Kolsi l Mamunur Rashid, Sporshia l Natok l Maasranga TV Official | 2017

Kolsi l Mamunur Rashid, Sporshia l Natok l Maasranga TV Official | 2017

সামির গানের সুরে তাল মিলিয়ে জলপড়ীরা নাচতে লাগলো,, পানিতে সাতার কাটতে লাগলো,, ঢেউ তুলে আনন্দ উপভোগ করতেছে জলপড়ীরা,,
একটা পিশাচী মাছ খাওয়ার জন্য এই বিলের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতেছিলো,, ও দেখলো একটা ছেলে বিলের মাঝে গান গাইতেছে আর জলপড়ীরা নাচতেচে,, পিশাচীনি একটু অবাক হলো,, তারপর ভাবলো হয়তো এই ছেলের কাছে ভালো মাছ পাওয়া যাবে,, তাই ও অপেক্ষা করতে লাগলো,,
ফুজি কেমন একটা অদ্ভুত গন্ধ পেলো,, কিন্তু চারপাশে তাকিয়ে কিছু দেখতে পেলো না,, তারপর সামির গানের সুরে ভুলে গেলো,,
আর পিশাচিনী লুকিয়ে আছে অন্ধকারে,,,
এক জলপড়ী এসে একটা কালো শাপলা ফুল দিলো সামি কে,, বললো এই হলো কালো শাপলা এটা ১০০ বছরে একবার ই ফোটে,,, এটা মহা মুল্যবান হলো ত্রান্তিকদের কাছে,,, এই শাপলা দিয়ে বিভিন্ন রকমের ওষুধ তৈরী হয়,, সেটা খুবই বিরল আর কার্যকরী,,
ফুজি কালো শাপলা টা দেখে বললো,,, মাঝি এই শাপলার বীজ গুলো বিক্রি করেও তুমি ভালো টাকা আয় করতে পারবা
তেমন দাম ন হলেও,, তোমার কিছু টাকা আসবে,,
সামি শাপলা টা হাতে নিয়ে দেখলো,, এই শাপলা টা অন্য শাপলার চাইতে একটু আলাদা আর একটু শক্ত,, তবে এই শাপলা থেকে আতরের একটা সুবাস বের হচ্ছে,, ভাবতেই বুঝা যায় শাপলা টা ভিন্ন রকম,,
ফুজিঃ মাঝি,, আজকে যদি প্রতিদিনের মতো বড় বড় মাছ নিয়ে যাও,, তাহলে অন্য জেলেরা তোমাকে সন্দেহ করবে৷ আর তোমার পিছু নিয়ে এই বিলে আসবে মাছ ধরতে,, তখন সমস্যা হয়ে যাবে আর তোমার সংগে দেখা করাও কষ্ট হয়ে যাবে,, তাই তুমি আজকে ছোট মাছ নাও,, আর ভালো টাকা আয় করার জন্য ওই কালো শাপলা টা বিক্রি করে দিও,,
সামিঃ ঠিক আছে,, তুমি যেমন টা কইবা,, তাই হইবে
ফুজিঃ জাল ফেলো মাঝি
সামি জাল ফেললো,, আজ অল্প কিছু ছোট ছোট পুটি টেংরা কই খলিসা উঠলো,,
সামি হাসিমুখে তাই নিলো,,, কারন জানে ফুজি ওর ভালোর জন্যই এসব করেছে,,
ফুজি বিদায় দিলো সামিকে,,,
এদিকে পিশাচিনী মাছ খাওয়ার জন্য ব্যকুল হয়ে রইলো,,
সামি বিল দিয়ে যাচ্ছে নৌকা বেয়ে,,আর পিশাচিনী সেই বিলের পাশে দিয়ে ওকে অনুসরন করে যাচ্ছে,,
একটু পরে সামির নৌকা ঘাটে এসে থামলো,, পিশাচিনী মানুষের রূপ নিয়ে আসলো,,
কালো একটা শাড়ি পরা,, চুল গুলো ছারানো,, চোখের মনি গুলোও কালো,,,
সামির সামনে এসে বললো,, ভাই আমি খুব বিপদে পরছি,, আমার মা মারা গেছে,, আপনি যদি একটু বিলটা পার করে দিতেন,, তাহলে আমি মরা মা টারে দেখতে পারতাম
এতো রাতে,,এই বিলের মাঝে একটা মেয়ে দারিয়ে আছে,, এটা একটু সামিকে ভাবনায় ফেললো,,
সামিঃ আপনি একা একা এতো রাতে এইহেনে আইলেন কেমনে?
পিশাচিনীঃ কি কমু,, আমি একজনের বাড়িতে কাম করি,, একটু আগে খবর আইছে,, আমার মা মরছে,, তাই আমি ঘরে থাকতে পারলাম না
সামিঃ তয় মাইয়া মানুষ এতো রাইতে একা একা বাহির আসা ঠিক হয় নাই
পিশাচিনীঃ মা মরার কথা শুইনা থাকতে পারলাম না
সামি ভাবলো,, মেয়েটার মা মারা গেছে,, এই বিপদে একটু সাহায্য করলে কি হবে,,,
সামিঃ উঠেন নাওয়ে,, বসেন
পিশাচিনীঃ কি কইয়া আপনেরে ধন্যবাদ দিমু ভাই,,
পিশাচিনী উঠলো,,
নৌকাটা অনেক ভারি হয়ে গেলো,, মনে হলো পাচজনের ওজন একাই এই মেয়েটার শরীরে,,
সামি নৌকা ছারলো,, জিজ্ঞেস করলো কোনদিকে যাইবেন
পিশাচিনী হাত দিয়ে অনেক দূরের একটা রাস্তা দেখালো,,
সামি নৌকা চালাচ্ছে,, পিশাচিনী গভীর দৃষ্টিতে মাছের পালিতের দিকে তাকিয়ে আছে,,৷ তাজা মাছ গুলো পাতিলের পানিতে নরাচরা করার শব্দ আসছে,,
পিশাচিনীঃ পাতিলে কি পুডি মাছ নি?
সামিঃ হ,,আইজ বেশি মাছ পাইনি
পিশাচিনীঃ কতো দিন হইলো মাছ খাইনা,,,
আমারে এই মাছ গুলা দিবা?
সামিঃ এই গুলা আমি বেচার জন্য আনছি,,
পিশাচিনী গিয়ে মাছের পাতিলে হাত ঢুকিয়ে দিলো,,
সামি চেয়ে আছে,,
পিশাচিনী একটা টাকি মাছ বের করেই মুখে ঢুকিয়ে কাচা খাওয়া শুরু করলো,,
সামি ভুঝলো এটা তো সাধারণ মানুষে না,,
পিশাচিনীর আসল রুপ আসতে লাগলো,,
নোংরা,, ভয়ংকর আর পচা গন্ধ বের হতে লাগলো,,
সামি গিয়ে নৌকার বৈঠা দিয়ে দিলো এক আঘাত পিশাচিনীর কাধে,,
পিশাচিনী রাগে সামির দিকে বড় বড় চোখে তাকিয়ে বললো,,
পিশাচিনীঃ দেখ,, আমারে মাছ খাইতে দে,, নইলে তোরে এই পানিতে চুবাইয়া মারমু
সামিঃ তুই আমার নৌকা থেকে নামবি নাকি তোরে আবার মারমু
পিশাচিনীঃ তোর সাহস তো কম না
সামিঃ এখনো সময় আছে,, যা তুই,, পিশাচনী
পিশাচিনী উঠে দারিয়ে সামিকে ধরতে গেলো,, কিন্তু সামির কাছে থাকা জলপড়ী ফুজির দেওয়া তাবিজ থাকায় ওকে ছুতে পারলো না,,
তাই পিশাচিনী বসে আবার মাছ খাওয়া শুরু করলো,,
সামি বুঝলো ওকে এইভাবে তারানো যাবে না
সামি বিলের পানিতে হাত দিয়ে নারাচরা করে ফুজিকে ডাকলো,,
ফুজি এক মুহুর্তেই আরো কয়েকটা জলপড়ী নিয়ে নৌকাটা ঘিরে ফেললো,,,
পিশাচিনী এতোগুলো জলপড়ী দেখে ভয় পেয়ে গেলো,,
ফুজি কিছু না বলেই,, পিশাচিনীকে টান দিয়ে পানিতে নিয়ে আসলো,,
পিশাচিনী পানিতে পরে,, ফুজির লেজে দিলো একটা কামর,,
অন্য জলপড়ীরা পিশাচিনীর চুলে গুলো ধরে,, পিশাচিনীকে কামরাতে লাগলো,,
কিন্তু এটা হলো পিশাচিনীর সর্দারনী,, অনেক শক্তিশালী একটা পিশাচ,,
ফুজি কোনো রকম পিশাচিনীর কামর থেকে নিজেকে ছারিয়ে নিয়ে,, ওর সংগে পানির নিচেই যুদ্ধ করতে লাগলো,,,,
সামি উপরে থেকে শুধু দেখতে পেলো,, পানির ঢেউ গুলো বারতেছে,, নিচে হয়তো অনেক কিছু হচ্ছে,,
ফুজি আর ওর বান্ধবীরা পিশাচিনীর সংগে মারামারি করতেছে,, কিন্তু পিশাচিনীকে হারাতে পারতেছে না,,
পিশাচিনীর দাত গুলো খুব ধারলো আর হাত পায়ের নখ গুলোও ধারালো,,,
ওর কাছে গেলেই কামরে দেয় নয় নখ দিয়ে আচরে দিচ্ছে,,
এবার জলপড়ীরা পিশাচিনীকে ঘিরে ধরলো,,, ওরা পড়ীদের লোহার শূল বের করলো,,৷
পিশাচিনী ও আরো ভয়ংকর ভাবে আক্রমণ করলো,,,
জলপড়ীরা লোহার শূল নিয়ে সবাই চারপাশ থেকে আঘাত করে ঢুকিয়ে দিলো পিশাচিনীর শরীরে,,,
পিশাচিনী এইবার কাবু হয়ে গেলো,,
তারপর জলপড়ীরা পিশাচিনীকে আঘাত করে করে মেরে ফেললো,,,
একটু পরে পানি শান্ত হলো,,
ফুজি ভেসে উঠলো,, ওর সারা গায়ে রক্তের দাগ,, কামর আর আচরের দাগ,,,
অন্য জলপড়ীরাও আহত অবস্থায় ভেসে উঠলো,,
সামি ওদের দেখে ভয় পেয়ে গেলো,৷ এতো সবাই আহত,, তাহলে পিশাচিনী কি মরেছে?
সামি সবগুলো জলপড়ীদের নিয়ে বিলের কিনারে নিয়ে উঠালো,,,
সবাই মাটির ছোয়া পেয়ে মানুষ এর রুপ নিলো,, এই জোছনার আলোতে ওদের শরীর চকচকে করছে,,
সবাই উলঙ্গ হয়ে আছে,, কিন্তু এসব দেখার সময় নেই,, সামি কি করবে,, এই আহত জলপড়ীদের কিভাবে উদ্ধার করবে,, সেটা ভাবতে লাগলো,,
হটাৎ সামির মাথায় বুদ্ধি আসলো,, এই কালো শাপলাটা দিয়ে কিছু করা যায় নাকি,,
সামি দৌরে গিয়ে নৌকা থেকে কালো শাপলা নিয়ে আসলো,,
ভয়ে ভয়ে কি হয় না হয়,, সাত পাচ ভেবে আগে ফুজির শরীরের আঘাতের জায়গায় শাপলাটা ধরলো,,
দেখলো সংগে সংগে আঘাতের জায়গা টা শুকিয়ে ভালো হয়ে যাচ্ছে,,
সামি খুশি হলো আর সাহস পেলো,,
এই ভাবে সবগুলো জলপড়ীর আঘাতের জায়গায় কালো শাপলা টা ধরে ওদের সুস্থ করলো,
জলপড়ীরা চোখ মেলেই লজ্জা পেয়ে পানিতে ঝাপ দিতে থাকলো,,
ফুজিও সুস্থ হয়ে পানিতে ঝাপ দিলো,,,
সামি এবার শান্তি পেলো,, ও নৌকা নিয়ে চললো,,
ফুজি ওর পিছু পিছু আসলো,,

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url