Bangla Natok 2017 | KAJOL REKHAR KORBANI || Chanchal Chowdhury || Purnima || Eid Ul Azha 2017 Drama
নাটক দেখে কমেন্ট না করলে মনে হবে, একটা শুন্যতা রয়ে
গেলো।একেবারে বাস্তবিক জীবনের সাথে মিশে গেছে।তফাৎ শুধু নাটকের শেষে একটা
ফিনিসিং হয় মিল খুজে পাওয়া যায়,


পর্বঃ ১৬
মেঘলাঃ(আয়নার সামনে দাড়িয়ে জুয়েলারি খুলছিলাম খালি পেটে ঠান্ডা হাতের স্পর্শে কেঁপে ওঠলাম) আপনি,,,,,,,,,,??
আকাশঃ কেন খুশি হওনি??
মেঘলাঃ তা নয় আপনি কখন এলেন??
আকাশঃ বেশিক্ষণ হয়নি,,,, একটু ফ্রেস হয়ে কেবল শুয়েছিলাম।
মেঘলাঃ আপনি কীভাবে এলেন??
আকাশঃ কীভাবে এলাম মানে?? এখনো কী পাইপ বেয়ে আসবো নাকি?? আমেনা আপু দরজা খোলে দিছে। বললো তোমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে তাই একটু ফ্রেস হয়ে নিলাম।( পেটে হাত বুলাচ্ছি আর ঘাড়ে মুখ গুজে বললাম)
মেঘলাঃ ওহ্ ,,,,,,, (বরফের মতো জমে গেছি। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে)
আকাশঃ ওহ্ কী??
মেঘলাঃ এ,,,এভাবে থাকলে কথা বলা যায়??
আকাশঃ কেন যায় না??(আরে গভীর ভাবে স্পর্শ করে আর ঘাড়ে কিস করে বললাম)
মেঘলাঃ কে,,,,কেমন যেন লাগে??
আকাশঃ কেমন লাগে?? (পেটে হালকা চাপ দিয়ে ধরে)
মেঘলাঃ জ,,,,জানি না,,,,,।
আকাশঃ আমি বলি কেমন লাগে??
মেঘলাঃ (উনার থেকে দূরে এসে দাড়ালাম) আমি শাওয়ার নিয়ে আসছি আপনি বসুন।
আকাশঃ চলো আমিও আসছি একসাথে নিবো।
মেঘলাঃ ধূর ফালতু লোক একটা (ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ওয়াশরুমে চলে এলাম।)
আকাশঃ হাহাহা পাগলি ভয় পেয়েছে। আজ ছেড়ে দিলাম তাই কী সবসময় ছাড়বো? আমার সাথেই তোমাকে শাওয়ার নিতে হবে একবার শুধু বাসায় চলো।
মেঘলাঃ(আল্লাহ শাওয়ার নেওয়া শেষে খেয়াল করলাম জামাকাপড় কিছুই আনি নি। কী করবো এখন?? রুমে তো উনি আছে।) এই যে শুনছেন??
আকাশঃ,,,,,,,,,,,
মেঘলাঃ রুমে নেই নাকি?? দরজা হালকা খোলে উঁকি দিয়ে দেখি রুমে নেই। রুমের দরজা খোলা। মনে হয় বাইরে গেছে। টাওয়েল জড়িয়ে বাইরে এসে আগে দরজা অফ করে দিলাম। কে আবার এসে পড়ে ঠিক নেই। আলমারিতে কাপড় খুজতে লাগলাম।
আকাশঃ মেঘলা ওয়াশরুমে যেতেই বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। রুমের দরজা অফ করার শব্দ শুনে রুমে এলাম। মেঘলার হয়তো শাওয়ার নেওয়া শেষ। রুমে এসে দেখি মেঘলা শুধু একটা টাওয়েল পড়ে আলমারির সামনে দাড়িয়ে আছে। ভেজা চুল কোমরের নিচে নেমে গেছে টপটপ করে পানি পড়ছে। নিশ্বাস নিতে ভুলে গেছি মেঘলাকে দেখে।
মেঘলাঃ(জামাকাপড় হাতে নিয়ে পেছনে ঘুরতেই দেখি আকাশ দাঁড়িয়ে আছে। কেমন নেশাগ্রস্তের মতো দৃষ্টিতে। লজ্জায় শরীরের রক্ত জমে গেছে মনে হচ্ছে। পা মনে হচ্ছে ফ্লোরে আটকে গেছে।)
প্রিয় গল্পপ্রেমিক ভাই ও বোনেরা সবাইকে আন্তরিক মোবারকবাদ আমার পক্ষ থেকে আসলে দুঃখের বিষয় হলো আমাদের গ্রুপটা কিন্তু অনেক কিছুটা মেম্বার অনেক কম কিন্তু আমি আপনাদেরকে বলতে চাই আপনারা যদি সবাই নিজ নিজ ফেসবুক ফ্রেন্ড দের কে ইনভাইট করতেন
তাহলে কিন্তু সবাই এই গল্পটা পড়তে পারতো এমনকি আমাদের এই গ্রুপটা অনেকটা এগিয়ে যাই তো
এজন্য মেহেরবানী করে ভবিষ্যতে আরো ভালো ভালো গল্প পাওয়ার জন্য এবং যিনি গল্প দিবেন তাকে উৎসাহিত করার জন্য আপনার ফ্রেন্ড দের কে ইনভাইট করুন ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতে আরো ভালো কিছু দেওয়া হবে
আকাশঃ(ধীরপায়ে এগিয়ে যেতে লাগলাম মেঘলার দিকে। ওর মুখে গলায় জমে থাকা বিন্দু বিন্দু পানি শুষে না নিলে মনে হচ্ছে তৃষ্ণায় মরে যাবো।)
মেঘলাঃ (উনাকে এগিয়ে আসতে দেখে হাত থেকে জামাকাপড় পড়ে গেলো কিন্তু একপাও নড়তে পারলাম না)
আকাশঃ (মেঘলার সামনে এসে নিচু হয়ে থুতনিতে জমে থাকা পানি ঠোঁট দিয়ে শুষে নিলাম।)
মেঘলাঃ(সারা শরীরে মনে হয় বৈদ্যুতিক শক খেলাম। শক্ত করে চোখ বন্ধ করে নিলাম)
আকাশঃ(থুতনিতে আঙুল দিয়ে মুখটা উপরে তুললাম। চোখ বন্ধ করে আছে। ভেজা ঠোঁটগুলি কাঁপছে। মুখটা দু'হাতের আজলে নিলাম। সারা মুখে জমে থাকা পানি ঠোঁট দিয়ে শুষে নিলাম।)
মেঘলাঃ(দম আটকে আছে গলায়। মনে হচ্ছে যে কোন সময় মারা যাবো। মুঠো শক্ত করে টাওয়েল আঁকড়ে ধরে আছি)
আকাশঃ(কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকতাম ওর অবিরাম কাঁপা ঠোঁটগুলির দিকে। বেশি সময় নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। ঠোঁটগুলি নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলাম। পাগলের মতো শুষে নিচ্ছি ওর ঠোঁট।)
মেঘলাঃ(প্রথমে রোবটের মতো দাঁড়িয়ে থাকলেও সেটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। রেসপন্স করতে শুরু করলাম নিজের অজান্তেই। আকাশের মাথার পিছনে চুল আঁকড়ে ধরে আমিও পাগলের মতো ওর ঠোঁট শুষতে শুরু করলাম। কিন্তু আকাশের সাথে পেরে ওঠছি না। কী হলো জানি না উনার ঠোঁটে কামড় বসিয়ে দিলাম। এতে যেন উনার পাগলামি আরো বেড়ে গেলো।)
আকাশঃ(ওর রেসপন্স আমাকে পাগল করে দিয়েছে আর যখন ঠোঁটে কামড় বসিয়ে দিয়েছে আরো যেন আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে পড়লাম। কতটা সময় এভাবে কেটেছে জানি না। ঠোঁট ছেড়ে গলায় কিস করতে লাগলাম পাগলের মতো। মাঝে মাঝে ছোট ছোট লাভ বাইট দিচ্ছি। ওর গায়ে জড়ানো টাওয়েল খোলার জন্য হাত রাখলাম টাওয়েলে)
মেঘলাঃ(উনি টাওয়েলে হাত রাখতেই কী হলে জানি না শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে ধাক্কা দিলাম উনাকে। উনি কিছুটা দূরে সরে গেলেন)
আকাশঃ( অবাক হয়ে তাকালাম মেঘলার দিকে। এমন কেন করলো ও ??)
মেঘলাঃ (ফ্লোরে পড়ে থাকা জামাকাপড় হাতে নিয়ে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম)
আকাশঃ (আমি তো জোর করিনি ওর সাথে। তাহলে এমন কেন করলো মেঘলা?? ও চাইলে প্রথমেই আমাকে বাঁধা দিতে পারতো এভাবে কাছে টেনে দূরে ঠেলে দিলো কেন?? ও কী আমাকে মন থেকে মাফ করতে পারেনি এখনো?? কম্প্রমাইজ করার চেষ্টা করছে,,,, শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি। কিন্তু আমিতো কোন কম্প্রমাইজ চাই না। ভালোবাসা চাই শুধু।)
মেঘলাঃ (ওয়াশরুমের ওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি। কেন এমন করলাম আমি?? আমিওতো উনাকে ভালোবাসি,,, কাছে চাই। তাহলে কেন??? এটা করা ঠিক হয়নি আমার। সরি বলতে হবে উনাকে।)
আকাশঃ (যেদিন ভালোবেসে কাছে টেনে নিতে পারবে সেদিনই তোমার কাছে যাবো তার আগে তাকানোর ও চেষ্টা করবো না। বেড়িয়ে এলাম রুমে থেকে।)
মেঘলাঃ(তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে রুমে এসে দেখি উনি নেই। কোথায় গেলো এত তাড়াতাড়ি??)
আকাশঃ(বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে বসলাম। কিছুতেই ভুলতে পারছি না। চোখ বন্ধ করলেই ভেসে ওঠছে সেই দৃশ্য। ভুলটা হয়তো আমার ছিলো কিন্তু মানতে পারছি না মেঘলার এমন আচরণ।)
মেঘলাঃ( ড্রয়িংরুমে এসেও আকাশকে পেলাম না। আমেনা আপু ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে) আমেনা আপু আকাশকে দেখেছো??
আমেনাঃ হ আপা কোনো দিকে না তাকাইয়া সোজা বাইর হইয়া গেলো হনহন কইরা।
আকাশঃ(গাড়ি নিয়ে বের হয়ে আসলাম বাসা থেকে)
মেঘলাঃ(দৌড়ে বাইরে এসে দেখি উনি বের হয়ে গেলেন। উনি অনেক কষ্ট পেয়েছেন হয়তো। আবার দৌড়ে রুমে নিয়ে কল দিলাম উনাকে কিন্তু রিসিভ করছে না।)
আকাশঃ(ফুল স্প্রিডে গাড়ি চালিয়ে বাসায় পৌঁছালাম। গাড়ির সিটে হেলান দিয়ে বসে রইলাম কিছুক্ষণ। তাও নিজেকে শান্ত করতে পারছি না। গাড়ি থেকে নেমে সুইমিংপুলে ঝাপ দিলাম। ডুব দিয়ে পুলের ফ্লোরে বসে রইলাম। কিছুক্ষণ এভাবে থেকে সাতার কেটে রুমের দিকে যেতে লাগলাম।)
মেঘলাঃ(একের পর এক কল দিয়ে যাচ্ছি কিন্তু উনি রিসিভ করছে না। এখন কান্না করতে ইচ্ছে করছে আমার। নিজের চুল নিজে ছিঁড়ছি কেন এমন করলাম,,, কেন???)
আকাশঃ(রুমে এসে ফ্রেস হয়ে শুয়ে পড়লাম)
,,,,,,,,
রবিনঃ(অফিস থেকে এসে দেখি রুপ রুমে নেই।) রুপ,,,,,
রুপঃ,,,,,,,,,
রবিনঃ রুপ,,,,,,,,৷৷
রুপঃ (বেলকনিতে বসে ছিলাম। ইচ্ছে করেই উত্তর দেইনি। এখন মনে হচ্ছে উত্তর না দিতে বাসার সবাইকে জড়ো করে ছাড়বে) কী হয়েছে ষাঁড়ের মতো চেঁচাচ্ছো কেন?? মরিনি এখনো,,, বেঁচে আছি।
রবিনঃ রুপ,,,,,,, এসব কেমন কথা??
রুপঃ কেন তুমি মনে প্রাণে যা চাও আমি শুধু সেটা প্রকাশ করলাম।
রবিনঃ (একটানে রুপকে বুকে এনে ফেললাম) বাবার বাড়ি এসে সাহস বেড়ে গেছে।
রুপঃ সাহস বাবার বাড়ি এসে বাড়েনি। সাহস বাড়িয়েছে আমার সন্তান। এতোদিন একা ছিলাম এখন আমার সন্তান আমার সাথে আছে।(ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলাম)
রবিনঃ শুধু তোমার সন্তান???
রুপঃ হুম শুধু আমার। যে ভালো স্বামী হওয়ার যোগ্যতা রাখে না সে ভালো বাবা হবে কী করে??
রবিনঃ মাফ করা যায় না আমাকে রুপ?? আমি জানি আমার অপরাধ আকাশ সমান। তুমিতো আমায় ভালোবাসো মাফ করে দাও না আমার অপরাধ।
রুপঃ আমি কাউকে ভালোবাসি না (মুখ ফিরিয়ে নিলাম)
রবিনঃ কোনদিন বাসো নি??
রুপঃ না,,,
রবিনঃ একটুও না,,,?
রুপঃ না,,,,,
রবিনঃ আমার দিকে তাকিয়ে বলো।(থুতনি ধরে মুখটা সামনে আনলাম) চোখে চোখ রেখে বলো,,, একটুও না??
রুপঃ ন,,,,,না (আজ এই চোখে কোন রাগ দেখতে পাচ্ছি না। না আছে রাগ না আছে বিরক্তি। আছে শুধু ভালোবাসা পাওয়ার আকুলতা, অসহায়তা। "আমরা মেয়েরা বড় অদ্ভুত,,,, একটু ভালোবাসা পেলে হাজার অপরাধ এক নিমিষে ভুলে যায়।"
{কথাটা বাস্তব,,, সত্য}
আমারও এখন একই অবস্থা। মন বলছে রবিনকে মাফ করে কাছে টেনে নিতে। কিন্তু মস্তিষ্ক বলছে ও কী এতো সহজে মাফ পাওয়ার যোগ্য?? মস্তিষ্ক যেন হঠাৎ করে মনকেও শক্ত করে তুললো) ভালোবাসি না আমি তোমাকে,,,, শুনতে পেয়েছো তুমি?? একটুও ভালোবাসি না,,,(ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে এলাম)
রবিনঃ (চোখ টলমল করছে পানিতে। নিজের দোষে তোমার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। যে হাসিখুশী রুপকে ভালোবেসেছিলাম তাকে নিজের হাতে গলা টিপে খুন করেছি একটু একটু করে। তৈরি করেছি এই কঠিন রুপকে। অভিমানের নিচে চাপা পড়ে গেছে তোমার ভালেবাসা। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত চেষ্টা করবো সেই রুপকে বাঁচিয়ে তোলার যাকে নিজেই খুন করেছিলাম। চেষ্টা করবো সেই ভালোবাসা ফিরে পাবার যা নিজের দোষে হারিয়েছি।)
একটু মন দিয়ে পড়ুন--
পরবর্তী অংশ অর্থাৎ সবগুলো পর্ব এই I'd তে দেয়া হবে, পুরো গল্পটি পড়তে রিকুয়েস্ট দিয়ে সাথেই থাকুন। ভালো ভালো গল্প পেতে এই আইডির সাথেই থাকুন!অনেক সময় গ্রুপে গল্প পোস্ট হয় না। তাই গ্রুপে গল্প পেতে সমস্যা হলে ফলো অথবা রিকুয়েস্ট দিয়ে রাখতে পারেন ধন্যবাদ।
রুপঃ(আমি সব জেনে গেছি রবিন। ইরার সাথে তোমার কোন রিলেশন ছিলো না। শুধু আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য এতবড় একটা নাটক করেছো। আমার অপরাধ কী ছিলো?? আকাশকে ভালোবেসেছিলাম ??? কাউকে ভালোবাসা অন্যায়?? আমি যদি আকাশের সাথে সম্পর্কের কথা তোমার থেকে লুকাতাম,,,, তোমায় মিথ্যে বলতাম,,, তাহলে তোমার সব অত্যাচার মেনে নিতাম। আকাশ আমার প্রথম ভালোবাসা মনের কোণে তার জায়গা হয়তো থেকে যাবে। কিন্তু তোমাকে তো নিজের সবটা দিয়ে ভালোবেসেছিলাম,,, সারা জীবন সাথে চলার জন্য হাত ধরেছিলাম। বিনিময়ে কী পেলাম??)
রবিনঃ( ফ্রেস হয়ে রুম থেকে বাইরে এসে দেখি রুপ অন্যমনস্ক হয়ে সিড়ি দিয়ে নামার সময় পড়ে যাচ্ছিল। তাড়াতাড়ি হাত টেনে ধরলাম)
রুপঃ(কেউ হাত টেনে ধরায় হুশ ফিরলো। রুম থেকে বাইরে এসে কিছুক্ষণ রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে নিচে নামতে নিচ্ছিলাম রবিনের খাবার আনতে। তখনই কেউ পেছন থেকে হাত টেনে ধরলো। খেয়াল করে দেখলাম হাত টেনে না ধরলে সিড়ি দিয়ে গড়িয়ে নিচে চলে যেতাম। ভয়ে কলিজা কেঁপে ওঠলো। হাতটা আপনাআপনি পেটে চলে গেলো। পড়ে গেলে আমার সোনাটার কী হতো?? ভাবতেই ভয়ে শরীর কাঁপছে।)
রবিনঃ(খেয়াল করলাম ও ভয়ে কাঁপছে। বুকে জড়িয়ে নিলাম) কিছু হয়নি ভয় পেও না,,,,, দেখো কিছু হয়নি,,,
রুপঃ পড়ে গেলে আমার বাবুর কী হতো?? ওর কিছু হলে আমি মরে যাবো,,,,(ভয়ে রবিনকে জড়িয়ে ধরলাম)
রবিনঃ হুসসস বাজে কথা বলবে না। আমি থাকতে তোমাদের কিছু হতে দিবো না প্রমিস।(কোলে করে রুমে নিয়ে এলাম। অনেক বেশি ভয় পেয়েছে। এখনো জড়িয়ে ধরে আছে) বললাম তো ভয় পাওয়ার কিছু হয়নি আমি আছি তো।
রুপঃ(হুশ ফিরতেই রবিনকে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিলাম। কিন্তু ভয়ে এখনো আমার সারা শরীর কাঁপছে।)
রবিনঃ আর কখনো একা একা নিচে যাবে না। আমি থাকলে আমি নিয়ে যাবো আর না থাকলে মেঘলাকে বলবে। মনে থাকবে??
রুপঃ হুম,,,,,,,,,,
রবিনঃ ক্ষুধা পেয়েছে,,, কিছু খাবে???
রুপঃ না ক্ষিদে পায়নি,,, খাবো না,,,,,
রবিনঃ কখন খেয়েছো,,,??
রুপঃ লিজাদের বাসায় ডিনার করে এসেছি।
রবিনঃ সেই রাত ৯ টায় খেয়েছো আবার রাস্তায় বমি করেছো আর এখন বাজে রাত ১১ টা। তুমি বলছো ক্ষিদে পায়নি। ফাজলামি করো আমার সাথে,,,,
রুপঃ(ক্ষিদে তো পেয়েছে কিন্তু খাবার দেখলেই বমি পায়,, কী করবো??)
রবিনঃ বমি পেলেও কিছু করার নেই খেতে হবে।
রুপঃ(এ বুঝলো কী করে আমি কী ভাবছি??)
রবিনঃ এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?? তোমার মুখের এক্সপ্রেশন দেখে যে কেউ বুঝবে কী ভাবছো?? বাট এখন কথা হলো এই বাড়িতে আমি খাবার পাবো কোথায়,,,,,?
ঠক ঠক ঠক
এখন আবার দরজা নক করছে কে,, এত রাতে?(দরজা খুলে দেখি সার্ভেন্ট)
আমেনাঃ খালাম্মা আপা মনি আর আপনার খাবার পাঠাইছে। আপা মনি সেই কখন খাইছে তাই,,,,
রবিনঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,, আপনি যান( খাবারটা নিয়ে টেবিলে রেখে দরজা অফ করে দিলাম) আমার শাশুড়ি মায়ের দেখছি সবদিকে খেয়াল আছে,,,,,
রুপঃ যতসব ঢং,,,,, খাবারের গন্ধেই বমি পাচ্ছে।
রবিনঃ(হাত ধুয়ে এক লোকমা তুলে রুপের সামনে ধরলাম)
রুপঃ (অবাক হয়ে তাকালাম রবিনের দিকে। এ কোন রবিন?? চিনতে পারছি না আমি। যে রবিন ৩ বছরে কোনদিন খেয়েছি কিনা জিজ্ঞেস করেনি সে নিজের হাতে খাইয়ে দিতে চাইছে। সন্তানের জন্য এত পরিবর্তন নাকি অন্য কারণ আছে?? মুখ ফিরিয়ে নিলাম খাবারের গন্ধে)
রবিনঃ নিজের জন্য না হলেও আমাদের বেবির কথা ভেবে খেয়ে নাও কষ্ট করে।
রুপঃ (সত্যিতো আমি না খেলে আমার সোনা বাবাটা কষ্ট পাবে। তাই খেয়ে নিলাম। কয়েক লোকমা খেতেই বমি আসতে নিলো।) আর খাবো না,,,,পানি।
রবিনঃ (তাড়াতাড়ি প্লেট রেখে পানি এগিয়ে দিলাম)
রুপঃ(পানি মুখে দেওয়ার আগেই গরগর করে বমি করে দিলাম রবিনের গায়ে। ভয়ে আমার আত্মারাম খাঁচা ছাড়া। এখন কী মারবে আমাকে??? আমার বাবুটা কষ্ট পাবে তো??)
রবিনঃ(কতটা খারাপ আমি। ও আমার গায়ে বমি করেছে বলে ভয়ে গুটিয়ে গেছে। আবার মারবো মনে করে আমি ,,,, এটা জানা সত্ত্বেও যে ও প্রেগনেন্ট। কাউকে কতটা খারাপ ভাবলে এটা কারো মনে আসতে পারে। ওর কাছে আজ আমি মানুষই না। কারণ কোন মানুষ তার প্রেগনেন্ট ওয়াইফের গায়ে হাতে তুলতে পারে না,,,, জানোয়ার ছাড়া,,,,,। নিজেকে আমার জানোয়ারই মনে হচ্ছে। কতটা নেমে গেছি ওর চোখে। ইচ্ছে করছে শেষ করে দি নিজেকে।) ওঠো ফ্রেস হতে হবে,,,
রুপঃ (আজ মনে হচ্ছে আমার অবাক হওয়ার দিন। ও আমাকে কিচ্ছু না বলে আমাকে ওয়াশরুমে নিয়ে পরিষ্কার করিয়ে দিয়ে রুমে নিয়ে এলো)
রবিনঃ তুমি ৫ মিনিট বসো আমি আসছি।(ওয়াশরুমে গিয়ে দ্রুত শাওয়ার নিয়ে শুধু টাওয়েল পড়েই বের হলাম। ওকে বাকিটা খাইয়ে দিতে হবে। শুধু চুলটা একটু মুছে আবার খাইয়ে দিতে নিলাম।)
রুপঃ আর খাবো না,,,,,
রবিনঃ চুপচাপ শেষ করো,,,,(রাগি চোখে তাকিয়ে)
রুপঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,, তাহলে তুমি আগে ড্রেস পরে নাও,,,
রবিনঃ কেন তোমার সমস্যা হচ্ছে?? (চোখ টিপ মেরে)
রুপঃ(কিছু না বলে ভেংচি কেটে চুপচাপ খাবারটা মুখে নিলাম। সত্যি সমস্যা হচ্ছে। ভেজা গায়ে হট লাগছে হিহিহি)
রবিনঃ এবার শুয়ে পড়ো,,,,(ও শুয়ে পড়তে বাকি খাবারটা খেয়ে নিলাম। ঠান্ডা হয়ে গেছে বাট কিছু করার নেই)
রুপঃ(রাত ১ টা বাজলেও আমাকে দিয়ে খাবার গরম করিয়ে খেতো আর এখন ঠান্ডা খাবারই খাচ্ছে। বেশ হয়েছে,,,, আমার বাবুটা না আসতেই তোমার এই অবস্থা করেছে। এলে কী হাল হবে তোমার??? হাহাহা)
রবিনঃ(ওর শয়তানি হাসি দেখে ভালোই লাগছে। আমার এই অবস্থা দেখে খুশী থাকতে তাই থাকো। খাওয়া শেষে একটা টাউজার পরে নিলাম। ড্রাইভার সব দিয়ে গেছে। বেডে শুয়ে রুপকে বুকে টেনে নিলাম।)
রুপঃ( তোমার এত পরিবর্তন সহজভাবে নিতে পারছি না। তোমার প্রয়োজন মিটে গেলে বেডেও আমার জায়গা হতো না আর আজ সোজা বুকে,,,?? সরে আসতে নিলাম)
রবিনঃ(আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। আর যেতে দেবো না এই বুক থেকে)
রুপঃ(এতো সুখ সইবে তো?? নিজের অজান্তে চোখের পানিতে রবিনের বুক ভিজে যাচ্ছে)
রবিনঃ(কিছু বললাম না শুধু মাথায় একটা কিস করলাম। এভাবেই হয়তো একদিন অভিমানের বরফ গলে আমার সেই হাসিখুশি রুপ বেড়িয়ে আসবে।)
,,,,,,
মেঘলাঃ গতরাতে কল দিতে দিতে কখন ঘুমিয়ে গেছি জানি না। ঘুম ভাঙার পর থেকে কল দিয়ে যাচ্ছি কিন্তু কোন খবর নেই উনার। কাঁদতে কাঁদতে চোখ লাল হয়ে ফোলে গেছে। দেখতে পেত্নীর মতো লাগছে। তাও কল দিয়েই যাচ্ছি সাথে চোখের পানি পড়ছে। এখন আবার অফ বলছে কান্নার বেগ আরো বেড়ে গেলো। দিনটা এভাবেই গেলো। বিকেলের দিকে আমরা সবাই ঐ বাড়িতে যাওয়ার জন্য বেড়িয়ে পড়লাম। সবাই শুধু জিজ্ঞেস করছে আমার মুখের এই দশা কেন?? এলার্জি বলে কাটিয়ে দিয়েছি। তাও হয়তো তাদের সন্দেহ দূর হয়নি। যা ইচ্ছে ভাবতে থাকুক আমি এখন আছি নিজের জ্বালায়। ভাইয়ের মুখটাও দেখার মতো হয়েছে। ও এখনো জানে না আমরা তানহাকে না চাঁদকে দেখতে যাচ্ছি। ঐ বাড়িতে আমার জন্য কী অপেক্ষা করছে আল্লাহ জানে। কীভাবে ওনার রাগ ভাঙাবো??
মাহিনঃ(গাড়ি যত এগোচ্ছে আমার তত মনে হচ্ছে চাঁদ আমার থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছে। মেয়েটার সাথে আর একবার কথাও বলতে পারিনি। সে আমার ফোনই রিসিভ করছে না। আচ্ছা পালিয়ে যাবো কোথাও???)
মাহিনঃ এটাতো মেঘলার শশুর বাড়ি আমরা এখানে কেন এসেছি??
মেঘলাঃ চাঁদ আমাদের সাথে যাবে তাই,,,,,,
মাহিনঃ কীহ্ ,,,,,,,,,
মেঘলাঃ জী ,,,,,,,,,
মাহিনঃ (এই বাড়ির ড্রয়িংরুমে বসে আছি। কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। যে যার মতো গল্প করছে। কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করার সুযোগ ও পাচ্ছি না। মেঘটা এসেই কোথায় ওধাও হয়ে গেছে। আর আমি বসে বসে হাতের আঙ্গুল মুচড়িয়ে যাচ্ছি।)
,,,,,,,,,
মেঘলাঃ চাঁদ এমন কেউ করে??? যদি কিছু হয়ে যেতো তোমার ভাইয়া আর মায়ের কী হতো??
চাঁদঃ জানি না,,,,,
মেঘলাঃ আর কখনো এমন পাগলামি করো না।
চাঁদঃ হুম,,,,,
মেঘলাঃ তোমার ভাইয়া কোথায়??
চাঁদঃ গতরাতে কখন এসেছে তাও জানি না আর আজ সকালে কখন বেড়িয়েছে তাও বলতে পারবো না। তোমার সাথে কিছু কী হয়েছে??
মেঘলাঃ ন,,,,না আমার সাথে কী হবে??
চাঁদঃ তোমার মুখের এই দশা কেন??
মেঘলাঃ এ,,এলার্জি,,,,, এলার্জির প্রবলেম হয়েছে।
চাঁদঃ(এদের কোন ঝামেলা হয়েছে নিশ্চিত)
মেঘলাঃ তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও,,,,, আমার ভাইয়ের মনে হয় গলায় দম আটকে আছে,,, হিহিহি
চাঁদঃ থাকতে দাও,,,,
মেঘলাঃ (চাঁদকে রেডি করিয়ে নিয়ে নিচে গেলাম। )
মাহিনঃ (চাঁদকে দেখে আমার মুখ হা হয়ে গেছে। এ কোন চাঁদ?? চকলেট কালার একটা শাড়ী পড়েছে,, মাথায় ঘোমটা দেওয়া। একদম বউ বউ লাগছে। এখন একদম পিচ্চি পিচ্চি লাগছে না। কিন্তু চাঁদকে এই সাজে আনার মানে কী??)
আবিদাঃ মা এসো আমার পাশে বসো,,,,,
মেঘলাঃ (মায়ের পাশে বসিয়ে দিলাম)
আবিদাঃ বাহ্ খুব মিষ্টি লাগছে। একদম সত্যিকার চাঁদ। এই চাঁদ আমার ভাঙা ঘরে কীভাবে রাখবো??
মাহিনঃ(সব মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে,, মা এসব কী বলছে???)
আবিদঃ বেয়াইন(আকাশের মা) চাঁদের বয়স তো এখনো ১৮ হয়নি। এখন নাহয় এনগেজমেন্ট করে রাখি ১৮ হলে বিয়ের কথা ভাবা যাবে।
আকাশের মাঃ আমিও তাই বলতে চাইছিলাম,,, কিন্তু আপনারা কী মনে করেন,,, সেটা ভেবে বলার সাহস পাচ্ছিলাম না।
আবিদঃ কী যে বলেন? মনে করার কী আছে?? তাহলে রিয়াদ আর মাহিনের এনগেজমেন্ট একসাথেই হোক। মাহিন আর চাঁদের বিয়ে নাহয় পরে হবে।
আকাশকে মাঃ ঠিক আছে,,,,,
মাহিনঃ (মনে হলো ১২০০ ভোল্টের ঝটকা খেলাম। আমার আর চাঁদের বিয়ে হচ্ছে???)
মেঘলাঃ ঝটকা কেমন লাগলো??(মাহিনের পাশে বসে ফিসফিস করে)
মাহিনঃ এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। কী করে এসব হলো রে মেঘ??
মেঘলাঃ (ভাইকে সব খোলে বললাম।)
মাহিনঃ ধন্যবাদ রে বোন।
মেঘলাঃ আমার জন্য সব হয়েছিলো তাই আমি-ই ঠিক করে দিলাম।
মাহিনঃ (মেঘের দিকে তাকিয়ে শুধু মুচকি হাসলাম। চাঁদের দিকে তাকালাম। নিচের দিকে তাকিয়ে আছে অন্য কোনদিকে তাকাচ্ছে না। কী হলো ব্যাপারটা আজকে একবারও আমার দিকে তাকালোই না। মনে হচ্ছে কপালে দুঃখ আছে আমার। এতদিন ওকে রিজেক্ট করার ফল ভুগতে হবে)
চাঁদঃ(এবার বুঝাবো মিস্টার মাহিন কত গমে কত আটা)
মেঘলাঃ(এই মহারাজ গেছে কোথায়?? একমাত্র বোনের বিয়ের কথা হচ্ছে সে ওধাও। যে বিয়ের জন্য এতো কষ্ট করলো এখন তারই দেখা নেই। সারাদিন না খাওয়ার জন্য মাথাও ঘুরছে। নাস্তা করে সবাই চলে গেছে। আমি আজ এখানে থাকবো বলে রয়ে গেছি। ভাই চাঁদের সাথে কথা বলতে চেয়েছিলো চাঁদ পাত্তা দেয়নি। ভাইয়ের মুখটা দেখে আমার কষ্টের মধ্যেও সেই হাসি পেয়েছিলো। ওরা চলে যেতেই রুমে গিয়ে শুয়ে পরলাম।)
আকাশঃ (সকালে ওঠে অফিস চলে গিয়েছিলাম। গতরাতে ফোনটা গাড়িতেই রয়ে গিয়েছিলো। সকালে ফোন খোঁজে পায়নি পরে গাড়িতে গিয়ে দেখি চার্জ শেষ অফ হয়ে পরে আছে। অফিসে গিয়ে চার্জ দিয়ে খোলে দেখি মেঘলার অনেক কল আর ম্যাসেজ। তাও ব্যাক করতে ইচ্ছে করেনি। অফিস শেষে সোজা বাসায় চলে এলাম। রুমে এসে চোখ চড়কগাছ। এ এখানে কী করছে?? যা ইচ্ছে করুক আমার কী?? ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে ডিনার করতে গেলাম)
মাঃ বৌমা কোথায়??
আকাশঃ ঘুমিয়ে আছে??
মাঃ এসেছে পর থেকে এখনো কিছু খায়নি,, তুই ডাকলি না,,,??
আকাশঃ ক্ষিদে পেলে একাই আসতো।
মাঃ আকাশ এটা কেমন কথা??
চাঁদঃ(ডালমে কোছ কালা হে)
আকাশঃ খাবার দেবে??
মাঃ দিচ্ছি তো,,, খেয়ে বৌমার খাবার নিয়ে যা।
আকাশঃ পারবো না,,,,
মাঃ কী বললি??
আকাশঃ ওকে,,,,,নিয়ে যাবো,,(খেয়ে মেঘলার খাবার নিয়ে রুমে এলাম। কাহিনিটা কী হলো?? ওর ঘুমতো এতো গাড় না। রুমে এলেই ওর ঘুম ভেঙে যাওয়ার কথা। কিছু গড়বড় আছে) মেঘলা,,,,,, এই মেঘলা,,,,
(ও মাই গড এতো সেন্সলেস হয়ে গেছে। কখন থেকে সেন্সলেস হয়ে আছে আল্লাহ জানে। পানির ছিটা দিলাম তাও জ্ঞান ফিরছে না। তাড়াতাড়ি ডক্টরকে কল দিলাম। কল দিয়ে নিজেই জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছি। একটু পরই ডক্টর চলে এলো। মা আর চাঁদও চলে এসেছে।)
ডক্টরঃ কখন হয়েছে??
আকাশঃ জানি না আমি অফিস থেকে এসে মনে করেছি ঘুমিয়ে আছে। এখন খাবার জন্য ডাকতে গিয়ে দেখি সেন্সলেস হয়ে আছে।
ডক্টরঃ বিপি একদম লো,,,, মনে হয়না সারাদিনে কিছু খেয়েছে।
আকাশঃ কীহ্ ,,,,,
ডক্টরঃ হুম,,,,,,,শরীর একদম দূর্বল তার ওপর না খেয়ে থাকায় বিপি লো হয়ে সেন্সলেস হয়ে গেছে। উনার খাওয়া দাওয়ার ওপর খেয়াল রাখবেন। আমি ইনজেকশন দিয়ে দিয়েছি কিছুক্ষণের মধ্যে জ্ঞান ফিরবে। জ্ঞান ফিরলে কিছু খাইয়ে এই ঔষধ খাইয়ে দিবেন।
আকাশঃ ওকে ডক্টর,,, (ডক্টর চলে গেলো)
মাঃ তুই কী কিছু বলেছিস???
আকাশঃ নাহ্
মাঃ তাহলে এমন কেন করবে ও?? আর তুইও কেমন তেরা তেরা কথা বলছিলি তখন।
চাঁদঃ মা চলোতো ওদের ঝামেলা ওদের বুঝতে দাও।(মাকে জোর করে নিয়ে এলাম। এরা নিশ্চিত ঝগড়া করেছে। ভাবির চোখ মুখ এলার্জির জন্য এমন হয়নি বরং কান্নার জন্য হয়েছে)
আকাশঃ আমারই ভুল হয়েছে। ফোনটা ধরা উচিত ছিলো। আমারতো মনেই ছিলো না এটা একটু বেশি ইমোশনাল।
মেঘলাঃ(চোখ খোলতে ইচ্ছে করছে না। এত দূর্বল লাগছে কেন?)
আকাশঃ (হয়তো জ্ঞান ফিরছে,, নড়াচড়া করছে) মেঘলা শুনতে পাচ্ছো??
মেঘলাঃ কে,,,??
আকাশঃ আমি,,,
মেঘলাঃ( চোখ খোলে আকাশকে দেখে তাড়াতাড়ি ওঠে বসতেই মাথা ঘুরে ওঠলো পড়ে যাওয়ার আগেই আকাশ ধরে ফেললো। আকাশের বুকে গিয়ে পড়লাম। জড়িয়ে ধরলাম আকাশকে)
আকাশঃ এখনই আবার পরে যাচ্ছিলে। সেন্সলেস হও কিভাবে??
মেঘলাঃ আমিতো ঘুমিয়েছিলাম।
আকাশঃ ঘুমিয়ে ছিলো,,, সারাদিনে কিছু খাওনি কেন??
মেঘলাঃ আপনি আমার ফোন রিসিভ করেননি কেন??
আকাশঃ চলো ফ্রেস হয়ে খেয়ে নিবে(কোন কথা বলতে না দিয়ে কোলে তোলে ওয়াশরুম নিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আনলাম। খাবার খাইয়ে দিতে নিলাম) হা করো,,,
মেঘলাঃ আপনি আমার দিকে তাকিয়ে কথা বলছেন না কেন??
আকাশঃ ওর দিকে তাকালাম (কী হাল হয়েছে একদিনে?? এখনো চোখমুখ ফুলে আছে। মনে হচ্ছে জামাই মরছে আর মরা কান্না কাঁদছে) তাকিয়ে বলছি হয়েছে এখন হা করো।
,, গল্পটি ভালো হয়নি এজন্য কেউ একটু বিরিয়ানি খাওয়ার দাওয়াত দিল নারে কিপটার মা 

মেঘলাঃ (খাবার মুখে নিলাম) আসলে আমি,,,
আকাশঃ আগে খাওয়া শেষ করো পরে কথা বলো,,
মেঘলাঃ(চুপচাপ খেতে লাগলাম। খাওয়া শেষে মেডিসিন খাইয়ে উনি চলে যেতে নিলে হাত টেনে ধরলাম) কোথায় যাচ্ছেন??
আকাশঃ তুমি শুয়ে পরো আমি প্লেট নিচে রেখে আসছি।(আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিচে চলে এলাম। ফিরে এসে দেখি সেভাবেই বসে আছে) কী হলো শুয়ে পড়ো??
মেঘলাঃ আসলে গতকাল আমি ইচ্ছা করে এমন করিনি তখন আমার কী,,,,,,,
আকাশঃ সরি,,,,, ভুলটা আমার ছিলো তোমার অনুমতি ছাড়া এত কাছে যাওয়া ঠিক হয়নি। সরি,,,, আর কখনো এমন ভুল হবে না।
মেঘলাঃ(উনার হাত টান দিলাম। উনি আমার ওপর এসে পরলেন আর আমি বেডে।) বললামতো আমি ইচ্ছে করে এমন করিনি। কী হয়েছিলো আমি নিজেই জানি না। আমিওতো,,,,,,,
আকাশঃ তুমিওতো কী??
মেঘলাঃ(আমিও তো ভালোবাসি আপনাকে,,, নিজের করে পেতে চাই। সেটা কিভাবে বলবো??)
আকাশঃ কী হলো বলো??
মেঘলাঃ কিছু না,,,,,,
আকাশঃ ঠিক আছে ঘুমিয়ে পড়ো।
মেঘলাঃ(উনি ওঠে চলে যেতে নিলে উনার শার্টের কলার ধরে উনার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম)
আকাশঃ(আমার চোখ একেকটা রসগোল্লার মতো হয়ে গেছে। এটা কী মেঘলা নাকি অন্যকেউ?? কেমন পাগলের মতো কিস করছে। আমি আর কতক্ষণ নিজেকে সামলে রাখতে পারবো। আমিও কিস করতে লাগলাম।)
আচ্ছা আমি কি এই গল্পটা দিয়ে কি ভুল করে ফেলেছি নাকি প্রতিদিন আমার কয়েকটি করে রিকোয়েস্ট এসএমএস এর রিপ্লাই কিংবা ডিলিট করতে হয়



অনেকেই আছে রিকোয়েস্ট এসএমএস দেই যে গল্প আগে আগে দেওয়ার জন্য আচ্ছা যাই হোক এটা কোন সমস্যা নাই তারা পড়ার জন্য আগ্রহী তার জন্য এটা করে এটা কোন সমস্যা মনে করিনা 







আরো অনেক মহব্বতের মানুষ আছে তারা রিকোয়েস্ট এসএমএস দিয়ে কোনো কথা বার্তা না বলেই সরাসরি জিজ্ঞেস করে যে ভাই আপনি এই গল্প আপলোড দিয়ে কয়টা রিলেশন করছেন কয়টা মেয়েকে পটাইছে ন







আর বর্তমানে কয়টি মেয়ের সাথে রিলেশন করতেছেন আরো কত কিছু এজন্য যারা রিকোয়েস্ট এসএমএস দ দিয়ে বেহুদা প্রশ্ন করেন তারা দয়া করে এমন কাজ থেকে বিরত থাকুন
মেঘলাঃ( অনেক সময় পর ছেড়ে দিলাম আর উনি ওঠে চলে যাচ্ছিলেন আবার হাত টেনে ধরলাম) এখনো রেগে আছেন??(অসহায়ভাবে তাকিয়ে)
আকাশঃ নাহ্ (আবার ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম।)
মেঘলাঃ(অনেকসময় পর ছাড়িয়ে নিতে চাইলাম কিন্তু উনি ছাড়ছে না। কিছুক্ষণ পর নিজেই ছেড়ে দিলেন)
আকাশঃ এমন মিষ্টি পেলে কেউ রাগ করে থাকতে পারে??(দুষ্ট হাসি দিয়ে)
মেঘলাঃ(উনার কথা শুনে মাথা নিচু করে ফেললাম লজ্জায়। এটা আমি করেছি বিশ্বাসই হচ্ছে না)
আকাশঃ(ওর কপালে একটা কিস করে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়লাম) এখন ঘুমিয়ে পড়ো তোমার শরীর অনেক দূর্বল।
মেঘলাঃ ঘুমাবো না,,,,,,।
আকাশঃ কীহ্ ,,, (মাথা উচু করে ওর দিকে তাকালাম) তাহলে কী করবে??
মেঘলাঃ আপনি গল্প বলবেন আমি শুনবো।
আকাশঃ তুমি কী বাচ্চা,,,??
মেঘলাঃ আপনার বয়স কতো???
আকাশঃ ২৮,,,,,, কেন??
মেঘলাঃ আর আমার ২০ বছর। আপনার থেকে ৮ বছরের ছোট,,,,, তাহলে আমি আপনার সামনে বাচ্চাই।
আকাশঃ আসছে,,, বাচ্চা,,, ঠিক সময়ে বিয়ে দিলে তোমার ৪-৫ বাচ্চা থাকতো।
মেঘলাঃ কীহ্ ,,,,,,,
আকাশঃ কীহ না জী ,,,,,,,,, এখন ঘুমাবে নাকি বাচ্চা নেওয়ার,,,,,,,,,,,,
মেঘলাঃ আপনি খুব পঁচা,,,,,
আকাশঃ আমি জানি এখন ঘুমাও,,,,,,,
,,,,,,,,,,,,,,
(দেখতে দেখতে রিয়াদ-লিজা আর মাহিন -চাঁদের এনগেজমেন্ট হয়ে গেলো। মাহিন আর রবিন নিজেদের হাফ-বউ(মাহিনের) আর বউকে (রবিনের) প্রতিনিয়ত মানানোর চেষ্টা করছে। আর রিয়াদ আর আকাশ চুটিয়ে প্রেম করছে। চাঁদ মাহিনের সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না। আর রুপ রবিনের সাথে স্বাভাবিক থাকলেও শুধু নিজেই দ্বায়িত্ব পালন করছে এর বাইরে কিছু না। রবিন প্রতিটা মুহূর্তে রুপের খেয়াল রাখছে। আজ রিয়াদ আর লিজার বউভাত ছিলো। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো রিয়াদ আর লিজাকে,,, লিজাদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তুলে দিয়েই আকাশ-মেঘলা, মাহিন-চাঁদ সবগুলো ওধাও। আকাশের সাথে রবিনের সম্পর্ক অনেকটা আগের মতো হয়ে গেছে।)
চাঁদঃ কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন বলুনতো?? ওদের যেতেও দিলেন না আগে,,,,,
মাহিনঃ,,,,,,,,,,,,।
চাঁদঃ যতসব ঢং,,,,
মাহিনঃ(ওর চোখ বেধে দিলাম।)
চাঁদঃ আরে চোখ কেন বাঁধছেন??
মাহিনঃ একটু পরই বুঝতে পারবে।
চাঁদঃ (চোখ খোলে দিতেই আস্তে আস্তে সামনে তাকালাম। একটা খোলা মাঠের মাঝখানে ফুল আর বেলুন দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজানো ছোট একটা ঘরের মতো,,,,,, ঘরের চারপাশ খোলা,,,, শুধু ওপরে টিনের চালা। সারা মাঠে জোনাকি পোকা উড়ছে। এত সুন্দর জায়গা কখনো দেখিনি আমি। দৌড়ে ঐ ঘরের কাছে গেলাম। ঘরের ভেতরে পা রাখতেই ওপর থেকে ফুল ঝরে পড়লো মাথায়। ঘরের মাঝে টেবিলে একটা কেক রাখা। সারাটা ঘর অসংখ্য মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখা,,,, কোন বৈদ্যুতিক লাইট নেই তাই আরো সুন্দর লাগছে। এত সৌন্দর্য দেখে মাহিনের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। ওকে খোঁজতে পিছনে ফিরতেই মাহিন আমার সামনে একগুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে হাটু গেঁড়ে বসে পড়লো।)
মাহিনঃ তোমাকে প্রথম যেদিন আমাদের বাড়িতে দেখেছিলাম মনে হয়েছিলো আকাশের চাঁদ আমাদের ভাঙা ঘরে নেমে এসেছে। ভালো লেগেছিলো। কিন্তু যত তোমাকে কাছ দেখতে লাগলাম,,, তোমার বাচ্চামিগুলো দেখতে লাগলাম ,,,, কখন ভালোবেসে ফেলেছি বুঝতেই পারিনি। কিন্তু আমি যে তোমার যোগ্য নই তাই নিজের মনেই সব কবর দিয়ে দিয়েছিলাম। যখন জানলাম তুমিও আমাকে ভালোবাসো কষ্টটা বেড়ে গেলো হাজার গুনে কিন্তু আমার করার কিছুই ছিলো না। তাই কষ্ট দিয়েছি তোমাকে দূরে চলে যেতে চেয়েছি। এই ভুলটা কী মাফ করা যায়না চাঁদ। ভালোবাসি তোমাকে কতটা বলে বুঝাতে পারবো না।
চাঁদঃ (আমি মনে করেছিলাম উনি আমাকে ভালোবাসে না। কিন্তু উনিতো আমার আগে থেকেই,,,,,,,,। ফুলগুলো নিয়ে জড়িয়ে ধরলাম উনাকে) ভালোবাসি,,,,
মাহিনঃ(অনেকটা সময় এভাবেই কাটলো।) চলো তোমার ফেবারিট চকলেট কেক কাটি।
চাঁদঃ হুম,,,,,
মাহিনঃ(কেক কেটে আমি ওকে খাইয়ে দিলাম আর ও আমাকে। ওর ঠোঁটের কোণে লেগে থাকা চকলেট আঙ্গুল দিয়ে নিয়ে খেয়ে নিলাম। লজ্জা পেয়ে জড়িয়ে ধরলো আমাকে) তোমাকে বুকে নিয়ে বাকি জীবন কাটাতে চাই,,,,
চাঁদঃ আমিও এই বুক মাথা রেখেই বাকি জীবন কাটাতে চাই।
,,,,,,,,
মেঘলাঃ এখনই বাসায় চলে আসলেন কেন?? একটুপর সবার সাথেই আসতে পারতাম।
আকাশঃ (ওর কথার কোন উত্তর না দিয়ে বাসার ভিতরে আসলাম)
মেঘলাঃ বাসা অন্ধকার কেন?? শুনছেন,,, (লাইট জ্বলে ওঠতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম সামনে তাকিয়ে। পাশে তাকিয়ে দেখি আকাশ নেই)
চলবে,,,,,,,,
Super,