Kath Golap | Afnan Nisho | Mehjabin | Shaila | Rtv Drama

 
 
আজ সাতদিন হয়ে গেলো আমার বিয়ে হয়েছে!!
হলুদসন্ধ্যা, রূপসজ্জা, ফুলসজ্জার মাঝে টুপ করে কখন আমার পলাশকে ছেড়ে অন্যের হয়ে গেলাম টেরই পেলাম না। অথচ একসময় মনে হতো ওকে না পেলে আমি মরেই যাবো। ওমা সাতদিন হয়ে গেলেও এখনও দিব্যি বেঁচে আছি। বিয়ের আগের দিনই ভেবেছিলাম পালিয়ে যাবো কিন্তু বাঁধা দিলো পলাশ, বললো,,
-- সামর্থ্য অর্জন না করে তোমায় গ্রহণ করতে পারি না। ভালোবাসি বলেই তোমায় ভালো রাখতে চাই তোমার বাবা-মা এর সাথে কথা বলে ৬ টা মাস, সময় নাও, বিশ্বাস করো, তোমায় ভরণপোষণ করতে আমার বেগ পেতে হবে না।কিন্তু না এই রুকজানার তর সইল না। বাবার মায়ের কাছে বলার সাহস ও পেল না। দিব্যি পিএইচডি ধারী সায়েন্টিস্ট পেয়ে মাত্র ২৪ বছর ৭ মাস বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসলাম। আর এমন সু পাত্রকে কোন মা-বাবাই হাত ছাড়া করবে না।
বিয়েটা আমার বেশ জমকালোই হয়েছে। পাত্র আমেরিকাতেই সেটেল্ড। ওরা দুই ভাই এক বোন। মা-বাবা ভাই-বোন সবাই ফিরে এসেছে দেশেতে। ছেলেকে দেশে বিয়ে দিয়ে ওরা আবার বিদেশে থিতু হবে। পান-চিনি থেকে বিয়ের আগ পর্যন্ত ওর মানে আমার স্বামীকে দেখিনি (পলাশ নামক একটা রোগে আক্রান্ত ছিলাম)
ফুলসজ্জার রাতে প্রথম ওর সাথে চোখে চোখ রাখা। ওমা! আমি শিউরে উঠে চোখ নামিয়ে ফেললাম। মনে হচ্ছিল মায়াদয়াহীন এক জোড়া চোখ আমার দিকে ক্ষুধার্তের মতন তাকিয়ে আছে।
হঠাৎ ধীরে ধীরে বললো,
-- অদ্রিজা, তুমি ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। ও আর একটা কথা...ইয়োর নেইম ইজ টু লং, মে আই কল অদ্রি??
তার কথায় ভ্যাবাচাকা খেয়ে শুয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়লাম টেরই পেলাম না। বৌ ভাতের দিন খবর পেলাম আমার শ্বশুর -শাশুড়ি, দেবর আর ননদ কালই আমেরিকাতে ফ্লাই করবে। আমার স্বামীর কি এক গবেষণার জন্য এক বছর এখানে থাকতে হবে। শুনেই কেমন যেন অস্থির লাগছে। এতো বড় ফ্লাটে মাত্র দুজন আর এক জন কাজের লোক, সেই সাথে ওর ভাবলেশহীন চোখ!!
দ্বিতীয় রাতে খুব আতঙ্কিত ছিলাম। এই বুঝি আমার শরীরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু না, এই রাতে নিজ হাতে কফি বানিয়ে আমাকে এক মগ কফি দিয়ে, সেই শান্ত কন্ঠে,
-- অদ্রি তুমি রেস্ট করো, আমি রিসার্চের কাজটা শেষ করি।
অদ্ভুত ব্যাপারটা হলো ওই তিতকুটে চা খেয়ে আমার ঘুম কাটার বদলে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম। পরদিন হাত-পায়ে প্রচন্ড ব্যথা নিয়ে ঘুম ভাঙ্গলো। এমন মনে হচ্ছিল আমি ওঠার শক্তি পর্যন্ত পাচ্ছিলাম৷ এমন সময় ডঃ তামিম মানে আমার স্বামী ঘরে ঢুকেই বললো,,
-- অদ্রি! রাতে রিসার্চের কাজ শেষ করে এসে দেখি তুমি ঘুমাচ্ছো, তাই ডাকিনি।
সারা শরীরের যন্ত্রণায় আমার কথা বেরুচ্ছিল না। সে হটাৎ বলে
-- অদ্রি! সারা শরীরে ব্যথা কি? বমি বমি লাগছে? ওর চোখ দুটো দুটো চকচক করছে।
ও কীভাবে জানলো আমার ব্যথা, আমি তো বলিনি?
ভালো ভাবে তাকিয়ে দেখি ওর হাতে ওষুধ আর পানির গ্লাস। আমার হাতে ওষুধ দিয়ে বললো এটা খাও, আশা করি ব্যথা কমে যাবে। আমি কিছুটা দ্বিধা নিয়েই ওষুধটা খেয়ে, কোনমতে নাশতা সেরে আবার ও ঘুমালাম
ঘুম থেকে উঠেই টের পেলাম আমার নাভীর কাছে!!!!
*
চলবে,,
*
"রক্তের নেশা"
"পর্বঃ-১
*
লেখাঃ- Neel Mahmud

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url