Sera Kiptus | সেরা কিপ্টুস ‍| Atm Samsuzzaman | Mim | Bangla Comedy Natok

 

#গল্পঃ_স্ত্রীর_পরকীয়ার_পরিনতি #পর্বঃ_০১
 
গল্পটা বাস্তবের সাথে যথাযথ মিল রয়েছে।
লেখকঃ✍️সাহায্যকারী আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
পোস্ট ✍️ Tarak Rahman
গল্পটি শুরু করার আগে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
গল্পটির কিছু কথা কারো কাছে খারাপ লাগলে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন। আশা করছি সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে গল্পটি। আর হ্যা এই নামে হয়তো অনেক গল্প লিখা হয়েছে। গল্প না পড়ে বাজে মন্তব্য করবেন না।। গল্পটা পড়বেন তারপর আপনার মতামত জানাবেন৷ ধন্যবাদ সবাইকে......
বাসার সামনে নিজের আট বছরের মেয়েটাকে কাঁদতে দেখে আমার কলিজাটা কেঁপে উঠলো। কারন আমি আমার মেয়েকে কখনো কাঁদতে দেইনা। বলতে পারেন আমার মেয়ে আমার চোখের মনি। আমি তাড়াতাড়ি করে আমার মেয়ের কাছে গেলাম,আর বললাম........
আমিঃ নেহা মামনি তুমি কাঁদছো কেনো??
নেহা আমাকে দেখে আরো কান্না বাড়িয়ে দিলো। কান্না করতে করতে হিচকি দিতে লাগলো.....
আমিঃ কি হয়েছে মামনি আমাকে বলো। তোমার
আম্মু বুঝি তোমাকে বকা দিয়েছে?? 
 
নেহাঃ হুমমম??( খুব ভয়ে ভয়ে বললো)
আমিঃ নিশ্চয়ই তুমি তোমার আম্মুকে খুব বিরক্ত করেছো তাই বকা দিয়েছে??
নেহাঃ পাপা বিশ্বাস করো আমি কিছুই করিনি।। আমি শুধু আম্মুকে ভাত খাবো বলেছিলাম। কিন্তু আম্মু বললো এখন তুমি বাহিরে গিয়ে খেলে আসো তারপর খাবার খাবে? আমি বলেছিলাম,, আমি এখন খাবো তাই আম্মু আমাকে অনেক মেরেছে??
এই বলে নেহা কাঁদতে লাগলো।। আমি নেহাকে কোলে নিয়ে রুমে ঢুকলাম। ঢুকে আমি আমার স্ত্রী নাবিলা কে ডাক দিলাম। নাবিলা এসে আমাকে বললো.........
 
নাবিলাঃ কি হয়েছে এভাবে ষাঁড়ের মতো চিৎকার করছো কেনো??
আমিঃ কি বলো। আমি তো তোমাকে মাত্র একবার ডেকেছি, এতেই রেগে যাচ্ছো কেনো??
নাবিলাঃ আচ্ছা কি বলবে তাড়াতাড়ি বলো। আমার কাজ আছে??(রাগ দেখিয়ে)
আমিঃ তুমি নেহাকে মেরেছো কেনো??
নাবিলাঃ তোমার মেয়ে আদর পেয়ে বেয়াদব হয়ে গেছে। কোনো কথা শুনে না??
আমিঃ এই জন্য তুমি এই ছোট মেয়েটাকে মারবে।
ওকে তো একটু বুঝাতে পারতে??
 
নাবিলাঃ দেখো এতো বুঝানোর সময় আমার নেই। আমার কাজ আছে আমি গেলাম??
এই বলে নাবিলা চলে গেলো। আমি বুঝি না এই মেয়ের ইদানিং কি হয়েছে। শুধু কথায় কথায় রেগে যায়।
যাইহোক আপনাদের তো পরিচয় দেওয়া হয়নি৷। আমি
সাকিল আহমেদ।। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বাবা মা মারা গিয়েছে সেই বছর তিনেক আগে।
বলা যায় নেহা আর নাবিলা আমার সব।। কারন ওরা ছাড়া এই পৃথিবীতে আপনজন কেউ নেই বলতে পারেন। আমি একটা মাল্টি ন্যাশনাল কম্পানিতে জব করি। আপাদত এটুকুই জানেন।
রাতের বেলায় খাবার খেয়ে রুমে চলে গেলাম শোয়ার জন্য, ঠিক তখনই আমার মেয়ে নেহা বলে উঠলো.....
 
নেহাঃ বাবা নিহাল মামা না শুধু আম্মুকে জড়িয়ে ধরে। আম্মুও নিহাল মামাকে জড়িয়ে ধরে। তাহলে আমাকে ধরে না কেনো??(কাঁদো কাঁদো গলায়)
আপনাদের তো বলা হয়নি,, আমাদের পরিবারে আরো
একজন থাকে। নাবিলার চাচাতো ভাই নিহাল। আমার বাসায় থেকে পড়াশোনা করে। এবার HSC দিবে।।
আমিঃ মামুনি আমি কি তোমাকে আদর করি না? আর নিহাল তো তোমার মামা হয়। আর তোমার মামা তোমার আম্মুর ছোট ভাই। তাই তাকে আদর করে???
নেহাঃ তাহলে আমাকে কেনো করে না??
 
আমিঃ আচ্ছা আমি তোমার আম্মুকে বলে দিবো এখন থেকে যেনো তোমাকে অনেক আদর করে??
নেহাঃ ওকে পাপা??
আমিঃ এখন ঘুমাও নয়তো তোমার আম্মু বকা দিবে??
নেহাঃ আচ্ছা??
কিছুক্ষণ পরেই নেহা ঘুমিয়ে গেলো। তারপর নাবিলা সবকিছু গুছিয়ে আয়নার সামনে বসে চুল ঠিক করতে লাগলো। আজকে নাবিলাকে খুব সুন্দর লাগছে তাই আমি গিয়ে ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। নাবিলা বুঝতে পেরে আমার কাছ থেকে সরে গেলো😥😥 তাই আমি বললাম..........
আমিঃ কি হয়েছে তোমার??
নাবিলাঃ দেখো তুমি যা করতে চাচ্ছো সেটা এখন সম্ভব না। আমি খুব ক্লান্ত, আমাকে ঘুমাতে দাও। আর হ্যা এসব আমার একদম ভালো লাগে না। যখন তখন হুট করে জড়িয়ে ধরা??
আমি হা করে তাকিয়ে রইলাম নাবিলার দিকে। নাবিলা এই কথা বলতে পারলো৷ যেই মেয়ে আমার জন্য
এতটা পাগল ছিলো সেই মেয়ে আজ এই কথা কিভাবে বললো আমাকে। পরে ভাবলাম......
যাইহোক আজ হয়তো নাবিলা অনেক ক্লান্ত, তাই মাথা ঠিক নেই। তাই আর কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে গেলাম।
সকাল বেলায়ঃ
 
--------------------
সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে দেখি ০৯ টা বেজে গেছে।
অথচো আজকে নাবিলা আমাকে ডাক দিলো না। তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হতে চলে গেলাম! কারন লেট হয়ে যাচ্ছিলো। আমি দ্রুত রেডি হয়ে রান্না ঘরে গেলাম। গিয়ে দেখি নাবিলা আর নিহাল হাসাহাসি করছে। আবার মাঝে মধ্যে নাবিলাকে জড়িয়ে ধরছে। সত্যি বলতে ব্যাপারটা একদম আমার কাছে ভালো লাগলো না। তাই আমি নাবিলাকে বললাম খাবার দাও লেট হয়ে যাচ্ছে আমার। ঠিক তখনই নিহাল বললো....
 
নিহালঃ গুড মর্নিং দুলাভাই??
আমিঃ গুড মর্নিং। তোমার পড়াশোনা কেমন চলছে??
নিহালঃ ভালো ভাইয়া। তোমরা আমাকে হেল্প না করলে কি যে হতো আমার??(মন খারাপ করে)
আমিঃ আরে পাগল মন খারাপ করো কেনো। আমরা কি তোমার আপন কেউ না??
নিহালঃ তবুও....??(পুরোটা বলতে না দিয়ে)
নাবিলাঃ হয়েছে এবার খেতে আসুন আপনারা?? 
 
আমিঃ হুম চলো আমার এমনিতেই আজকে অনেক লেট হয়ে গেছে। ভাবছি আজ অফিসে যাবো না??
নাবিলাঃ যাবে না মানে? কি বলছো এসব। দ্রুত নাস্তা করে অফিসে যাও??
আমিঃ আরে রেগে যাচ্ছো কেনো। একদিন অফিসে
না গেলে কিছুই হবে না? দাঁড়াও বসের কাছ থেকে
ছুটি নিয়ে নিচ্ছি??
নাবিলাঃ তুমি অফিসে যাবে মানে যাবে ব্যাস। আমি আর কিছু বলতে চাচ্ছি না?? (রেগে)
আমিঃ আচ্ছা যাচ্ছি? বুঝিনা আমাকে নিয়ে তোমার এতো প্রবলেম কেনো??
আমি অফিসে যাবো শুনে নাবিলার আর নিহালের মুখে এক অদ্ভুত হাসি ফুটে উঠেছে। এই হাসির কারন বুঝতে পারলাম না। যাইহোক অফিসে চলে আসলাম। মনটা তেমন ভালো নেই তাই আজকে একটু তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বাসায় রওনা দিলাম। বাসায় গিয়ে দেখি নেহা টিভি দেখছে। তাই আমি নেহাকে ডাক দিলাম। নেহা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি বললাম তোমার আম্মু কোথায় মামুনি। তখন নেহা বললো.......
 
নেহাঃ পাপা আম্মু তো সেই কখন থেকে নিহাল মামার রুমে। সেই কখন গেছে এখনো আসছে না??
আমিঃ আচ্ছা তুমি বসো আমি তোমার আম্মুকে
নিয়ে আসছি??
তারপর আমি নিহালের রুমের কাছে যেতেই ফিসফিস করার আওয়াজ পাচ্ছিলাম। রুমের দরজাটা ধাক্কা দিতেই আমি দেখলাম,নিহাল শুয়ে আছে আর নাবিলা নিহালের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। দরজা খোলার শব্দ পেয়ে নাবিলা আমার দিকে তাকিয়ে বললো.......
নাবিলাঃ কি ব্যাপার! কখন এলে তুমি??
আমিঃ এইতো মাত্র আসলাম। তুমি নেহাকে একা
রেখে এতক্ষণ এখানে কি করছো??
নাবিলাঃ নিহালের শরীর ভালো না তাই ওর মাথায়
হাত বুলিয়ে দিচ্ছি??
 
আমিঃ কি হয়েছে নিহালের??
নাবিলাঃ হঠাৎ করে জ্বর আসছে।
আমিঃ তাহলে এখনো ডাক্তারকে ফোন দাওনি কেনো??
নাবিলাঃ আসলে....??(পুরোটা বলতে না দিয়ে)
নিহালঃ দুলাভাই আমি আপুকে না করেছি যেতে।
আমি ঠিক হয়ে যাবো আপুর সেবা পেলে??
আমিঃ ঠিক আছে তোমরা যা চাও??
নাবিলাঃ তুমি ফ্রেশ হও আমি খাবার দিচ্ছি??
আমিঃ ওকে??
 
তারপর আমি ওদের কাছ থেকে রুমে এসে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। কিন্তু মনের মধ্যে একটা খটকা যেনো লেগেই আছে। কারন আমি অফিসে যাওয়ার সময়
তো ঠিকই ছিলো। এই ৩-৪ ঘন্টার মধ্যে কি এমন হলো যার জন্য নিহালের জ্বর হয়ে গেলো। পরে আবার ভাবলাম কার কখন অসুখ হয় কে জানে।।ধুরর আমি কি ভাবছি এসব।
সব চিন্তা বাদ দিয়ে খাবার খেতে গেলাম।। খাবার খেয়ে রুমে এসে নাবিলার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর নাবিলা রুমে আসলো। আমি রুমের দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে নাবিলাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ওর গলায় নাক ডুবিয়ে দিলাম। হঠাৎ করে নাবিলা আমার কাছ থেকে সরে গেলো। আর বললো....
 
#গল্পঃ_স্ত্রীর_পরকীয়ার_পরিনতি #পর্বঃ_০২_
 
গল্পটা বাস্তবের সাথে যথাযথ মিল রয়েছে।
সব চিন্তা বাদ দিয়ে খাবার খেতে গেলাম।। খাবার খেয়ে রুমে এসে নাবিলার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর নাবিলা রুমে আসলো। আমি রুমের দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে নাবিলাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ওর গলায় নাক ডুবিয়ে দিলাম। হঠাৎ করে নাবিলা আমার কাছ থেকে সরে গেলো। আর বললো....
নাবিলাঃ দেখো বারবার এটা ভালো লাগে না??
আমিঃ বারবার মানে? আমি তো প্রায় অনেক দিন তোমার কাছে আসি না তাহলে বারবার বলতে কি বুঝাচ্ছো?? 
 
নাবিলাঃ ইয়ে মানে...??( ভীতু চাহনিতে)
আমিঃ কি মানে মানে করছো??
নাবিলাঃ দেখো আমি তোমার কথার উত্তর দিতে
বাধ্য নই??
আমি কিছু বলতে গিয়েও বলিনি।।কারন এতে বিপরীত হলেও হতে পারে। রাতের বেলায় আমি নেহাকে শুইয়ে দিয়ে ল্যাপটপে অফিসের কাজ গুলো গুছিয়ে নিচ্ছিলাম এমন সময় নাবিলা এসে আমাকে বললো.....
নাবিলাঃ শুনো আমি আজকে নিহালের সাথে থাকবো??
আমিঃ নিহালের সাথে থাকবে মানে??
নাবিলাঃ আসলে নিহাল তো অসুস্থ রাতে যদি জ্বরটা আরো বেড়ে যায় তখন কি হবে ভাবছো??
আমিঃ দাঁড়াও আমি এখনই ডাক্তারকে কল দিচ্ছি তোমাকে কোথাও যেতে হবে না??
নাবিলাঃ আরে কি করছো, একটা রাতেরই তো ব্যাপার৷ একটু বোঝার চেষ্টা করো। আর এখন তো অনেক রাত হয়েছে। শুধু শুধু ডাক্তারকে কষ্ট দিয়ে লাভ কি??
 
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। কাল কিন্তু মনে করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে??
নাবিলাঃ আচ্ছা কালকের টা কালকে দেখা যাবে।
এখন তুমি ঘুমাও কালকে অফিস আছে না??
আমিঃ আচ্ছা ঘুমাবো তার আগে একটা মিষ্টি দিয়ে যাও??
নাবিলাঃ দেখো সব সময় ফাজলামো আমার একদম পছন্দ না??(চোখ রাঙিয়ে)
আমিঃ ওকে যাও লাগবে না?? (মন খারাপ করে)
নাবিলাঃ ওকে গুড নাইট??
আমিঃ গুড নাইট?? 
 
আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে গেলাম। আর ওইদিকে নাবিলাকে দেখে নিহাল বললো.........
নিহালঃ কি ব্যাপার এতো লেইট করলে কেনো? সেই কখন থেকে তোমার জন্য বসে আছি??
নাবিলাঃ ওহ সোনা রাগ করে না। আসলে বলদটাকে ম্যানেজ করতে লেট হয়ে গেছে??
নিহালঃ আচ্ছা দুলাভাই যদি কখনো সন্দেহ করে
তখন কি হবে??
 
নাবিলাঃ কি হবে আর আমরা দুজন দুজনকে তো ভালোবাসি। দুজন বিয়ে করে ফেলবো??
নিহালঃ কিন্তু তুমি তো আমার বোন। আবার আমার থেকে বড়??
নাবিলাঃ দেখ প্রথমত তুই আমার মায়ের পেটের ভাই না। আর ছোট বড় এটা কোনো ব্যাপার না। কারন বয়স দেখে ভালোবাসা হয় না??
নিহাল মনে মনে ভাবতে লাগলো,,তুমি কি মনে করো।। আমি জীবনে তোমাকে বিয়ে করবো নাকি। প্রথমে তোমাকে ভোগ করবো। তারপর তোমার সমস্ত টাকা গয়না নিয়ে পালাবো। কথাটা বলেই আপন মনে হেসে উঠলো নিহাল৷
নাবিলাঃ কিরে কি ভাবছিস??
 
নিহালঃ না মানে ভাবছি আজ পুরো রাতের জন্য তুমি আমার। কি কি করবো রাতে সেটাই ভাবছি??
নাবিলাঃ তাই নাকি। ঠিক আছে দেখবো আজ তুই কেমন পারিস।
নিহালঃ ওকে দেখা যাবে??
নাবিলাঃ দাঁড়া আমি একটু দেখে আসি বলদটা ঘুমিয়ে পড়েছে নাকি??
এরপর নাবিলা আমার রুমের দরজা হালকা ধাক্কা দিয়ে
দেখলো আমি ঘুমিয়ে পড়েছি কি না। যখন দেখলো আমি ঘুমিয়ে পড়েছি।। তখনই একটা প্রাপ্তির নিঃশ্বাস ফেলে নিহালের রুমে চলে গেলো।
নিহালঃ কি ব্যাপার ঘুমাইছে??
নাবিলাঃ হুমম??( মুচকি হেসে)
 
এবার নিহাল দেরি না করে নাবিলার ঠোঁটের সাথে এক করে দিলো নিজের ঠোঁট গুলো। আস্তে আস্তে তাদের পাপকর্ম আরো গভীর হতে থাকে। দুজনে নগ্নতায় মেতে উঠেছে। যেনো তারা খুব ক্ষুদার্ত।।
রাত প্রায় ২ঃ৩০। হঠাৎ করেই ঘুমটা ভেঙে গেলো।। তাই পানি খাওয়ার জন্য রুম থেকে বের হলাম। 
 
হঠাৎ নজর গেলো নিহালের রুমের দিকে। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি ওদের রুমে কিছু একটা হচ্ছে। কারন এতো রাতে রুমের দরজা খোলা।। নিশ্চয়ই নিহালের শরীরের অবস্থা খুব একটা ভালো না৷ তাই তাড়াতাড়ি করে রুম থেকে বের হয়ে নিহালের রুমের দিকে যেতে শুরু করলাম। আমি রুমে ঢুকতে গিয়েও ঢুকলাম না। কারন তার আগেই আমি এমন কিছু দেখলাম যা আমি কখনো কল্পনাও করিনি।
আমি রুমের দরজার কাছে গিয়ে দেখলাম আমার স্ত্রী নাবিলা আর নিহাল দুজনে নগ্ন অবস্থায় একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আছে। হয়তো পাপ কাজের নেশায় দরজা বন্ধ করতে ভুলে গেছে। আমি কি সত্যি দেখেছি নাকি
স্বপ্ন দেখেছি। ওদের তো ভাই-বোনের সম্পর্ক তাহলে কিভাবে পারলো এমনটা করতে। একবারো আমার আর নেহার কথা ভাবলো না৷
আর থাকলাম না ওখানে৷ নিজের রুমে চলে আসলাম। 
 
চোখ দুটি যেনো আজ বাঁধ মানছে না। নাবিলা গ্রামের মেয়ে ছিলো। আমি ভাবতাম গ্রামের মেয়েরা খুব সাধারন হয়।। তারা মা বাবার চাপে প্রেম ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়ে না। আমি ভাবতাম আমি যাকে ভালোবাসবো তার কাছে আমিই প্রথম ভালোবাসা হয়ে থাকবো। কারন আমি কখনো আমার বউয়ের ভালোবাসা বিয়ের আগে কাউকে দেইনি। আমার ভালোবাসা ছিলো পবিত্র। বিয়ের পর থেকে নাবিলা প্রচন্ড পরিমান ভালোবাসতো আমাকে। তখন আমি নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মনে করতাম। আজ নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে। বাবা মা থাকলে ঠিকই আমাকে সান্ত্বনা দিতো। 
 
কিন্তু এই পৃথিবীতে নেহা ছাড়া তো আর কেউ নেই৷ নেহার কথা মনে পড়তেই ওর কাছে গেলাম। কি নিষ্পাপ লাগছে আমার পরীটাকে। কপালে একটা চুমু দিয়ে ভাবতে লাগলাম সেই দিনের কথা,, যেদিন নেহা নাবিলার কোল আলো করে আমাদের ছোট সংসারে আসে। সেদিন কি খুশী হয়েছিলাম আমরা বলে বুঝাতে পারবো না।। সেদিন নাবিলা আসাকে বলেছিলো,,মেয়েকে পেয়ে আবার আমাকে ভুলে যেওনা। আমাকে এখন আগের থেকেও বেশি ভালোবাসতে হবে কিন্তু। সেদিন নাবিলাকে বুকে জড়িয়ে খুব হেসেছিলাম। সেদিন পৃথীবিতে সবচেয়ে বেশি সুখী মানুষ ছিলাম আমি। কিন্তু আজ সেই ভালোবাসা কোথায় যেনো হারিয়ে গেছে। ইচ্ছে করছে আত্বহত্যা করি৷ কিন্তু নেহার মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু করতে পারলাম না।। 
 
রুম থেকে বের হয়ে বাবা মায়ের কবরের কাছে গেলাম।
মাটিতে বসে অনাথের মতো মাথায় হাত দিয়ে বাবা মায়ের কবরের দিকে তাকিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে লাগলাম। কেনো আমাকে এভাবে ছেড়ে চলে গেলে। আমাকে তোমাদের সাথে কেনো নিয়ে গেলে না। 
 
আমি যখন অফিসের কাজে চিটাগং চলে যাই তখন নাবিলা আমাকে ফোন করে বললো,,বাবা মা এক্সিডেন্ট করেছে। আমি ফিরতে ফিরতে বাবা মা বেঁচে ছিলো না। 
 
যদিও ডাক্তার বলেছিলো,, মা বাবা এবং যেই ড্রাইবার গাড়ি চালাচ্ছিলো তিনজনের দেহে ঘুমের ঔষধ পাওয়া গেছে যার ফলে তারা হঠাৎ করে শরীরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং সেই থেকে দুর্ঘটনা ঘটে। আমার কোনো শক্র ছিলো না তাই কাউকে সন্দেহ হয়নি যার ফলে কোনো মামলা করতে পারিনি বাবা মায়ের পরিকল্পিত হত্যার। তবে নাবিলা প্রায় সময় বলতো বাবা মা একা থাকে। তাদের যদি এমন কোথাও রাখা যেতো যেখানে তারা আরো সঙ্গী পাবে, এবং তারা হাসি খুশি থাকবে। কিন্তু আমি কাজের চাপে এগুলো কখনো মাথায় আনিনি। কারন আমি মনে করতাম বাবা মা সবচেয়ে আনন্দে থাকবে আমাদের সাথে থাকলে। এতে নেহাও দাদা দাদীর আদরের থেকে বঞ্চিত হতে হবে না।
 
বাবা মায়ের কবরের পাশে বসে এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে সকাল হয়ে গেছে বুঝতে পারিনি। তাই এখান থেকে উঠে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। আর ভাবতে লাগলাম কি করবো এখন নাবিলাকে। কারন আমি নাবিলাকে আঘাত করলে চরম কষ্ট পাবে নেহা।
আর নেহার কষ্ট আমি কিছুতেই সহ্য করতে পারবো না।
 
ভাবতে ভাবতে বাসায় এসে গেলাম। কলিংবের দেওয়ার কিছুক্ষণ পর নাবিলা এসে দরজা খুলে দিলো।
ওকে দেখে বুঝা যাচ্ছে কিছুক্ষণ আগে গোসল করে আসছে। আমি শুধু ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। আগে যখন নাবিলা গোসল করে আমার সামনে আসতো তখন হা করে তাকিয়ে থাকতাম। কারন ওর চেহারায় যে নিষ্পাপ যে ভাবটা আসতো আর একটা অজানা মায়া কাজ করতো। কিন্তু আজ নাবিলার দিকে চাহনি সম্পুর্ণ ঘৃণার দৃষ্টিতে। হঠাৎ করে নাবিলা বলে উঠলো...
নাবিলাঃ কি ব্যাপার এভাবে কি দেখছো??
 
আমিঃ কি ব্যাপার! আজকে তুমি গোসল করলে এতো সকালে??(না জানার ভান করে)
নাবিলাঃ ইয়ে মানে নিহাল রাতে কাপড়ে বোমি করে দিয়েছে??
শুনতে পারছেন পাঠক/পাঠিকা নিহাল কাপড়ে বোমি করে দিছে। অসাধারণ সত্যি কথা। ছিহহ নষ্টা
আমিঃ ও আচ্ছা নিহাল বোমি করে দিয়েছে। তা
নিহালের কি অবস্থা এখন??
নাবিলাঃ একদম সুস্থ আছে??
আমিঃ বাহহ তুমি দেখছি যাদু জানো। মেডিসিন
ছাড়াই সুস্থ করে দিলে। যাক আমার তো টাকা
বেঁচে গেলো??
নাবিলাঃ হুমমম??
 
আমিঃ ওকে তুমি দাঁড়াও আমি নিহালকে দেখে আসি??
নাবিলাঃ ঠিক আছে??
আপনারা হয়তো ভাবতেছেন এতোকিছুর পরেও আমি কেনো ভালো ভাবে কথা বলছি৷ তাহলে শুনুন, আমি ওদের এখন শাস্তি দিবো না। পরিকল্পনা মাফিক ভাবে ওদের এমন শাস্তি দিবো যে ওরা কল্পনাও করতে পারবে না। তারপর আমি নিহালের রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি নিহাল শুয়ে আছে তাই আমি বললাম.........
আমিঃ কি সালাবাবু আর কত ঘুমাবেন??
নিহালঃ ওহ দুলাভাই তুমি,ভিতরে আসো। আসলে শরীরটা খুব ক্লান্ত লাগছে??
আমিঃ সে তো লাগবেই। সারারাত কি একটা ধকল গেলো তোমাদের। শরীর কি আর ভালো থাকে??(শয়তানি হাসি দিয়ে) 
 
নিহালঃ মানে??(ভীতু চাহনিতে)
আমিঃ আরে মানে মানে কি করছো। সারারাত জ্বর গেলো তার উপর বোমিও করছো তাই বললাম??
নিহালঃ ও হ্যা দুলাভাই??
আমিঃ সবকিছু ঠিকঠাক আছে তো নিহাল??
নিহালঃ হ্যা দুলাভাই সবকিছু ঠিক আছে??
আমিঃ তা আমি জানতে পারলাম রিয়া নামে একটা মেয়েকে তুমি খুব ভালোবাসো আবার খুব শীঘ্রই
নাকি দুজনে বিয়ে করছো?? 
 
নিহালঃ তোমাকে কে বলেছে দুলাভাই??(ভয়ে ভয়ে)
আমিঃ হাহাহা খবর রাখতে হয় সালাবাবু। এবার
বলো খবর সত্যি নাকি?
নিহাল কিছু একটা ভেবে আমার পায়ে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো.........
নিহালঃ দুলাভাই প্লিজ কাউকে বলো না। এমনকি আপুকেও না। আমি রিয়াকে খুব ভালোবাসি৷
তাকে না পেলে আমি মরেই যাবো??
আমিঃ কি বলো সামান্য একটা মেয়ের জন্য কেউ মরে যায় নাকি। আর মেয়েটাকে বিয়ে করে খাওয়াবে কি? 
 
তুমি তো চাকরি করো না। আর যদি রিয়ার বাবা রিয়াকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয়, তখনই বা কি করবে তুমি। কারন কোনো বাবা তো নিজের মেয়েকে
কোনো বেকার ছেলের কাছে বিয়ে দিবে না??
নিহালঃ প্লিজ দুলাভাই এভাবে বলো না। তাহলে আমি সত্যিই মরে যাবো। তুমি দয়া করে আমাকে সাহায্য করো। আমি রিয়াকে বিয়ে করে আমার করে নিতে চাই। আমি ওকে হারাতে পারবো না??
কান্না করে দিয়েছে বেচারা।। এতোই যদি ভালোবাসিস তাহলে কেনো আমার সংসারটা নষ্ট করলি। তারপর আমি বললাম........ 
 
আমিঃ আরে বোকা ছেলে কান্না করো না।। রিয়াকে তোমার করে দেওয়া আমার দায়িত্ব। তুমি নিশ্চিত থাকতে পারো। শুধু আমি যা বলবো তোমাকে তাই করতে হবে কেমন??
নিহালঃ ধন্যবাদ দুলাভাই??
আমি নিহালের রুম থেকে বের হয়ে আয়মানকে একটা ফোন করলাম.......
আমিঃ হ্যালো আয়মান??
আয়মানঃ হ্যা বল??
আমিঃ দোস্ত একটা হেল্প করতে পারবি??
আয়মানঃ বল কি করতে হবে??
আমিঃ নিহাল যেই মেয়েকে ভালোবাসে সেই মেয়ের সব ইনফরমেশন আমার চাই। আর আমি কিছু ছবি দিচ্ছি এগুলো রিয়াকে দেখাবি। যদি কিছু জানতে চায় তাহলে আমার নাম্বারটা দিবি। বাকি কাজ আমি করবো??
 
আয়মানঃ আচ্ছা ঠিক আছে??
কলটা কেটে দিলাম। গেইম তো এবার শুরু হবে হাহাহা।
রাতের বেলায় বারবার ফোনের দিকে তাকাচ্ছি কখন কলটা আসবে। আয়মান কি পারবে ঠিক মতো কাজটা করতে। উফফ টেনশনে মাথা ঘুরছে আমার। পায়চারি করছি রুমে। এতক্ষণে তো কলটা আসার কথা। ভাবতে ভাবতে একটা কল আসলো আমার মোবাইলে। দেরি না করে দ্রুত কলটা রিসিভ করলাম। অপর পাশ থেকে একটা মেয়ে বলে উঠলো.........
চলবে কি.?
 
#গল্পঃ_স্ত্রীর_পরকীয়ার_পরিনতি #পর্বঃ_০৩_
 
গল্পটা বাস্তবের সাথে যথাযথ মিল রয়েছে।
কলটা কেটে দিলাম। গেইম তো এবার শুরু হবে হাহাহা।
রাতের বেলায় বারবার ফোনের দিকে তাকাচ্ছি কখন কলটা আসবে। আয়মান কি পারবে ঠিক মতো কাজটা করতে। উফফ টেনশনে মাথা ঘুরছে আমার। পায়চারি করছি রুমে। এতক্ষণে তো কলটা আসার কথা। ভাবতে ভাবতে একটা কল আসলো আমার মোবাইলে। দেরি না করে দ্রুত কলটা রিসিভ করলাম। অপর পাশ থেকে একটা মেয়ে বলে উঠলো......... 
 
মেয়েটাঃ হ্যালো.??
আমিঃ আমি যদি ভুল না করে থাকি তাহলে আপনি রিয়া! রাইট??
মেয়েটাঃ হ্যা আমি রিয়া??
আমিঃ তা কেমন আছেন আপনি??
রিয়াঃ দেখুন আপনার সাথে এতো কথা বলার সময় আমার নেই। আপনি যে ছবি গুলো দিছেন সেগুলো
যে এডিট করা নয় তার প্রমাণ কি?? (রাগী গলায়)
আমিঃ কুল কুল ম্যাডাম।। আমি আগেই জানতাম আপনি আমার কথা বিশ্বাস করবেন না। তাই
আমাকে ছবির প্রমাণ গুলো দেওয়ার জন্য একটা সুযোগ দেওয়া যায় কি??
রিয়াঃ কি বলতে চাচ্ছেন স্পষ্ট করে বলুন??
 
আমিঃ কাল বিকাল ৩ঃ৩০ মিনিটে কফিশপে চলে আসুন! সেখানে সব কথা হবে কেমন??
রিয়াঃ সে নাহয় দেখা যাবে। কিন্তু একটা কথা শুনে রাখুন যদি প্রমান দিতে না পারেন তাহল আমি
আপনার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দিবো??
আমিঃ খুব ভালোবাসেন নিহালকে তাইনা??
রিয়াঃ রাখছি বাই??
 
আমি জানি মেয়েটা এখন প্রচন্ড কান্না করবে।। আসলে
এই পৃথিবীতে সত্যিকারের মন থেকে যারা ভালবেসেছে তারাই ধোঁকা খেয়েছে।
এবার হয়তো আপনাদের মনে অনেক প্রশ্ন আমি ছবি গুলো কোথায় পেলাম। আবার এতো কনফিডেন্স নিয়ে কিভাবে বললাম প্রমান দিবো। তাহলে শুনুন,, আমার বাবা মা যখন মারা যায় ঘুমের ঔষধের কারনে তখন আমি মনে মনে নিহালকে সন্দেহ করতাম। তাই ওর ঘরে সব সময় একটা স্পাই ক্যামেরা অন থাকতো যদি কোনো প্রমান মেলে তাই। কিন্তু তার পরিবর্তে যা দেখতে পেলাম সেটা তো আপনারা জানেন। ওদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও অনুমানিক কয়েকশত আমার কাছে আছে। তাহলে বুঝেন কতদিন ধরে ওরা আমাকে ঠকাচ্ছে। যাইহোক ডিনার করে আসি তারপর কথা হবে। ডিনার করতে গিয়ে দেখলাম নিহাল আর নাবিলা দুষ্টুমি করছে আর খাবার খাচ্ছে। তাই আমি গিয়ে নেহার পাশে বসলাম। তখন নেহা আমাকে বললে.......
 
নেহাঃ পাপা এতো দেরি করলে কেনো??
আমিঃ আমি তো ভেবেছিলাম তোমরা আমাকে ডাকবে তাইতো দেরি করে আসলাম। কিন্তু তোমরা তো কেউ আমাকে ডাকলে না??(অভিমানী সুরে)
নেহাঃ পাপা আমি তেমাকে ডাকতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু আম্মুর জন্য পারিনি??
আমিঃ কেনো আম্মু কি করেছে মামুনি??
নেহাঃ আম্মু বলেছে ক্ষুধা পেলে এমনিতেই আসবে। এতো ডাকাডাকির দরকার নেই??
আমিঃ তাই বলেছে??
তখনই নাবিলা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো আর নেহার গালে ঠাসস করে চড় বসিয়ে দিলো। তারপর বললো...
 
নাবিলাঃ বেয়াদব মেয়ে। দিনে দিনে বড় হচ্ছে আর মিথ্যা কথা বলা শিখছে??
নাবিলা যখন নেহাকে চড় মারলো তখন আমার বুকটা কেঁপে উঠলো। যেনো আমার কলিজায় লাগলো আঘাতটা। এই নেহার জন্যই ওরা এখনো পৃথিবীতে বেঁচে আছে৷ আর ওরাই কিনা নেহাকে আঘাত
করলো।। না এর শেষ আমাকে খুব দ্রুত করতে হবে। আমি নাবিলাকে রাগী গলায় বললাম.........
আমিঃ এভাবে কেউ মারে।। তুমি তো কখনো নেহার
গায়ে হাত দিতে না। ফুলের আঘাত পর্যন্ত লাগতে দাওনি তুমি। তাহলে আজ কিভাবে পারলে আঘাত করতে। তোমার হাত একটুও কাঁপলো না??
নাবিলাঃ আমার মিথ্যা কথা একদম সহ্য হয় না?? 
 
নেহাঃ বাবা আম্মু আমাকে একটুও আদর করে না,শুধু মারে৷ দেখো আমার পিঠে কত মারের আঘাত??
এই বলে নেহা ওর পিঠ আমাকে দেখিয়ে কাঁন্না করতে লাগলো।। আর আমি ওর পিঠের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। আমার কলিজাটা এতো কষ্ট পাচ্ছে তবুও বলেনি যে, পাপা আম্মু অনেক পঁচা আমাকে শুধু মারে। নেহার কান্ড দেখে নাবিলা বললো........
 
নাবিলাঃ বেয়াদব মেয়ে আবার মিথ্যা বলছিস আজ তোকে আমি মেরেই ফেলবা??
এই কথা বলে নাবিলা যখন নেহাকে আবার চড় মারতে যাবে ঠিক তখনই আমি খুব জোরে নাবিলাকে একটা চড় মারলাম। সাথে সাথে নাবিলা চেয়ার থেকে ফ্লোরে পড়ে গেলো। প্রায় ২ মিনিট কোনো কথা বলতে পারেনি। হাতের ৫ টা আঙুলের চাপ ভেসে উঠলো ওর গালে। আমার রাগ দেখে নিহালও ভয় পেয়ে যায়। কারন আমি তেমন রাগারাগি করি না কখনো। আর রাগলে আমি সাইকো টাইপের হয়ে যাই।। অনেকক্ষণ পরে নাবিলা আমাকে বলে উঠলো......... 
 
নাবিলাঃ তুমি আমাকে এভাবে মারতে পারলে??(কেঁদে কেঁদে)
আমিঃ হুমম মারলাম। তোকে তো খুন করলেও আমার রাগ কমবে না। তোর সাহস কিভাবে হয় আমার কলিজায় আঘাত করার??(আমার রাগ উঠলে তুই করে বলি🙂🙂)
নাবিলাঃ আমি আমার মেয়েকে শাসন করার অধিকার নেই??
আমিঃ আছে। কিন্তু এভাবে ক্ষত বিক্ষত করার অধিকার কে দিয়েছে তোকে??
নাবিলার মুখে আর কোনো কথা নেই।। কারন ও বলবে কি? বলার মতো কিছু থাকলেই তো বলবে। যে আঘাত করেছে আমার মেয়েটাকে আপনারা দেখলে আপনাদের চোখেও পানি আসবে। ওর চুপ থাকা দেখে আমি বললাম.......
 
আমিঃ এরপর যদি কখনো কোনোদিন তোর নামে নেহা অভিযোগ দিয়েছে তাহলে শুনে রাখ,সেদিনই তোর এই বাড়িতে শেষ দিন। আর নিহাল তুমি এই মুহূর্তে তোমার বোনকে আমার চোখের সামনে থেকে নিয়ে যাও??
নিহালঃ আচ্ছা দুলাভাই। এই আপু চল আমার রুমে। শুধু শুধু ঝগড়া করে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি করে কি লাভ হবে বল??
 
নাবিলা রাগে ফুঁসছে আর কেঁদে যাচ্ছে।। এরপর নিহাল নাবিলাকে নিয়ে রুমে চলে গেলো। আমি নেহার কাছে গেলাম। মেয়েটা আমার কাঁদতে কাঁদতে হিচকি তুলে ফেলছে। তাই ওকে কোলে তুলে নিলাম সেই সাথে ওর খাবার টা নিয়ে নিলাম। আজ আমার খাওয়া হবে না। তাই নেহার খাবার নিয়ে রুমে চলে আসলাম। নেহাকে যখনই খাবার খাইয়ে দিতে যাবো ঠিক তখনই নেহা মুখটা অন্যদিকে সরিয়ে নিলো তাই আমি বললাম......
আমিঃ কি হলো মামুনি খাচ্ছো না কেনো??
নেহাঃ তুমি আম্মুকে মারলে কেনো? আমি তোমার সাথে কথা বলবো না??
দেখছেন কি মেয়ে আমার।। যে মা এত আঘাত করেলো তার পরেও সেই মায়ের জন্য কাঁদছে। নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না। তাই নেহাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলাম। আর মনে মনে বলতে লাগলাম,, মা রে তোর এই ভালোবাসার দাম নেই তোর মায়ের কাছে। সে তো তার পরকীয়ার প্রেমিক ছাড়া আর কিছুই বুঝে না। কোনোদিন তোর মায়ের গায়ে হাত দেইনি আজ দিতে হলো। আমাকে যদি ভালো না লাগতো তাহলে একটিবার বলতে পারতো। আমি না হয় নিজ থেকে সরে যেতাম। কিন্তু এভাবে অভিনয়, আবহেলা দিনদিন আমাকে যে শেষ করে দিচ্ছে। মরলেও তো শান্তি পাবো না। কারন না জানি তোকে মেরেই ফেলবে কোনোদিন। তোকে তো বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখতে মন চায়। তুই যেদিন হারিয়ে যাবি সেদিন আমিও চলে যাবো না ফেরার দেশে। বলেই কান্না করতে লাগলাম।। আমার কান্না দেখে নেহা বলে উঠলো.......... 
 
নেহাঃ পাপা তুমি কান্না করছো? তুমি জানো না
তোমার কান্না আমার সহ্য হয় না??
আমিঃ না রে মা কান্না করছি না। তুমি ভাত গুলো
খেয়ে নাও??
নেহাঃ খাবো তবে তুমি যদি কান্না না করো তাহলে??
আমিঃ ওকে এই চোখ মুছে নিলাম এবার হা করো??
 
তারপর আমি নেহাকে খাইয়ে দিলাম। খাওয়া শেষে ঘুম পাড়িয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পর নেহা ঘুমিয়ে গেলো। আমি ঝটপট করে ল্যাপটপ অন করলাম। কারন আমাকে বসে থাকলে হবে না। নাবিলা আর নিহাল কি করছে সেটা আমাকে জানতে হবে। ক্যামেরা অন করতেই দেখি ওরা ঘুমিয়ে গেছে। তাই আগের রেকর্ড গুলো অন করলাম। নাবিলার কিছু কথা শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। নিহাল যখন নাবিলাকে নিয়ে রুমে গেলো তখন নাবিলা বললো........
নাবিলাঃ নিহাল আমি আর পারছি না চলো আজকেই আমরা বিয়ে করে এখান থেকে চলে যাই। ওর সাহস কিভাবে হয় আমাকে মারার??
নিহালঃ আরে রেগে যাচ্ছো কেনো বিয়ে তো আমরা করবোই। আর কয়েকটা দিন যাক তারপর??
নাবিলাঃ তুই বিয়ে করবি তো আমায়। দেখ তোর উপর ভরসা করেই আমি এই সংসারের মায়া ছাড়ছি। তুই 
 
যদি আমাকে ধোঁকা দিস তাহলে তোর, নেহার
আর শাকিলের অবস্থা হবে ওই তিনজনের মতো??
নিহালঃ তিনজনের মানে??
নাবিলাঃ আমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি আর ড্রাইবারের মতো এবার বুঝলি??(শয়তানি হাসি দিয়ে)
নিহালঃ মানে তুমি ওদের মেরেছো? কিন্তু কেনো??
নাবিলাঃ সেটা তোকে জানতে হবে না। তুই আমাকে বিয়ে করবি কি না সেটা বল??
নিহালঃ হুমম করবো??
 
( আল্লাহ কি বিপদে পড়লাম। আমি তো রিয়াকে ছাড়া আর কাউকে বউ হিসেবে কল্পনা করতে পারি না। যাইহোক আমাকে দ্রুত পালাতে হবে এখান থেকে। কিন্তু তার আগে টাকা পয়সা গুলো কোথায় আছে সেটা জানতে হব আমাকে।) মনে মনে ভাবলো নিহাল।
নিহালের চুপ থাকা দেখে নাবিলা বলে উঠলো.......
নাবিলাঃ কি ভাবছিস। নাকি পালানোর কথ ভাবছিস??
নিহালঃ পালাবো কোথায় তোমাকে ছাড়া??(ভয়ে ভয়ে)
নাবিলাঃ গুড বয়। চল এবার একটু রোমান্স করবো তারপর ঘুমাবো??
নিহালঃ না আজ শরীরটা ভালো লাগছে না??
নাবিলাঃ ওকে ঠিক আছে। আয় তোকে বুকে জড়িয়ে রাখি তাহলে ভালো লাগবে??
নিহালঃ হুমমম??
 
তারপর ওরা লাইট বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়লো। আর আমার চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি পড়তে লাগলো।। 
 
কি শুনলাম আমি? সবচেয়ে প্রিয় মানুষ গুলোকে যে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিলো সে আর কেউ নয়,, আমার স্ত্রী নাবিলা।। ভাবতেই পারছি না ও এমন কাজ কিভাবে করলো। না এর প্রতিশোধ আমাকে নিতে হবে। নয়তো বাবা মায়ের আত্মা শান্তি পাবে না।
সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে অফিসের দিকে রওয়ানা দিলাম। আবার বিকালে রিয়ার সাথে দেখা করতে হবে। তাই ল্যাপটপ পেনড্রাইভ বলতে গেলে সব ধরনের প্রমান নিয়ে নিলাম নিজের সাথে।। অফিস থেকে বের হয়ে কফিশপে চলে গেলাম। গিয়ে নিলার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর একটা মেয়ে কালো বোরকা পড়ে রেস্টুরেন্টে ঢুকলো। তার কিছুক্ষণ পর দেখলাম মেয়েটা কোথায় যেনো ফোন দিলো। সাথে সাথে আমার ফোনটা বেজে উঠলো। আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না মেয়েটাই রিয়া। তাই আমি ডাক দিলাম........... 
 
আমিঃ এই যে মিস আমি এখানে??
এটা বলার পর রিয়া যখন আমার দিকে তাকালো সাথে সাথে আমি উঠে দাঁড়ালাম। আমি কি দেখলাম এটা? এটা কি মেয়ে নাকি পরী। বিশ্বার করেন শাহ জালাল ভাই বোকার মতো তাকিয়ে রইলাম। আল্লাহ এতো সুন্দর মানুষ হয় নাকি। আর এই মেয়ে কিভাবে নিহালের মতো ছেলের প্রেমিকা হয়। হঠাৎ করে রিয়ার ডাকে হুশ ফিরলো আমার..........
 
রিয়াঃ আপনার মাথায় কোনো প্রবলেম আছে নাকি??
আমিঃ হ্যা। এই না না??( হুশ নেই আমার)
রিয়াঃ অসহ্যকর লোক একটা??(আস্তে করে বললো)
আমিঃ কিছু বললেন??
রিয়াঃ না কিছু বলিনি। আমরা যেই কাজে আসলাম সেটা করুন তাড়াতাড়ি। আমাকে আবার বাসায়
ফিরতে হবে??
আমিঃ হুমম বসুন??
 
রিয়াঃ জ্বি এবার আপনার প্রমান গুলো দেখান??
তারপর আমি ল্যাপটপে পেন ড্রাইভ লাগিয়ে সব গুলো ছবি দেখাতে লাগলাম।। ছবি গুলো দেখে নিলার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো। আমি বুঝতে পারছি মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে। কিন্তু কিছুই করার নেই। কারন তার থেকে বেশি কষ্ট নিয়ে আমি এখানে বসে আছি। সেটা আপনারাও আমার অতীতের কথা গুলো জানেন। এরপর রিয়া আমাকে বললো...........
রিয়াঃ এগুলো সত্যি কি আপনি এডিট করে
আনেন নি??
 
আমিঃ আপনাকে এতোকিছু দেখানোর পরেও বিশ্বাস করতে পারছেন না??
রিয়াঃ আসলে নিজের চোখে যতক্ষণ পর্যন্ত কিছু না দেখি ততক্ষণ কোনো কিছু বিশ্বাস করা কি উচিত আপনিই বলুন??
আমিঃ ওকে নো প্রবলেম। আমি আপনার নিজের চোখে দেখার ইচ্ছে টা পুরন করবো কেমন??
কথাটা বলে নিহালের রুমে থাকা ক্যামেরা টা অন করে দিলাম। তারপর ল্যাপটপ রিয়ার দিকে ঘুরিয়ে দিলাম। 
 
রিয়া ল্যাপটপ অফ করে দিলো। চোখ গুলো লাল হয়ে গেছে রিয়ার। (রিয়ার দিকে ল্যাপটপ ঘুরিয়ে দিতেই দেখলো নিহালের বুকের উপরে ঘুমিয়ে আছে নাবিলা।) আর সেগুলো দেখেই রিয়ার অবস্থা খারাপ। তারপর আমি রিয়াকে বললাম..........
আমিঃ আমি চাইলে এই দুইজনের কয়েক শত অন্তরঙ্গ মু?
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url