The Perfect Man | Apurba, Sarika | Telefilm | Maasranga TV Official | 2017
The Perfect Man | Apurba, Sarika | Telefilm | Maasranga TV Official | 2017
রিংকুর কথা অনুযায়ি সেই জায়গাতে যাওয়া হয়। আর আনিসকে সেখানেই পাওয়া যায়।
তারপরে ওকেও এখানে নিয়ে আসা হয়।
সেই রুমে একই সাথে বসে আছে রিংকু আর আনিস দুজনেই। কিন্ত আমি আর আলিসা দুজনেই আনিসকে দেখে প্রথমে চঁমকে উঠি। আরে এটা তো সেই লোকটা যে কবরস্থানে আমাদেরকে মিথ্যা বলে পালিয়েছিলো সেদিন।
দুজনের চেহারাতেই ভয়ের ছাপ স্পষ্ট।
আলিসা গিয়েই আনিস কিছু বলবার আগে কষিয়ে দিলো এক চড়। আনিস বোকার মত চেয়ে রইলো শুধু আলিসার দিকে।
তারপরে আলিসা বললো,
"তুই তাহলে আনিস? যে সেদিন খোরখোদক পরিচয় দিয়ে পালিয়েছিলি?"
আনিস গাল ডলতে থাকলো শুধু। কিছু বললো না।
আলিসা আবারও বললো,
"এবার বল কিসের এতো রাগ ছিলো তোদের শামীমের মা আর বোনের উপরে? যে তাদেরকে খুন করেছিস? বল"
"ম্য..ম্যাডাম আমাদের কোনো রাগ ছিলো না, আর আমরা তো ওদেরকে চিনতামও না ঠিক মত"
"কোনো রাগ ছিলো না, চিনতিও না তাহলে খুন করেছিস কেন?"
আনিস আলিসার প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো না এবারে।
আলিসা আবারও বললো,
"তাড়াতাড়ি বলবি নাকি আরো দু চারটা দেবো?"
"সাখাওয়াতের কথায় ম্যাডাম। ওই খুনগুলো করতে বলছিলো"
"এই সাখাওয়াতটা আবার কে?"
"ওর বাড়ি এই গ্রামেই। ওই বলেছিলো খুনগুলো করতে আর আমাদেরকে টাকাও দিয়েছিলো"
"সাখাওয়াতের কিসের রাগ ছিলো ওদের উপরে?"
"সেসব তো আমি জানি না ম্যাডাম। ওর সাথে আমার পরিচয়টা ছিলো অনেক আগে থেকেই। আর ও যখন কাজটা করতে বললো আমি না করতে পারিনি"
"আর স্মিগ্ধাকে ধর্ষণ করেছিলো কে?"
প্রশ্নটা শুনেই রিংকু আর আনিস দুজন দুজনের মুখের দিকে একবার তাকালো।
আলিসা আবারও আনিসকে কষিয়ে এক থাপ্পর দিয়ে বললো,
"বল কে ওকে ধর্ষণ করেছিলো?"
আনিস এবার আঙ্গুল দিয়ে রিংকুকে দেখিয়ে দিলো।
আলিসা বললো,
"আর শামীম? ওকে কেন কিডন্যাপ করেছিলি? আর ও এখন কোথায়?"
"আমাদেরকে বলা হয়েছিলো সেজন্য। আর ওকে আমরা মেরে পুকুরে ফেলে দিয়েছিলাম"
ওর কথাটা শুনেই আমি একটা বড় রকমের ধাক্কা খেলাম।
তবে ঐ লাশটা শামীমেরই ছিলো!
আমি বাকরূদ্ধের মতো শুধু চেয়ে রইলাম ওদের দিকে।
আলিসা উঠে দাঁড়িয়ে পুলিশ সদস্যকে বললো,
"এদের ভালো করে সেবা যত্র করো আর সাখাওয়াতকে নিয়ে এসো যত দ্রুত সম্ভব"
পুলিশ সদস্যটি বললো,
"জ্বি ম্যাডাম আপনি কিছু ভাববেন না"
★★★
আমি চুপচাপ বসে রয়েছি কোনো কথা বলছি না।
প্রথম কথাটা আলিসা নিজেই বললো,
"দেখুন এখন আর এসব ভেবে কোনো লাভ নেই। শুধু কষ্টই পাবেন"
"আমি এখনো মেনে নিতে পারছি না ওরা শামীমকেও মেরে ফেলেছে"
"কিন্ত সত্য এটাই যা আপনাকে মেনে নিতেই হবে। শামীম আর আমাদের মাঝে নেই"
আমি আলিসার কথা শুনে শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম। কিছু বললাম না।
আলিসা আমাকে রেখে চলে গেল।
আমি এসে ফ্রেস হয়ে বিছানায় বসতেই হঠাৎ দরজাতে কেউ টোকা দিলো।
এসময় আবার কে এলো!
উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিতেই দেখি অনন্যা দাঁড়িয়ে। আমি জানতাম ও যেটা বলে সেটা করবেই। একদম এখানেই চলে এসেছে।
আমাকে বোকার মত তাঁকিয়ে থাকতে দেখে ও বললো,
"ভেতরে আসতে বলবি না? নাকি বাহিরেই দাড় করিয়ে রাখবি?"
"অ্য..হ্যাঁ আয় ভেতরে আয়"
অনন্যা রুমের ভেতরে ঢুকে চেয়ারে গিয়ে বসলো। আর আমি বিছানাতে। খানিকক্ষণ দুজনেই চুপচাপ রইলাম কেউ কোনো কথা বললাম না।
তারপরে আমি বললাম,
"তুই এখানে এলি কেন হঠাৎ?"
"কেন আমি কি আসতে পারি না?"
"সেটা বলছি না"
"মন চেয়েছে তাই চলে এসেছি, কেন আমি আসাতে কি কোনো সমস্যা হয়েছে তোর?"
"না মানে কিসের আবার সমস্যা হবে? কোনো সমস্যা নেই"
আচ্ছা ঠিক আছে। তা ঐ মেয়েটি কে?"
আমি এবার অনন্যার দিকে তাঁকিয়ে বললাম,
"কোন মেয়েটি?"
"কেন যার সাথে গাড়িতে বসেছিলি? কথা বলছিলি সে?"
"ওহ, ও হচ্ছে আলিসা। আগে আমার লিখা পড়তো সেখান থেকেই পরিচয়"
অনন্যা আমার কথা শুনে একদৃষ্টে চেয়ে আছে আমার দিকে।
আমি বললাম,
"আরে ওভাবে কী দেখছিস বলতো? সত্য এটাই"
"ঠিক আছে কতটুকু সত্য আর কতটুকু মিথ্যা তা তো আমি জেনে নেবোই"
আমি আর কিছু বললাম না।
চুপ করে রইলাম। এই মেয়ে সব কিছুতেই একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে!
★★★
"ম্যাডাম সাখাওয়াতকে পাওয়া যায়নি"
"পাওয়া যায়নি মানে?"
"ওর বাবা মা বলছে সাখাওয়াত নাকি কালকে রাত থেকে বাড়ি নেই। কোথায় গিয়েছে তারা জানেন না"
আমি বললাম,
"ও হয়তো জানতে পেরেছে যে এরা ধরা পড়েছে আর তাই পালিয়েছে নিজে ধরা পড়বার ভয়ে"
আলিসা বললো,
"পালিয়ে আর যাবে কোথায় ঠিকই খুজে বের করবো। আচ্ছা তোমাকে ওর একটা খাতা আনতে বলেছিলাম এনেছো?"
"জ্বি ম্যাডাম এনেছি"
বলেই সে একটা খাতা আলিসাকে দিলো। এরপরে আলিসা সেই চিঠি আর সাখাওয়াতের হেন্ডরাইটিং দেখতে লাগলো।
আমিও দেখলাম। তারপরে বললাম,
"মনে তো হচ্ছে দুটো হ্যান্ডরাইটিং এক নয়"
"হ্যাঁ আমারও তো সেটাই মনে হচ্ছে। আচ্ছা ওকে ধরা গেলেই এই বিষয়টারও সমাধান হবে"
আমিও হ্যাঁসূচক মাথা নাড়লাম।
★★★
আলিসার কেবিনে বসে আছি আমি আর আলিসা।
এমন সময় সেই পুলিশ সদস্যটি রুমে এলো। আলিসা তার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাঁকাতেই সে বললো,
"ম্যাডাম একটা বিষয় আপনাকে বলবার জন্য এলাম"
"কী ব্যাপার বলো"
"সাখাওয়াতের ফোনের কল ডিটেল্সটা আমি চেয়ে পাঠিয়েছিলাম ফোন কম্পানির কাছে"
"তা সেটা পেয়েছো?"
"জ্বী ম্যাডাম পেয়েছি। আর সেটিই দেখছিলাম আমি। কিন্ত..."
"কি হলো থামলে কেন? কিন্ত কী?"
"কিন্ত ম্যাডাম আমি দেখলাম সাখাওয়াত একটা নম্বরের সাথে অনেকবার কথা বলেছে। তা সেই নম্বরটা কার সেটি জানতে গিয়ে আমি রীতিমতো অবাক হয়ে গিয়েছি"
"নম্বরটি কার?"
পুলিশ সদস্যটি এবার আমাদেরকে যে নামটা বললো তা শুনে আমি আর আলিসা দুজনেই চঁমকে ওঠলাম।
আলিসা আমার দিকে তাঁকিয়ে বললো,
"কি আশ্চর্য! আমরা তো এটা একবারের জন্যও ভেবে দেখিনি"
ঠিক এমন সময়ই আলিসার ফোনে কল এলো।
আলিসা কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে কেউ যেন কিছু বললো।
যা শুনে আলিসার মুখটা হাসি হাসি দেখালো। কল কেঁটে আলিসা বললো,
"একটা গুড নিউজ আছে"
"কী গুড নিউজ?"
"সাখাওয়াত ট্রেনে করে পালাচ্ছিলো কিন্ত ওকে ধরে ফেলেছে পুলিশ"
"তাহলে তো এবার ওকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হয়"
"হ্যাঁ তা তো অবশ্যই"