেই ছিল।। শেষে কিনা আবিরকে জরিয়ে ধরলাম।।আর আবিরই বা আমার রুমে এলো কি করে ।। চারপাশে চোখ বুলিয়ে দেখতে পেলাম,,এটা আমার রুম না আবিরের।। এতোক্ষণে আমার মনে পড়লো ,,আমি কালকে এই বাড়িতে এসেছিলাম।। আর দোলনায় আবিরের পাশে ঘুমিয়ে ছিলাম।। একবার আবিরের দিকে তাকাতেই দেখতে পেলাম,, সে নেশা ভরা দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,, আর মুখে তার কেমন যেনো বিশ্বজয় করা হাসি ।।
-- তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে এসো ,, ব্রেক ফাস্ট বানিয়েছি ।। তারপর আমাদের ভার্সিটিতে যেতে হবে।। পড়ে আবার গ্ৰামে ফিরতে হবে।।(রুম থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে আবির)
-- আমি শাওয়াল না নিয়ে ব্রেক আপ করি না।। তাই আমি বাড়িতে গিয়ে শাওয়াল নিয়ে না হয় ক্যান্টিনে ব্রেক ফাস্ট করে নিবো ,।। (আমি)
কোন কথা না বলে আবির তার ড্রয়ার থেকে একটা শার্ট আর জিন্স বের আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো...
-- এখন এটা পরে নিয়ে ব্রেক ফাস্ট করে নাও ,, ভার্সিটিতে যাওয়ার পথে নাহয় তোমাদের বাড়িতে গিয়ে নিজের ড্রেস পরে নিবে !!(আবির)
-- কিন্তু....
-- কোনো কিন্তু না,,যাও ।।
বলেই আবির নিচে চলে গেল আমিও ড্রেসটা নিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়াল নিয়ে তার দেওয়া ড্রেসটা পরে বেরিয়ে এলাম।। তারপর ব্রেক ফাস্ট করে আমাদের বাড়িতে গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে ভার্সিটির উদ্দেশ্য বেরিয়ে এলাম।। আবির আমাকে ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে কোথাও একটা চলে গেলো ।। যাওয়ার আগে বলে গেছে আধ ঘন্টার মধ্যে আবার ফিরে আসবে ।।আমিও ভার্সিটির ভেতরে ঢুকলাম।।
নোটিশ বোর্ড থেকে করে দেখতে পেলাম আমি টপার হয়েছি ।। কিন্তু মুখের কোনে একটুও হাসি নেই কারন ,, আমার পয়েন্ট একটু কম ।। কিছুই ভালো লাগছে না,,তাই আরেকটু হেঁটে বট গাছের নিচে বসলাম।। এর মধ্যেই আমার ফেন্ডরা এসে আমার কাঁধে হাত রাখতেই একবার ওদের দিকে তাকিয়ে নিচের দিকে তাকালাম...
-- হানি এমন করছিস কেন?? দেখ তুই টপার হয়েছিস ,,তাহলে মন খারাপ কেন !!( আহাদ)
-- আমি টপার হয়েছি ঠিকই ।। কিন্তু ভালো মার্কস পাই নি,!!( মন খারাপ করে আমি)
-- কে বলেছে তুই,,ভালো মার্কস পাস নি ।।(তাসফি)
-- আমি নোটিশ বোর্ড দেখেছি !!৩.৮৪ এসেছে !!( কাঁদতে কাঁদতে বললাম আমি)
-- এতেই তুই কাঁদছিল,,মাএ ১৬ পয়েন্ট কম পেয়েছিস তুই।। আর আমরা টেনে টুনে ৩ নে আটকে আছি ।।( ঋতু)
-- চুপ কর তো ভালো লাগছে না,,। (আমি)
তারপর সবাই একসাথে বসে ছিলাম।। কিন্তু আমাদের মাঝে শুধু বিরাজ করেছে নিরবতা।।
এখন রাত ২ টো বাজে।।গাড়ি ছুটে চলেছে তাই নিজের আপন গতিতে।। আর আমার পাশে বসে ড্রাইভ করছে আবির ।। আর বাহিরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে।।এই বৃষ্টির ঠান্ডায় আবিরের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছি আমি।। এক হাতে আবিরের দেওয়া ফোনটা আরেক হাতে আবিরকে ধরে আছি।। তখন আবির আমাকে রেখে ফোন কিনতে গিয়েছিলো ।। কালকে রাতে আমার ফোনটা ভেঙেছিলো তাই ।। আমি তো গাড়িতে বসে বসে সারাক্ষণ কেঁদেছিলাম।। আবির আমাকে থামানোর চেষ্টা করে যখন বৃথা হয়েছিলো তখন আমার হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়েছিলো ।। কিন্তু তবুও আমার কান্না কিছুতেই থামছিলো না,, তখন আবির আমাকে তার বুকে নিয়ে এক হাত দিয়ে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।। তখনই আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।।
হঠাৎ বাজ পড়ার শব্দ পেয়ে আমি ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠি।। তখন বৃষ্টির আরো বেড়ে চলেছে।। সাথে সাথে মেঘের গর্জন আর বাজ পড়া বেরেই চলেছে।।আমি তো ভয়ে আবিরকে শক্ত করে ধরে আছি।।পাড়লে আবিরের মধ্যে ই আমি ঢুকে যাই।।আবির আমাকে ধরে গাড়ি ড্রাইভ করছে।। কিন্তু বাহিরে বৃষ্টির বেগ বেশি হওয়ার কারনে কিছুই দেখা যাচ্ছে না।। আবির আস্তে করে দরজা খুলে বললো....
-- গাড়ি থেকে নামো ,,এই সময় ইলেকট্রক জিনিসের কাছে থাকা কিছুতেই সেইভ নয়।। ড্রাইভ করা অবস্থায় থাকলে একটু সেভ হতো ।। কিন্তু এখন একটুও না।।
-- না আমি নামবো না,,আমার ভয় করছে ।। আমি গাড়িতেই থাকবো !!(আমি)
-- লাইক সিরিয়াসলি,তুমি ভয়ও পাও ।। এখন নামো !!
-- আমার বৃষ্টি অনেক পছন্দ।। কিন্তু বাজ বা বিদ্যুৎ চমকালে খুব ভয় করে ।।তাই আমি নামবো না।।
-- না নামলে নেই ।। বসে বসে বিস্কিট খাও।।আমি গেলাম।।
বলেই আমি গাড়ি থেকে নেমে সোজা একটা গাছের নিচে গিয়ে দাঁড়ালো ।। এখন তো আমার আরো ভয় করছে,,তাই আমিও গাড়ি থেকে নেমে সোজা আবিরের কাছে গিয়ে গাছের নিচে দাড়ালাম।। বৃষ্টি ফোঁটা গাছের পাতাকে বেদ করে আমাদের কে ভিজিয়ে দিচ্ছে।। সাথে ঠান্ডা হাওয়াতে আমি কাপাকাপি শুরু করে দিয়েছি।। আবির কি করবে বুঝতে পারছে না।। কিছুটা দূরে আমাদের দৃষ্টি যেতেই সেখানে একটা টিন দেওয়া চাল দেখতে পেলাম।। চারপাশে ফাঁকা কিন্তু উপরে টিনের চাল।। আবির আমার হাত ধরে সেদিকে পা বাড়ালো ।। কিছুদূর যেতেই পেছন থেকে বিকট আওয়াজ পেয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখি,, আমাদের গাড়িটা জ্বলছে।।বাজ পড়ে সাথে সাথে আগুন ধরে গেছে;! আমি তা দেখে ভয়ে মরি মরি অবস্থা।।।